তৈরি পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ভবন ভাঙার প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে। তবে ভবনটি ভাঙার আগে ভেতর থেকে মালামাল সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। ভবনে অবস্থানরত অফিস মালিকদের আবেদন মেনে নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকাল ৩টার মধ্যে মালামাল সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দিনভর মালামাল সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ভবনটি সিলগালা করে রাজউক।
ভবনটি ভাঙার বিষয়ে এর আগে গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, ২৫ এপ্রিলের পরবর্তী এক সপ্তাহের মধ্যে বিজিএমইএ ভবন ভাঙা হবে। তার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে ওই স্থানটি সম্পূর্ণ খালি করে দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গার্মেন্ট কারখানা মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) প্রধান কার্যালয়টির নাম ‘বিজিএমইএ কমপ্লেক্স’। এটি বিজিএমইএ ভবন নামে পরিচিত।
অ্যাসোসিয়েশনের কর্ণধাররা রাজউকের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে হাতিরঝিল ও বেগুনবাড়ি খালের মাঝখানে ১৫তলা ভবনটি নির্মাণ করেন। এ নিয়ে মামলা হলে আদালত বিজিএমইএ’র নিজ খরচে ভবনটি ভাঙার পক্ষে রায় দেন।
বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন শুরুতেই অভিযোগ তুলেছিল, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অনুমতি না নিয়ে এবং উন্মুক্ত স্থান ও প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০ ভঙ্গ করে বেগুনবাড়ি খালের একাংশ ভরাট করার মাধ্যমে ওই ভবন তোলা হয়েছে।
সংবাদপত্রে প্রতিবেদন নজরে আনা হলে ২০১০ সালের ৩ অক্টোবর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল বিজিএমইএ ভবন অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ আপিল করলে ২০১৬ সালের ২ জুন তাও খারিজ হয়ে যায়।
পরে ২০১৭ সালের ৫ মার্চ আপিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা বিজিএমইএ’র আবেদনটিও খারিজ হয়ে যায়।
এরপরও ভবন না ভাঙতে আদালতের কাছে বারবার সময় চান বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। তবে সর্বশেষ ২০১৮ সালের ২ এপ্রিল মুচলেকা দিয়ে ভবন ভাঙতে এক বছর সময় পান বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ।