X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন্য নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ

শফিকুল ইসলাম
১৫ অক্টোবর ২০১৮, ০৯:৫৮আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০১৮, ১৬:০৭

 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কম্পাউন্ডে আধুনিক বহুতল ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মূল ভবনটি ব্রিটিশ আমলে নির্মিত। এই ভবনটিসহ অ্যানেক্স ভবন ও কনস্যুলার ভবনও অনেক দিনের পুরনো। এসব ভবন ভূমিকম্প সহনীয়ও নয়। এছাড়া, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অফিস কক্ষের সংকট রয়েছে। বিদ্যমান সভাকক্ষও আন্তর্জাতিক মানের নয়। এসব কারণে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন্য একটি আধুনিক সুবিধাসম্বলিত বহুতল ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড অনুযায়ী ভূমিকম্প সহনীয় এই নতুন ভবন নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। এর পুরোটাই সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে বরাদ্দ দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিদ্যমান চত্বরে একটি বহুতল অফিস ভবন নির্মাণ (প্রথম পর্যায়)’ শীর্ষক একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। সেগুনবাগিচায় মোট ৩ দশমিক ২৪ একর জমিতে এ ভবন নির্মিত হবে।

জানা গেছে, নতুন ভবন নির্মিত হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের জন্য আধুনিক অফিস কক্ষ ও আন্তর্জাতিক মানের সভাকক্ষের স্বল্পতা দূর হবে। সভাকক্ষে থাকবে আধুনিক যন্ত্রপাতিও। আর ভবনটি হবে নান্দনিক, যার মাধ্যমে বহির্বিশ্বে কূটনীতিক, রাষ্ট্রীয় অতিথি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ যেমন সহজ হবে, তেমনি তাদের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও বাড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং গণপূর্ত অধিদফতর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। ২০২০ সালের ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, কিন্তু এ মন্ত্রণালয়ের প্রধান ভবনটি খুবই পুরনো (ব্রিটিশ আমলে নির্মিত)। এছাড়া, ভবনের পেছনে অবস্থিত অ্যানেক্স ভবন, কনস্যুলার ভবনও পুরনো। বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড অনুযায়ী ভূমিকম্প সহনীয় হিসেবে ভবনটির কাঠামোগত সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন। বর্তমানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্যাম্পাসে মোট জমির পরিমাণ ৩ দশমিক ২৪ একর। এই জমিতে ৪টি ভবনেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যা আধুনিক বাংলাদেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

সূত্র আরও জানায়, এই চারটি ভবনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের সার্বিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে না। কক্ষ সংকটের কারণে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পর্যাপ্ত স্থান সংকুলান কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। উন্নতমানের সভাকক্ষ না থাকায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ের কোনও সভা বা সেমিনার অনুষ্ঠানও করা যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে একটি নতুন ভবন নির্মাণের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েই সরকার প্রকল্পটি গ্রহণ করেছে। এই প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কম্পাউন্ডে একটি আটতলা ভবন নির্মিত হবে। পরবর্তীতে বর্তমানের পুরনো ভবনের জায়গায় একটি অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্বলিত আন্তর্জাতিক মানের ২০-তলা এনার্জি অ্যাফিসিয়েন্ট গ্রিন বিল্ডিং অফিস ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কম্পাউন্ডে একটি আটতলা ও একটি ২০-তলা ভবন নির্মাণের জন্যে স্থাপত্য অধিদফতরকে নকশা প্রণয়নের প্রাথমিক অনুমোদনও দেওয়া হয়েছে।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চলতি ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রথম পর্যায়ের কাজের জন্য নেওয়া প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মাচারীদের কাজের সুবিধার্থে প্রথম পর্যায়ে আটতলা ভবনটি নির্মাণের লক্ষ্যে আলোচ্য প্রকল্পটি ৬১ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব পাঠানো হয়। গত ১৯ জুলাই প্রকল্পটির বিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি বা পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় প্রকল্পটি অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়। বর্তমানে পিইসি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পুনর্গঠিত প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। আর প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, স্বাধীনতার এত বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত একটি আধুনিক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভবন বা সে রকম একটি অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়নি। বিদ্যমান পররাষ্ট্র ভবনের অফিস কক্ষ আন্তর্জাতিক মানের নয়। এখানে নেই কোনও আধুনিক সুবিধাসম্বলিত সভাকক্ষ। একটি নান্দনিক পররাষ্ট্র ভবন নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, যার মাধ্যমে বহির্বিশ্বের কূটনীতিক, রাষ্ট্রীয় অতিথি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সামনে দেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরা যাবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আধুনিক সুবিধাসম্বলিত পররাষ্ট্র ভবন এখন সময়ের দাবি। কারণ, বর্তমান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভবনটি পুরনো। তাই বহির্বিশ্বের সঙ্গে সমন্বয় রেখে একটি আধুনিক ভবন নির্মাণের জন্য প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, যা একনেক অনুমোদন দিয়েছে। আশা করছি আগামীতে নতুন সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই নতুন ভবনে কাজ শুরু করতে পারবেন। পরবর্তী সময়ে একই কম্পাউন্ডে ২০-তলা আরও একটি সুউচ্চ ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের, যার নকশাও অনুমোদন হয়ে আছে।’

/এপিএইচ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বাঘ ছাড়ায় নিজ গ্রামে শেষবার ভোট, আবেগে আচ্ছন্ন বাসিন্দারা!
বাঘ ছাড়ায় নিজ গ্রামে শেষবার ভোট, আবেগে আচ্ছন্ন বাসিন্দারা!
তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে যশোর, জনশূন্য রাস্তাঘাট
তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে যশোর, জনশূন্য রাস্তাঘাট
মুখোমুখি ইরান-ইসরায়েল, পরীক্ষার মুখে মার্কিন সামরিক কৌশল
মুখোমুখি ইরান-ইসরায়েল, পরীক্ষার মুখে মার্কিন সামরিক কৌশল
শহীদ মিনারে বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাসের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা
শহীদ মিনারে বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাসের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা
সর্বাধিক পঠিত
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
দুর্নীতির অভিযোগ: সাবেক আইজিপি বেনজীরের পাল্টা চ্যালেঞ্জ
দুর্নীতির অভিযোগ: সাবেক আইজিপি বেনজীরের পাল্টা চ্যালেঞ্জ
ইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
সারা দেশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা
সারা দেশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা