রবিবার দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে রেকর্ড

বিদ্যুৎ উৎপাদনে শনিবারের রেকর্ড ভেঙেছে রবিবারই (২৭ মে)। রবিবার রাত ৯টায় দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ৮২৫ মেগাওয়াট। যা এখনকার মধ্যে সব থেকে বেশি বিদ্যুত উৎপাদন। আর শনিবার (২৬ মে) দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ১০ হাজার ৬৯৯ মেগাওয়াট। রবিবার বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড পিডিবি দুপুরে এবং রাতে পৃথক দুই ক্ষুদে বার্তায় বিদ্যুৎ উৎপানের এই তথ্য জানায়।



গত মার্চে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। ২০ মার্চ দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রথমবার ১০ হাজার মেগাওয়াট অতিক্রম করে। ওই দিন ১০ হাজার ৮৪ মেগাওয়াট উৎপাদন হয়। এরপর আরও এক দফায় সেই রেকর্ড ভেঙে ১০ হাজার ১৪৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছিল। তবে এবারের রেকর্ডে উৎপাদনের পরিমাণ বেড়েছে এক ধাপে ৬৭৮ মেগাওয়াট। এরমধ্যে ভারতে থেকে অবশ্য ৬০৬ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি করা হয়েছে। ভারত থেকে আমদানি করা বিদ্যুতের মধ্যে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা দিয়ে ৪৮২ মেগাওয়াট আর কুমিল্লা দিয়ে ১২৪ মেগাওয়াট বাংলাদেশে এসেছে।
এদিকে মিরপুর, লালমাটিয়া, মালিবাগ, রামপুরা থেকে সন্ধ্যায় লোডশেডিংয়ের খবর পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে দেশের বিতরণ কোম্পানির কাছে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তারা চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পেয়েছেন। রাজধানীর বিদ্যুত বিতরণকারী ডেসকো এবং ডিপিডিসি উভয় কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ কক্ষ বলছে তারা যা চাহিদা তাই বিদ্যুৎ পাচ্ছে। তবে কোনও কোনও ক্ষেত্রে বিতরণ ত্রুটির কারণে সমস্যা হচ্ছে। এ কারণে কোথাও কোথাও বিদুত বিভ্রাট হতে পারে।
ডেসকোর একজন কর্মকর্তা জানান, শনিবার সন্ধ্যায় তাদের চাহিদা ছিল ৮৮২ মেগাওয়াট আর পুরোটাই সরবরাহ করেছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি। খুলনা-বরিশালের বিদ্যুৎ বিতরণকারী কোম্পানি ওয়েস্টজোনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্র বলছে, শনিবার সন্ধ্যায় তাদের চাহিদা ছিল ৫৫৬ মেগাওয়াট। যার পুরোটা সরবরাহ করা হয়েছে। একই দিন আরইবিও তাদের চাহিদার পুরোটা সরবরাহ পেয়েছে বলে আরইবি সূত্র জানায়।
উৎপাদন বৃদ্ধির রহস্য হিসেবে পিডিবির একজন কর্মকর্তা জানান, গত এক মাসে অন্তত ৬০০ মেগাওয়াট নতুন তেল চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে এসেছে। এরমধ্যে সামিট পাওয়ারের গাজীপুরের কড্ডায় একটি ৩০০ মেগাওয়াট, বাংলাট্র্যাকের আরও ৩০০ মেগাওয়াট কেন্দ্র উৎপাদনে এসেছে। বাংলাট্র্যাক ২০০ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্র দাউদকান্দি এবং ১০০ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্র যশোরে স্থাপন করেছে। ওই কর্মকর্তা বলছেন, এগ্রিকো পাওয়ারের আরও একটি ১০০ মেগাওয়াটের কেন্দ্র পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন করছে। কেরানীগঞ্জের ব্রাহ্মণগাঁও এ ১০০ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে কেন্দ্রটি উৎপাদনে আসবে বলে জানান তিনি।
পিডিবির ওয়েব পেজে বলা হচ্ছে, গত বছরের ১৮ নভেম্বর দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ওই বছরের সর্বোচ্চ পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ১১ মেগাওয়াট। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০১৬ এর ৩০ জুন ৭ হাজার ৪৮৫ মেগাওয়াট সর্বোচ্চ উৎপাদন হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
পিডিবি বলছে, তেলচালিত নতুন কেন্দ্র উৎপাদনে আসায় গত কয়েকদিন ধরেই একটু একটু করে উৎপাদন বৃদ্ধি করা হয়।