X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্তি নয়, নারীদের স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা জরুরি

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২০ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৬:৪৬আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৬:৫০

মাসিক সমস্যা নারীদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়টিকে জাতীয় সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেছেন, ‘নারীদের মাসিক স্বাস্থ্য বিষয়টি পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব নয়। এর জন্য সচেতনতা জরুরি।’

বৃহস্পতিবার (২০ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) এবং মেন্সচুরাল হাইজিন ম্যানেজমেন্ট (এমএইচএম) প্লাটফর্ম আয়োজিত নারীদের মাসিক স্বাস্থ্য শিক্ষার গুরুত্ব বিষয়ক এক পরামর্শ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, ‘নারী স্বাস্থ্য, বিশেষ করে তাদের মাসিক সমস্যার বিষয়টি পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমে শেখানো সম্ভব না। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সচেতন করে তুলতে হবে। এ লক্ষ্যে তাদেরকে সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করাতে হবে, বই পড়ার অভ্যাস করাতে হবে। পাঠ্যবই শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় পাস করার জন্য পড়ে। আবার আমাদের পরীক্ষা কেন্দ্রিকতা থেকে বেরিয়েও আসতে হবে। এটা আমাদের অনেক বড় বাধা। শিক্ষার্থীদের ঠিক সেভাবেই শেখাতে হবে যেভাবে তারা পছন্দ করে।’

এ সময় তিনি বিখ্যাত নাট্যকার ‘জর্জ বার্নার্ড শ’র উদাহরণ দিয়ে বলেন, বার্নার্ড শ বলে গিয়েছিলেন যে, তার বই যেন কখনও পাঠ্যপুস্তকের অন্তর্ভুক্ত করা না হয়। তাহলে বইগুলো বা বইয়ের মাধ্যমে পরামর্শগুলো ধংস হয়ে যাবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘যেখানেই যাই না কেন সবাই পাঠ্যপুস্তকে নানা বিষয় অন্তর্ভুক্তির কথা বলেন। আবার এদিকে বইয়ের ওজন ভারি হয়ে যাচ্ছে। আমরা সব দিক থেকেই চাপে আছি। আর কারিকুলামে এরকম জাতীয় সমস্যা অন্তর্ভুক্ত করা হলো একটি সহজ দায়মুক্তি। কিন্তু এভাবে সমস্যার সমাধান ঘটবে বলে আমার মনে হয় না।’

এদিকে নারীদের মাসিক স্বাস্থ্য শিক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ভাবছে বলে জানিয়েছেন এনসিটিবির সদস্য অধ্যাপক মো. মোশিউজ্জামান।

তিনি বলেন, ডিসেম্বর থেকে নতুন কারিকুলাম প্রণয়নের কাজে হাত দিচ্ছি আমরা। এ বিষয়টিকে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে স্বাগত জানাতে চাই। প্রতি বছর আমরা সবার মতামত নিয়েই কাজ করি কিন্তু তারপরও সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়। তাই এ বিষয়ে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে আমরা কাজ করি।

বিএনপিএস’র নির্বাহী পরিচালক এবং এমএইচএম প্লাটফর্মের চেয়ারম্যান রোকেয়া কবীরের নেতৃত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব অ্যাডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের পরিচালক প্রফেসর সৈয়দা তাহমিনা আখতার, টিচার্স ট্রেনিং কলেজের প্রিন্সিপ্যাল প্রফেসর কানিজ সৈয়দা বিনতে সাবাহ, নেদারল্যান্ড দূতাবাসের সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার মাশফিকা জামান সাতিয়ার, ইউনিসেফের শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ইকবাল হোসেন, ইউবিআর অ্যালায়ান্সের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর শারমীন ফায়াদ উবায়েদ। এছাড়া মাসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে এনসিটিবির বইয়ের বিশ্লেষণ থেকে প্রাপ্ত তথ্য উপস্থাপন করেন আইসিসিডিআর,বি’র গবেষক টিশান মাহফুজ।

সভায় বক্তারা বলেন, এ সমস্যার জন্য ৪০ শতাংশ মেয়ে গড়ে তিন দিন স্কুলে অনুপস্থিত থাকে। সঙ্গে এ বিষয়ে কুসংস্কার তো রয়েছেই। এতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়। পাঠ্যপুস্তকে এ বিষয়ে হালকা উল্লেখ থাকলেও সমস্যা থেকে উত্তরণের কোনও উপায় বলে দেওয়া নেই। এর মধ্যে সবচেয়ে ভালোভাবে ষষ্ঠ শ্রেণির বইতে উল্লেখ আছে। কিন্তু এটি ৪র্থ শ্রেণির বইতে উল্লেখ থাকাটা জরুরি। এতে শিক্ষার্থীরা এ সম্পর্কে আগে থেকে জেনে যাবে। এছাড়া ছেলেদেরও জানতে হবে। তাতে তারা তাদের সহপাঠীদের বিপদে সহায়তা ছাড়াও এ বিষয়ক টিজিং থেকে দূরে থাকবে।

/এইচএন/টিটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বর্ষার আগেই চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু, মোকাবিলায় যা করছে ডিএনসিসি
বর্ষার আগেই চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু, মোকাবিলায় যা করছে ডিএনসিসি
গোপনে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
গোপনে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
টিপু-প্রীতি হত্যা মামলার অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশ ২৯ এপ্রিল
টিপু-প্রীতি হত্যা মামলার অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশ ২৯ এপ্রিল
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
আপিল বিভাগে নিয়োগ পেলেন তিন বিচারপতি
আপিল বিভাগে নিয়োগ পেলেন তিন বিচারপতি