দ্বিতীয় দিনের অভিযানেও বহুতল ভবনে নানা অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। অভিযানে দেখা গেছে, বেশিরভাগ ভবন নির্মাণে মানা হয়নি অনুমোদিত নকশা। এছাড়া, ভবনগুলোতে নেই পর্যাপ্ত অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা। রাজধানীর বহুতল ভবনগুলোর অনিয়ম, নকশাবহির্ভূত অবকাঠামো এবং অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা অনুসন্ধানে এই অভিযান পরিচালনা করছে রাজউক।
রাজউকের জোন-৪ এর পরিচালক মামুন মিয়ার নেতৃত্বে বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ে ইরেক্টর হাউস, সফুরা টাওয়ার, আতাতুর্ক টাওয়ার, এ আর টাওয়ার, আহমেদ টাওয়ার, আওয়াল সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসব ভবনে প্রয়োজনীয় অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা পাওয়া যায়নি। দুটি ভবনের নকশা খুঁজে না পাওয়ায় তথ্য সংগ্রহ করতে পারেনি রাজউক।
১৮ নম্বর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ে অবস্থিত ১৫ তলা ইরেক্টর হাউস। এই ভবনে একটি মাত্র সিঁড়ি থাকলেও নেই কোনও ফায়ার এক্সিট সিঁড়ি। এছাড়া ভবনটিতে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থাও খুঁজে পায়নি রাজউক। ২০ নম্বর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ের আরেকটি ভবন সফুরা টাওয়ার। ১৬ তলা এ ভবনেও ত্রুটি খুঁজে পেয়েছে রাজউক। এ ভবনেও নেই কোনও ফায়ার এক্সিট সিঁড়ি। ছিল না পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা।
আতাতুর্ক টাওয়ারেও অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে রাজউক। ১৫ তলার অনুমোদন থাকলেও ভবনটি ১৩ তলা পর্যন্ত নির্মাণ করা হয়েছে। তিন তলা থেকে ১৩ তলা পর্যন্ত রাজউকের আবাসিক অনুমোদন থাকলেও ভবনটি বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আতাতুর্ক টাওয়ারেও পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা খুঁজে পায়নি রাজউক। ১৫ তলা এফ আর টাওয়ারও রাজউক অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী নির্মাণ করা হয়নি। ভবনটির নিচতলায় ফাঁকা জায়গা থাকার কথা থাকলেও তা একটি ব্যাংককে ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, আহমেদ টাওয়ার ও আওয়াল সেন্টারে গিয়ে নকশা পায়নি রাজউকের টিম। ভবন দুটিতে মালিকের কোনও প্রতিনিধিকেও খুঁজে পাননি রাজউকের কর্মকর্তারা। আহমেদ টাওয়ার ভবনটি ২৮ তলা। যদিও ভবন নির্মাণের সময় রাজউকের কাছে ১৫ তলার আবেদন করা হয়েছিল। ভবনটির ২৩ তলা পর্যন্ত ভাড়ায় বিভিন্ন অফিস রয়েছে। ২৩ তলার ওপরে নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। নকশা খুঁজে না পাওয়ায় ভবনটির নির্মাণকাজ বন্ধের নির্দেশ দেন রাজউকের জোন-৪-এর পরিচালক মামুন মিয়া। এফ আর টাওয়ারের পশ্চিম পাশে থাকা আহমেদ টাওয়ারেও নেই পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা।
আওয়াল সেন্টার একটি ২৩ তলা ভবন। নিয়ম না মেনে এ ভবনের বেজমেন্টে রয়েছে সাব স্টেশন ও জেনারেটর। এ ভবনেও পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা পাওয়া যায়নি।
অভিযান প্রসঙ্গে রাজউকের জোন-৪ এর পরিচালক মামুন মিয়া বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে তথ্য সংগ্রহ করছি। প্রায় সব ভবনেই ত্রুটি খুঁজে পেয়েছি। ভবন অনুপাতে যেভাবে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা রাখার কথা, তা মানা হয়নি। এসব তথ্য আমরা সংগ্রহ করছি। পরবর্তীতে রাজউক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’