জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি বলেছেন, ‘নারীরা পারিবারিকভাবেই অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত। সুযোগ ও সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা সম্ভব। ক্ষুদ্র ও মাঝারি নারী উদ্যোক্তাদের আর্থিক সহায়তা প্রক্রিয়া সহজ হলে তারা জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখতে পারবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে আসছে নারীরা; সব পেশাতেই নারীর ক্ষমতায়ন আজ দৃশ্যমান।’
ইউএনডিপি এবং বাংলাদেশ উইমেন অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (বিডব্লিউসিসিআই) আয়োজিত ‘উইমেন'স ইকনোমিক এমপাওয়ারমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক পলিসি ডায়ালগ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন নারী উদ্যোক্তা ফেরদৌসী সুলতানা বেগম এবং শারমিন ইসলাম।
বর্তমান সময়ে নারীদের এগিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে স্পিকার বলেন, ‘নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য নারীশিক্ষার প্রসার এবং নারী প্রশিক্ষণ অত্যন্ত জরুরি। পরনির্ভরশীলতা কাটিয়ে স্বনির্ভর হওয়ার ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জনের কোনও বিকল্প নেই। সুদীর্ঘ পথ পরিক্রমায় নারীরা অন্তরায় কাটিয়ে সকল বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছে। এখন প্রয়োজন নিরাপদ কর্মপরিবেশ।’
নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘সামাজিক প্রতিবন্ধকতা যুগে যুগে ছিল। সেসব প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে পশ্চাৎপদ ও প্রান্তিক নারীগোষ্ঠীকে উন্নয়নের ধারায় সম্পৃক্ত করতে হবে। তবেই অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন হবে। সেলাই, ব্লক, বাটিকই শুধু নয়, ঋণ সুবিধা পেলে অন্যান্য ব্যবসায়ও নারীরা সক্ষমতার স্বাক্ষর রাখতে পারবে। ফলশ্রুতিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে। বারবার নদীভাঙনের পরও এদেশের নারীরা পুনরায় ঘর বাঁধে। সুতরাং এদেশের নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন কিছু সময়ের ব্যাপার।’
এ সময় ড. শিরীন শারমিন আরও বলেন, ‘নারী উদ্যোক্তারা উৎপাদিত পণ্য যাতে সহজে রাজারজাত করতে পারে সেই উদ্যোগ নিতে হবে। “জয়িতা”র মতো প্রতিষ্ঠান উপজেলা পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে পারলে পণ্য বিপণনে নতুন মাত্রা যোগ হবে এবং নতুন নতুন নারী উদ্যোক্তা তৈরি হবে। তিনি সমাজে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান। জেন্ডার বেজড সহিংসতা প্রতিরোধের পাশাপাশি প্রতিকারের উপায় বের করা উচিত। এ সময় তিনি মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাতের মতো আর কোনও নারী যেন এমন সহিংসতার শিকার না হয় সে বিষয়ে সচেতন হতে সবাইকে আহ্বান জানান।’
সেলিমা আহমেদ এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন– ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি, আয়েশা ফেরদৌস এমপি, ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরফান আলী, নারী উদ্যোক্তা রোকেয়া কবির এবং তাসলিমা সুলতানা খানম। এছাড়া অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন স্তরের নারী উদ্যোক্তারা উপস্থিত ছিলেন।
