X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

তিন সিটির নির্বাচন: আইনি বিষয় খতিয়ে দেখছে ইসি

এমরান হোসাইন শেখ
২৭ মে ২০১৮, ২৩:০৩আপডেট : ২৮ মে ২০১৮, ১৬:৫৯

 জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশনে ভোট করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মঙ্গলবার (২৭ মে) অনুষ্ঠেয় কমিশন সভায় এই তিন সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে। তবে, তফসিলের আগে সিটিগুলোয় আইনি কোনও জটিলতা রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছে কমিশন। এই তিন সিটির নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে অনাপত্তিপত্র পেলেও আইনের বিষয়ে আরও তথ্য নেবে এই সাংবিধানিক সংস্থাটি। ঢাকা উত্তর ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের আইনি বিড়ম্বনা মোকাবিলার বিব্রতর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবার বিষয়টি আরও সতর্কতার সঙ্গে দেখছে ইসি। নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, তিনি সিটি নির্বাচনের লক্ষ্যে কমিশন ইতোমধ্যে আনুষ্ঠানিক উদ্যোগ নিয়েছে। তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন পরিচালনার জন্য এলাকাগুলোর ভোটার তালিকার সিডি তৈরি প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। ভোটকেন্দ্র প্রস্তুত করতে ইতোমধ্যে আদেশ জারি করা হয়েছে। নির্বাচনের তফসিল চূড়ান্ত করতে কমিশন মঙ্গলবার বৈঠকে বসছে। পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা করে ওইদিন ভোটগ্রহণের দিনক্ষণসহ তফসিলের সিদ্ধান্ত আসতে পারে। কমিশনারের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জুলাই মাসের শেষ দিকে ভোটগ্রহণের পরিকল্পনা নিয়ে কমিশন এগুচ্ছে। এক্ষেত্রে ঈদের আগেই এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে। এদিকে, এই তিন সিটি নির্বাচনে সংসদ সদস্যরা দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে আচরণ বিধির প্রয়োজনীয় সংশোধনী অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। শিগগিরই ভেটিংয়ের জন্য এটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। আগামী ২৬ জুন অনুষ্ঠেয় গাজীপুরের ভোটের পরপরই এটি প্রজ্ঞাপন আকারে জারি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ মঙ্গলবারের বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘ওই বৈঠকে সিটি করপোরেশনগুলোর মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ, ঈদের সরকারি ছুটি ও পরীক্ষার বিষয়গুলো বিবেচনা রেখে ভোটের দিন নির্ধারণ করা হবে।’

এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা এই বছর জুলাইয়ের মধ্যে সব সিটি করপোরেশন অনুষ্ঠানের কথা জানিয়েছেন।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, তিন সিটির তফসিল ঘোষণার আগে সিটি এলাকার সীমানা বা অন্য কোন আইনি জটিলতা রয়েছে কিনা, তা পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা করছে তারা। ‘আইনি জটিলতা নেই’ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এমন অনাপত্তিপত্রের পরেও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আদালতের মুখোমুখি হওয়ার কারণে কমিশন এবার বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করছে। কোনও আইনি জটিলতা রয়েছে কিনা, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে তা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে  মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে দুই দফায় তথ্য নিয়ে ‘কোনও  জটিলতা নেই’ বলে জেনে নিয়েছে কমিশন। এরপরও বিষয়টির জন্য বাড়তি সতর্কতার অংশ হিসেবে তফসিল ঘোষণার আগে আরেক দফা নিশ্চিত হবে তারা। এক্ষেত্রে মঙ্গলবারের বৈঠকে সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘স্থানীয় সরকার পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠান নির্বাচন কমিশনের বিষয় নয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে আমরা নির্বাচনটি করে দেই। তবে, যেহেতু আমরা নির্বাচন অনুষ্ঠানটা করে দেই, এ জন্য আমরা উদ্যোগী হয়ে মন্ত্রণালয় থেকে জেনে নেই, সেখানে সীমানা সংক্রান্ত বা অন্য কোনও জটিলতা আছে কিনা। মন্ত্রণালয় এটা নিশ্চিত করলেই আমরা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করি।’ তিনি বলেন, ‘রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি নির্বাচনের বিষয়ে ইতোমধ্যে আমরা মন্ত্রণালয় থেকে তথ্য নিয়েছি। মন্ত্রণালয় তাদের লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে তথ্য নিয়ে আমাদের জানিয়েছে, সেখানে কোনও সমস্যা নেই। তারপরও তফসিল ঘোষণার আগে আমরা আরও একবার এ বিষয়ে তথ্য নিয়ে নিশ্চিত হবো।’

ঢাকা উত্তর সিটি ও গাজীপুর সিটির মামলার ব্যাখ্যা দিয়ে সচিব বলেন, ‘এই দু’টি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিষয়েও আমরা মন্ত্রণালয় থেকে এনওসি পেয়েছিলাম। দু’টির সীমানার গেজেটও প্রকাশ করা হয়েছিল। তারপরও মামলা হলো। কাজেই আদালতের বিষয়ে তো আমাদের কোনও হাত থাকে না।’ 
উল্লেখ্য, তিন সিটি করপোরেশনের মধ্যে রাজশাহী সিটিতে ভোট হয়েছে ২০১৩ সালের ১৫ জুন। প্রথম সভা হয় ২০১৩ সালের ৬ অক্টোবর। আইন অনুযায়ী এ সিটির মেয়াদ পূর্ণ হবে আগামী ৫ অক্টোবর। ৯ এপ্রিল নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হয়েছে। আর ৫ অক্টোবরের মধ্যে ভোট হতে হবে। সিলেট সিটিতে ভোট হয়েছে ২০১৩ সালের ১৫ জুন। প্রথম সভা হয় ২০১৩ সালের ৯ অক্টোবর। এ সিটির মেয়াদ পূর্ণ হবে ৮ অক্টোবর। গেল ১১ এপ্রিল এ  সিটির নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হয়েছে। বরিশাল সিটিতে ভোট হয়েছে ২০১৩ সালের ১৫ জুন। প্রথম সভা হয় ২০১৩ সালের ২৪ অক্টোবর। আইন অনুযায়ী এ সিটির মেয়াদ পূর্ণ হবে ২৩ অক্টোবর। ২৭ এপ্রিল নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হয়েছে। আর ২৩ অক্টোবরের মধ্যে করতে হবে নির্বাচন।

তিন সিটির সঙ্গে একই দিন কুড়িগ্রাম-৩ সংসদীয় আসনে উপনির্বাচন এবং কয়েকটি পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা রয়েছে বলে ইসি সূত্রে জানা গেছে।

/এমএনএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মার্কিন কংগ্রেসে ইউক্রেনের বহুল প্রতীক্ষিত সহায়তা প্যাকেজ পাস
মার্কিন কংগ্রেসে ইউক্রেনের বহুল প্রতীক্ষিত সহায়তা প্যাকেজ পাস
এক্সপ্রেসওয়েতে বাস উল্টে প্রাণ গেলো একজনের, আহত ১০
এক্সপ্রেসওয়েতে বাস উল্টে প্রাণ গেলো একজনের, আহত ১০
বেসিস নির্বাচনের ৩৩ প্রার্থী
বেসিস নির্বাচনের ৩৩ প্রার্থী
সিঙ্গাপুরে রডচাপায় বাংলাদেশি তরুণের মৃত্যু
সিঙ্গাপুরে রডচাপায় বাংলাদেশি তরুণের মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
মিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিমিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের জানাতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের জানাতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক