X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

সার্ক নয়, বিমস্টেককে সর্বাধিক গুরুত্ব দেবে বাংলাদেশ

দিল্লি প্রতিনিধি
২০ আগস্ট ২০১৮, ২১:৩১আপডেট : ২০ আগস্ট ২০১৮, ২১:৩৫

দিল্লির বণিকসভা ফিকি-তে বিমস্টেক জোটভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের আলোচনা সভা

জঙ্গিবাদের প্রশ্নে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার বিরোধের জেরে সার্ক বা দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক সহযোগিতা জোটের ভবিষ্যৎ যখন পুরোপুরি অনিশ্চিত, তখন বাংলাদেশ বুঝিয়ে দিয়েছে আঞ্চলিক কূটনীতিতে সার্কের বিকল্প হিসেবে বিমস্টেক জোটকেই তারা সর্বাধিক গুরুত্ব দেবে। 

পাকিস্তানকে বাইরে রেখে এই বিমস্টেক জোটে রয়েছে বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের মোট সাতটি দেশ— বাংলাদেশ, ভূটান, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড।

সোমবার (২০ আগস্ট) দিল্লিতে বিমস্টেকভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে এক আলোচনা সভায় বাংলাদেশ ঘোষণা করেছে— এই নবীন জোটের আওতায় সদস্য দেশগুলো সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় ইতিবাচক ভূমিকা নিতে পারবে বলে তাদের দৃঢ় ধারণা।

ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী ওই আলোচনা সভায় বলেন, ‘আমার জোরালো বিশ্বাস বিমস্টেক কাঠামোর মধ্যে সন্ত্রাসবাদ রুখতে ও সহিংস উগ্রপন্থার উত্থান ঠেকাতে আমরা সফল হতে পারবো।’

যে সন্ত্রাসবাদের ইস্যুকে কেন্দ্র করে সার্ক স্থবির হয়ে পড়েছে, সেই একই বিষয়কে কেন্দ্র করে যেভাবে বাংলাদেশ বিমস্টেকের মধ্যে আশার আলো দেখছে, তাতেই স্পষ্ট আগামী দিনে ঢাকার কূটনৈতিক গুরুত্ব কোথায় থাকবে।

মি. আলী ওই বৈঠকে আরও মনে করিয়ে দিয়েছেন, একুশ বছর আগে যখন প্রথম বিমস্টেকের অবতারণা হয়েছিল— তখন যে চারজন দেশনেতা এই জোট প্রতিষ্ঠায় যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তাদের অন্যতম। ১৯৯৭ সালে বিমস্টেকের জন্ম লগ্নেও তিনিই ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

এ মাসের শেষ দিকে (আগস্ট ৩০-৩১) নেপালের রাজধানী কাঠমাণ্ডুতে বিমস্টেকের চতুর্থ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে, যাতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও যোগ দেবেন বলে কথা রয়েছে।

শুধু তা-ই নয়, ওই শীর্ষ সম্মেলনের অবকাশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও অনুষ্ঠিত হবে বলে দুদেশের কূটনৈতিক সূত্রগুলো নিশ্চিত করছে।

ওই শীর্ষ সম্মেলনকে সামনে রেখে সোমবার ভারতের শীর্ষস্থানীয় চেম্বার অব কমার্স ফিকির আয়োজিত আলোচনা সভায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে চলছে। বাংলাদেশের মাটিকে ব্যবহার করে ভারত বা অন্য কোনও প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে যে জঙ্গি হামলা চালানো যাবে না, সেটা আমরা অনেক আগেই পরিষ্কার করে দিয়েছি।’

বিমস্টেক প্রক্রিয়াকে আরও বেগবান ও কার্যকরী করে তুলতেও শেখ হাসিনার সরকার যে বদ্ধপরিকর, সে কথাও স্পষ্ট করে দেন রাষ্টদূত আলী।

২০১৪ সাল থেকে বিমস্টেক জোটের সচিবালয়ও কাজ করছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকেই। এই পদক্ষেপকেও বিমস্টেকের প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকারের একটি বড় প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরেন তিনি।

বিমস্টেকভুক্ত দেশগুলো যাতে নিজেদের মধ্যে নিরাপত্তাগত ও অর্থনৈতিক খাতেও সহযোগিতা বাড়ায়, দিল্লির আলোচনা সভায় এদিন সেই আহ্বানও জানিয়েছে বাংলাদেশ।

আঞ্চলিক কূটনীতির পর্যবেক্ষকরা বেশ কিছুদিন ধরেই বিমস্টেককে বর্ণনা করছেন ‘নতুন সার্ক’ হিসেবে।

সার্ক প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা ছিল বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের। আর বিমস্টেক যে রাষ্ট্রনায়কদের নিজের হাতে গড়া তার অন্যতম হলেন বাংলাদেশের শেখ হাসিনা। ঘটনাচক্রে শেখ হাসিনা সরকারের কূটনীতিও এখন ঝুঁকছে সার্ককে পেছনে ফেলে নতুন সার্কের দিকেই!

 

/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখলে আমাদের লজ্জা হয়: শাহবাজ
বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখলে আমাদের লজ্জা হয়: শাহবাজ
৬ ম্যাচ পর জয় দেখলো বেঙ্গালুরু 
৬ ম্যাচ পর জয় দেখলো বেঙ্গালুরু 
সাদি মহম্মদ স্মরণে ‘রবিরাগ’র বিশেষ আয়োজন
সাদি মহম্মদ স্মরণে ‘রবিরাগ’র বিশেষ আয়োজন
‘নীরব এলাকা’, তবু হর্নের শব্দে টেকা দায়
‘নীরব এলাকা’, তবু হর্নের শব্দে টেকা দায়
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা