X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব কি বাংলাদেশের নাগরিক?

রঞ্জন বসু, দিল্লি
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১০:১৪আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১০:১৬

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরায় বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব সত্যিই ভারতের নাগরিক কিনা, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারকে তা যাচাই করে দেখতে হচ্ছে।

ত্রিপুরার রাজবংশের উত্তরাধিকারী ও কংগ্রেস নেতা প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মার দায়ের করা এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের উচ্চ আদালত এ নির্দেশ দিয়েছেন।

নির্দেশনা অনুযায়ী, শুধু বিপ্লব দেবই নন— ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন সাংবিধানিক পদে আরও যারা আছেন, তাদেরও নাগরিকত্ব খতিয়ে দেখতে হবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে।

গত বছরের মার্চ মাসে ত্রিপুরায় অনেক বছরের বামপন্থী শাসনের অবসান ঘটিয়ে বিজেপি প্রথমবারের মতো সরকার গঠন করে। আর সেই সরকারের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান বিপ্লব দেব।

বিপ্লব বাবুর বাবা-মা হারাধন দেব ও মীনা রানী দেব অবশ্য একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলা থেকে ভারতে এসেছিলেন। তাদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়রা এখনও অনেকেই বাংলাদেশে রয়েছেন।

তবে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার শুরু হয় যে, বিপ্লব দেবের জন্মও নাকি বাংলাদেশে। উইকিপিডিয়ায় তার জন্ম বৃত্তান্তে অনেক দিন ধরে লেখা ছিল যে, তার জন্ম বাংলাদেশে।

এই জল্পনার পটভূমিতে গত আগস্ট মাসে ত্রিপুরায় মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে ঘোষণা করে যে, বিপ্লব দেবের জন্ম ভারতেই এবং তিনি এদেশের বৈধ নাগরিক।

ত্রিপুরার গোমতী জেলার জামজুড়ি গ্রামে ১৯৭১ সালের ২৫ নভেম্বর বিপ্লব বাবুর জন্ম হয়েছিল বলেও সরকারিভাবে ঘোষণা দেওয়া হয়।

কিন্তু তারপরও যে মুখ্যমন্ত্রীর নাগরিকত্ব নিয়ে বিতর্ক থামছে না, তা রাজ্যের অন্যতম বিরোধী নেতা ও ‘রাজা’ প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মার করা মামলা থেকেই স্পষ্ট।

বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দুদের নাগরিকত্ব দিতে ভারতীয় পার্লামেন্টে সম্প্রতি যে সংশোধনী বিলটি পেশ হয়েছে, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্য।

এই পটভূমিতেই সুপ্রিম কোর্টে রিট দাখিল করেন প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মা। ওই মামলায় তিনি যেমন বিলটির সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন– তেমনই বিপ্লব দেব-সহ রাজ্যের বিভিন্ন সাংবিধানিক পদে থাকা ব্যক্তিদের জন্ম বৃত্তান্ত খতিয়ে দেখারও দাবি জানিয়েছেন।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সুপ্রিম কোর্ট কিন্তু এই পরের দাবিটিও খারিজ করে দেননি।

বরং,  প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর (যিনি নিজেও উত্তর-পূর্ব ভারতের লোক) নেতৃত্বে ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন, এদের সবার জন্ম কোথায় কবে হয়েছে, তার বিস্তারিত তথ্য আদালতে পেশ করার জন্য।

অন্যভাবে বললে, মুখ্যমন্ত্রী এবং  তার কেবিনেট সদস্যদের জন্ম বাংলাদেশে নাকি ভারতে এবং সেটা ১৯৭১ সালের  ২৫ মার্চের আগে না পরে, সেটাই এখন সরকারকে খোঁজখবর করে জানাতে হবে।

এজন্য সুপ্রিম কোর্ট সরকারকে সময় বেঁধে দিয়েছে আগামী ৪ মার্চ পর্যন্ত। ফলে আশা করা হচ্ছে, আগামী তিন সপ্তাহের ভেতরেই হয়তো সুপ্রিম কোর্টে পাকাপাকিভাবে ফয়সালা হবে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর ‘জন্ম রহস্য’।

 

 

 

/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সাদি মহম্মদ স্মরণে ‘রবিরাগ’র বিশেষ আয়োজন
সাদি মহম্মদ স্মরণে ‘রবিরাগ’র বিশেষ আয়োজন
‘নীরব এলাকা’, তবু হর্নের শব্দে টেকা দায়
‘নীরব এলাকা’, তবু হর্নের শব্দে টেকা দায়
নির্দেশের পরও হল ত্যাগ করছেন না চুয়েট শিক্ষার্থীরা, বাসে আগুন
নির্দেশের পরও হল ত্যাগ করছেন না চুয়েট শিক্ষার্থীরা, বাসে আগুন
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা