X
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

পরিবেশ রক্ষায় নিজেদেরকেই উদ্যোগী হতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৮ জুলাই ২০১৮, ১১:৫১আপডেট : ১৮ জুলাই ২০১৮, ১৭:০১






প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি-ফোকাস বাংলা) পরিবেশ রক্ষায় নিজেদেরকেই উদ্যোগী হতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘কারও মুখাপেক্ষী না হয়ে জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ রক্ষায় নিজেদেরই উদ্যোগী হতে হবে। সবাই নিজের দেশের কথা চিন্তা করে পরিবেশ রক্ষায় শামিল হবেন। নিজে যার যার জায়গায় গাছ লাগাবেন।’

বুধবার (১৮ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা ২০১৮ এবং জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও মাসব্যাপী বৃক্ষমেলা ২০১৮ উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের স্মরণে সারাদেশে একযোগে ৩০ লাখ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন।

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বুধবার তিনি এসব কর্মসূচি উদ্বোধন করেন। একই সঙ্গে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন পদক ২০১৮, জাতীয় পরিবেশ পদক-২০১৮ এবং বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার ২০১৭ প্রদান করেন। এছাড়া, অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী সামাজিক বন বিভাগের উপকারভোগীদের লভ্যাংশের চেক তুলে দেন।

অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে একটি গাছ লাগান। সম্মেলন কেন্দ্রের বাইরে অনুষ্ঠিত বৃক্ষমেলা ঘুরে দেখেন।

পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়। এতে অন্যদের মধ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী আসিনুল ইসলাম মাহমুদ, প্রতিমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, সংসদীয় কমিটির সভাপতি ড. হাছান মাহমুদ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।

এ বছর পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘আসুন প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ করি, প্লাস্টিকের পুনর্ব্যবহার করি, না পারলে বর্জন করি‘। আর জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযানের প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়েছে ‘সবুজে বাঁচি সবুজ বাঁচাই/নগর প্রাণ প্রকৃতি সাজাই‘।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী দেশের সব মানুষকে এবারের বৃক্ষরোপণ অভিযানে শরিক হয়ে অন্তত তিনটি করে গাছ লাগানোর আহ্বান জানান।

পরিবেশবান্ধব পাটের বহুমুখী ব্যবহারের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্লাস্টিক এখন বিশ্বব্যাপী সমস্যা। প্লাস্টিকের কারণে এখন অনেক জায়গায় জাহাজ চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অন্যদিকে পাট হচ্ছে পরিবেশবান্ধব। আমরা পাটকে তার সোনালি দিনে ফেরত আনতে নানা উদ্যোগ নিয়েছি। পাটের পলিমার থেকে নতুন ধরনের পচনশীল ব্যাগ তৈরি হচ্ছে। আমার এর নাম দিয়েছি সোনালি ব্যাগ। পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করে এটি পলিথিনের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।’

প্রধানমন্ত্রী এ সময় সবাইকে ধীরে ধীরে পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জন করে পাটের ব্যবহার বাড়ানোর আহ্বান জানান। পরিবেশ দূষণ যাতে না হয়, সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রেখে প্রতিটি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।

বনভূমি রক্ষায় সরকার উদ্যোগ নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সরকারি ও ব্যক্তি পর্যায়ের উদ্যোগে বনাঞ্চলের হার বেড়ে গেছে। সব মিলিয়ে আমরা এখন মোট ভূখণ্ডের ২২ ভাগ বনাঞ্চলে পৌঁছে গেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে মিঠাপানির মাছ উৎপাদন বেড়েছে। আমরা মাছে এখন প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। মাছ উৎপাদনে আমরা বিশ্বের চতুর্থ স্থানে রয়েছি।’

সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষার উদ্যোগের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগারের প্রজনন স্থান সুরক্ষিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সুন্দরবনকে রক্ষার জন্য যা যা করণীয় তার সবই করা হচ্ছে। অনেক বনদুস্য আমাদের কাছে সারেন্ডার করছে। আমরা তাদের নগদ অর্থ দিয়ে বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘সুন্দরবনের ভেতরে জাতির পিতা খাশিয়ার খাল নামে একটি খাল খনন করেছিলেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে জাতির পিতার হত্যার পর ওই খালে চিংড়ি চাষ হয়। এতে মিঠাপানি যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়। তবে, আমরা বন্ধ খালগুলো আবার চালু করার উদ্যোগ নিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘সরকারের মধ্যে যদি সচেতনতা না থাকে, তাহলেই পরিবেশ নষ্টসহ নানা সমস্যা তৈরি হয়। এ পরিস্থিতি আমরা বঙ্গবন্ধুর হত্যার পরে দেখেছি। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই পরিবেশসহ দেশের সব দিকে লক্ষ্য রেখে পদক্ষেপ নেয়। এবারও সেই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’

সামাজিক বনায়নে উপকার ভোগীদের লভ্যাংশ বাড়িতে ৫০ শতাংশ করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সামাজিক বনায়নের ফলে মানুষ আর্থিকভাবে সচ্ছল হচ্ছেন। দেশের পরিবেশও রক্ষা হচ্ছে। সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে সরকারের আয় ৩৭১ কোটি ৮ লাখ ৮০ হাজার ২৫৬ টাকা। আর মহিলা উপকারভোগীর সংখ্যা এক লাখ ২১ হাজার ৫০৭ জন।’

দলীয়ভাবে কৃষক লীগের উদ্যোগে প্রতিবছর পহেলা আষাঢ় থেকে মাসব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় বলে তিনি জানান।

/ইএইচএস/আইএ/এপিএইচ/চেক-এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সড়ক আইনে শাস্তি ও জরিমানা কমানোয় টিআইবির উদ্বেগ
সড়ক আইনে শাস্তি ও জরিমানা কমানোয় টিআইবির উদ্বেগ
পিসিবি প্রধানের আস্থা হারালেও শ্বশুরকে পাশে পাচ্ছেন শাহীন
পিসিবি প্রধানের আস্থা হারালেও শ্বশুরকে পাশে পাচ্ছেন শাহীন
ইভ্যালির রাসেল-শামীমার বিচার শুরু
ইভ্যালির রাসেল-শামীমার বিচার শুরু
কুড়িয়ে পাওয়া সাড়ে চার লাখ টাকা ফিরিয়ে দিলেন ইজিবাইকচালক
কুড়িয়ে পাওয়া সাড়ে চার লাখ টাকা ফিরিয়ে দিলেন ইজিবাইকচালক
সর্বাধিক পঠিত
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
এবার চীনে আগ্রহ বিএনপির
এবার চীনে আগ্রহ বিএনপির
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি
রাজধানীর ৫ জায়গায় তরমুজ বিক্রি হবে কৃষকের দামে
রাজধানীর ৫ জায়গায় তরমুজ বিক্রি হবে কৃষকের দামে