X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

দামি লেখক-সাংবাদিকদের অপরাধ কী কারণে অপরাধ নয়, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৬ আগস্ট ২০১৮, ১৯:৪৭আপডেট : ১৬ আগস্ট ২০১৮, ২০:৫৪

শোক দিবসের আলোচনায় বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাকিস্তানি চিন্তাচেতনায় বিশ্বাসীরা নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য উসকানি দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘দামি দামি লেখক-সাংবাদিকরা অপরাধ করলে তাদের অপরাধ কী কারণে অপরাধ নয়? লেখার স্বাধীনতা আছে। কিন্তু লেখার মাধ্যমে দামি লেখক-সাংবাদিকরা দেশটাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছিলেন, সে উপলব্ধি কি তাদের থাকবে না? উসকানিদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে অন্যায় হয়ে যাবে?’

বৃহস্পতিবার (১৬ আগস্ট) বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ১৫ আগস্টে নিহতদের স্মরণে আয়োজিত এক সভায় সভাপতির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা শিশুদের নিয়ে খেলতে চেয়েছিল, শিশুদের ঘাড়ে বন্দুক রেখে ফায়দা হাসিল করতে চেয়েছিল, তারা দেশের শত্রু, জাতির শত্রু। বাস দুর্ঘটনায় দুই শিশু মারা গেছে। আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছি। কিন্তু এই দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আন্দোলনে একদল উসকানি দিয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা করেছি। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে উসকানি দিয়ে দিয়ে তারা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। পাকিস্তানি চিন্তাচেতনা যাদের মধ্যে রয়েছে, যারা সবুর খানের বংশধর, তারা এর (শিক্ষার্থীদের আন্দোলন) উসকানিদাতা।’

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘শিশুদের আন্দোলনে পুলিশ প্রশাসনসহ সর্বস্তরের মানুষ ধৈর্য দেখিয়েছে। কিন্তু এ আন্দোলনকে নিয়ে বুড়ো হাবড়ারা কেন শিশু হয়ে গিয়েছিল। তাদের শিশু হওয়ার ইচ্ছে হয়েছিল কেন?’

শোক দিবসের আলোচনায় বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘স্কুল ড্রেস বানানোর হিড়িক পড়ে গিয়েছিল, দর্জিরা স্কুল ড্রেস সাপ্লাই দিয়ে কুলিয়ে উঠতে পারেনি। শিশুদের ব্যাগে থাকবে বই-খাতা-কলম, কিন্তু সেখানে চাইনিজ কুড়াল, পাথর কেন? সেসব বুড়ো হাবড়াদের গ্রেফতার করলে কেন হাহাকার? বড় বড় লেখক-সাংবাদিকরা কী সেটা দেখবেন না, লিখবেন না? তাদের কলমের কালি কী ফুরিয়ে গেলো? যে যত বড়ই হোক, যারা অন্যায় করবে, তাদের বিচার কি এদেশে হবে না?’

তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানি ভাবধারায় বিশ্বাসী সবুর খানের আত্মীয়রা বংশপরম্পরায় দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে যাচ্ছে। জনগণকে বলবো, এদের ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। কারণ, তারা দেশের উন্নয়ন চায় না। তারা গণতন্ত্র চায় না, দেশের ভালো চায় না। তারা কেবল নিজেরা ভালো থাকতে চায়। এদেশে আর খুনিদের রাজত্ব আসবে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৫ আগস্টের চক্রান্তের সঙ্গে শুরু থেকে জিয়াউর রহমান জড়িত ছিল বলেই পাকিস্তানের এজেন্ট হিসেবে কাজ করে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে। সবাই তাকে বাহবা দিলো, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা বলে! কিন্তু অস্ত্রের মুখে ক্ষমতা দখল করে, সংবিধান লঙ্ঘন করে যে রাষ্ট্রপতি হয়, সে গণতন্ত্রের প্রবক্তা হয় কী করে?’

তিনি বলেন, ‘জিয়া রাষ্ট্রপতি হয়ে ঘোষণা দিলো আমরা দুই বোন যেন কোনও দিন দেশে ফিরতে না পারি। কারণ, আমি ও আমার বোন শেখ রেহেনা দেশে ফিরে রাজনীতিতে দাঁড়ালে আওয়ামী লীগ আবার ঘুরে দাঁড়াবে, আর এতে তাদের (জিয়াউর রহমান) রাজনৈতিক ক্ষতি হবে। ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগ আমাকে সভাপতি নির্বাচন করে। এরপর আমি দেশে ফিরে আসি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ব্রিটিশ এমপি টমাস উইলিয়াম বঙ্গবন্ধু হত্যার তদন্ত করতে এদেশে আসতে চেয়েছিলেন। তাকে ভিসা দেওয়া হয়নি। হত্যার তদন্তে বাধা দেওয়া হলো কেন, যদি জিয়াই জড়িত না থাকে! বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়া সম্পূর্ণভাবে জড়িত ছিল।’

একপর্যায়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে জাতির পিতার কন্যা বলেন, ‘আমার বাবা-মা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজনের বিচার চাইতে ৩৫ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। নিজে যখন ক্ষমতায় এসেছি, তখন বিচার করেছি। কত সরকার এসেছে, কেউ এ হত্যাকাণ্ডের বিচার করে দেয়নি। আমি ক্ষমতায় না আসলে হয়তো এ হত্যাকণ্ডের বিচারই হতো না।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি হয়ে জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করে দিয়েছিল। যুদ্ধাপরাধীদের মধ্যে যারা পাকিস্তানের পাসপোর্ট নিয়ে সেদেশে গিয়েছিল, তাদের এদেশের ফিরিয়ে এনে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছিল জিয়া।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভোট চুরি করে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের সংসদে বসিয়েছে জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া। এতে প্রমাণ হয়, ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডে জিয়াউর রহমান একা নয়, খালেদা জিয়াও জড়িত। খুনিরা খুনিই হয়, এরা ক্ষমতায় গেলে কী হবে এদেশের?

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ ও উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিনের পরিচালনায় স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাহারা খাতুন, সাম্যবাদী দলের প্রধান দিলীপ বড়ুয়া ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রমুখ।

/পিএইচসি/এমএ/টিএন/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
বিএনপির বিরুদ্ধে কোনও রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির বিরুদ্ধে কোনও রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী
চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, হিট অ্যালার্ট জারি
চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, হিট অ্যালার্ট জারি
জিমি নেই, তারপরও খেলতে নামছে মোহামেডান
জিমি নেই, তারপরও খেলতে নামছে মোহামেডান
সর্বাধিক পঠিত
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!