X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১

অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে ব্রুনাইয়ের ব্যবসায়ীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

বাংলা ট্রিবিউন ডেস্ক
২২ এপ্রিল ২০১৯, ১৮:০৯আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০১৯, ২০:১০

বাংলাদেশ-ব্রুনাই বিজনেস ফোরামের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে অভিন্ন যাত্রায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সঙ্গে একটি অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার জন্য ব্রুনাইয়ের ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

সোমবার (২২ এপ্রিল)  বিকালে ব্রুনাইয়ে হোটেল এম্পায়ার অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবে আয়োজিত বাংলাদেশ-ব্রুনাই বিজনেস ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে অভিন্ন যাত্রায় আমাদের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সঙ্গে একটি অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার জন্য আপনাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। বাংলাদেশে উন্নয়ন ও ব্যবসায়িক সুযোগ-সুবিধার বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্যও আপনাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘ব্যয়, মানবসম্পদ, অভ্যন্তরীণ বাজারের আকার, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশাধিকার, বাণিজ্য সুবিধা, বিনিয়োগ সুরক্ষা এবং সামাজিক-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রেক্ষাপটে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক স্থান হয়ে উঠেছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে উদার বৈদেশিক বিনিয়োগ সুবিধাগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এসব সুবিধাগুলোর মধ্যে রয়েছে আইনের মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগের সুরক্ষা, উদার কর নীতি এবং যন্ত্রপাতি আমদানির ওপর সুবিধাজনক শুল্ক ব্যবস্থা।’

প্রধানমন্ত্রী হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ ১০০ ভাগ বৈদেশিক ইক্যুইটি, অবাধ প্রস্থান, লভ্যাংশ ও মূলধন পূর্ণ প্রত্যর্পণ সুবিধা প্রদান করে। তিনি বলেন, ‘আমরা ইইউ, কানাডা ও জাপানসহ অধিকাংশ বিশ্ববাজারে অগ্রাধিকার প্রবেশ সুবিধা ভোগ করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ এখন দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি এবং জিডিপির পরিপ্রেক্ষিতে অবস্থান বিশ্বে ৪১তম।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি একটি সুদৃঢ় সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, গতিশীল বেসরকারি খাত এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান প্রবণতা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিচক্ষণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, বেসরকারি খাতে উদ্যোক্তা সহায়ক অব্যাহত নীতিমালা এবং অবকাঠামো ও মানবউন্নয়নে জোরালো বিনিয়োগ বাংলাদেশের অর্থনীতির সাম্প্রতিক উল্লেখযোগ্য সাফল্যের ক্ষেত্রে ব্যাপক অবদান রেখেছে।’

তিনি বলেন, ‘গত বছর ৭.৮৬% জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের পরে এ বছর আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৮.১৩% হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আমাদের মাথাপিছু আয় এ বছর ১,৯০৯ মার্কিন ডলার হবে, যা মধ্যম আয়ের দেশের আয়ের কাছাকাছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিল্প খাতের দ্রুত সম্প্রসারণের ফলে বাংলাদেশ কেবলমাত্র পাঁচ বছরে বার্ষিক রফতানি আয় দ্বিগুণ করতে সক্ষম হয়েছে। অন্যদিকে, কৃষি ও সেবা খাতে ক্রমাগত প্রবৃদ্ধি অর্থনীতিকে আরও স্থিতিশীলতা ও স্থিতিস্থাপকতা দিয়েছে।’

বেসরকারি খাতকে বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে বর্ণনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাঁর সরকার দেশি ও বিদেশি উদ্যোক্তা ও বেসরকারি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সারাদেশ জুড়ে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছি এবং আইটি খাতের উন্নয়নে কয়েকটি শিল্প পার্ক স্থাপন করছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গার্মেন্টস খাতে বাংলাদেশের সাফল্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত। তিনি বলেন, ‘চীনের পর আমরা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রেডিমেড গার্মেন্টস রফতানিকারক দেশ।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানসম্মত ওষুধের জন্য একটি বড় বৈশ্বিক কেন্দ্র হিসেবে বাংলাদেশ দ্রুত গড়ে উঠছে। আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া এবং আফ্রিকা সহ ১০০টিরও বেশি দেশে ওষুধ রফতানি করছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাহাজ নির্মাণ করার ক্ষেত্রে বিশ্বমানের সমুদ্রগামী জাহাজ নির্মাণ করে বাংলাদেশ বৈশ্বিক মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। বাংলাদেশি কোম্পানিগুলো ইউরোপসহ ১৪টি দেশে যাত্রী ও মালবাহী জাহাজ সরবরাহ করেছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সফটওয়্যার হচ্ছে বাংলাদেশের আরেকটি প্রতিশ্রুতিশীল শিল্প। বাংলাদেশে ৮০০টি সফটওয়্যার ও আইটি কোম্পানি রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ১৫০টিরও বেশি বিদেশের গ্রাহকদের সেবা প্রদান করছে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘২০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি আইটি পেশাদার বিশ্বব্যাপী মাইক্রোসফট, ইন্টেল, আইবিএম, ওরাকল এবং সিস্কোসহ বিভিন্ন বিশ্বখ্যাত আইটি কোম্পানিতে কাজ করছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের কৃষিভিত্তিক পণ্য, গৃহস্থ যন্ত্রপাতি, হালকা প্রকৌশল পণ্য এবং ইলেকট্রনিক গ্যাজেট বিশ্ববাজারে স্থান করে নিচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী পরিবেশ সংক্রান্ত উদ্বেগ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ থেকে জৈব প্রক্রিয়ায় মাটিতে মিশে যেতে সক্ষম পাট ও বিকল্প পাটজাত পণ্যের প্রচুর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এছাড়াও আমাদের কাছে আরও প্রতিযোগিতামূলক মূল্যের অন্যান্য গুণমানের পণ্য রয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ম্যাককিনসে অ্যান্ড কোম্পানি সঠিকভাবেই বাংলাদেশকে দ্রুত বিকাশমান সোর্সিং গন্তব্য, উদীয়মান উৎপাদন ও বিতরণ কেন্দ্র, এবং একটি বর্ধমান ভোগ অর্থনীতি হিসেবে চিহ্নিত করেছে।’

তিনি বলেন, ‘তার সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে, যিনি ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার লক্ষ্যে দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘বঙ্গবন্ধু যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও বঞ্চনা থেকে মুক্ত করে ‘সোনার বাংলায়’ রূপান্তর করতে চেয়েছিলেন।’’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তার সরকার সামাজিক খাতে সমতা ও জোরালো বিনিয়োগের সঙ্গে ত্বরান্বিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে ১৬২ মিলিয়ন মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কাজ করছে।’

তিনি বলেন, ‘২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়া এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ একটি দেশ গড়ার লক্ষ্যে আমরা সুস্পষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি।’ বাসস

/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
নীলফামারীতে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারিসহ ৩ জন গ্রেফতার
নীলফামারীতে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারিসহ ৩ জন গ্রেফতার
পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের অগ্রগতি জাতিসংঘে তুলে ধরলো বাংলাদেশ
পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের অগ্রগতি জাতিসংঘে তুলে ধরলো বাংলাদেশ
বার্সার বিদায়ে কান্সেলোর অনাগত সন্তানের মৃত্যু কামনা করেছেন সমর্থকরা!
বার্সার বিদায়ে কান্সেলোর অনাগত সন্তানের মৃত্যু কামনা করেছেন সমর্থকরা!
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার মিললো ২৭ বস্তা টাকা
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার মিললো ২৭ বস্তা টাকা
সর্বাধিক পঠিত
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
ইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি