ছয় বছরেও ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠন না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি। এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের দেওয়া ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হতে পারেনি তারা। পরে কমিটি বিষয়টি নিয়ে ভূমি ও আইন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বুধবার (৮ মে) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।
সংসদীয় কমিটির কার্যপত্র থেকে জানা যায়, ২০০৪ সালে দ্য স্টেট অ্যাকুইজেশন অ্যান্ড টেনান্সি অ্যাক্ট-১৯৫০-এ সংশোধনী এনে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। এতে দায়ের করা আড়াই লাখের বেশি মামলার বিপরীতে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মাত্র ২৬ হাজার ৫১৫টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। ২০০৪ সালের আইনেই সারাদেশে ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠনের বিধান রাখা হয়।
২০১২ সালে এই আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠনের গেজেট করা হয়। এর জন্য আটটি পদ সৃজনও করা হয়। পরে এ বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে কিছু সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়। যেগুলোর কোনোটাই বাস্তবায়ন হয়নি।
জানা গেছে, বুধবারের কমিটিতে ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনাল না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে মন্ত্রণালয় কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি। তবে ২০০৪ সালের আইন অনুযায়ী ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্র্যাইবুনাল গঠনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে আগের মতো সহকারী জর্জের নেতৃত্বে আপিল ট্রাইবুনাল গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কমিটিতে জানানো হয়। কমিটি এতে সন্মতি না দিয়ে আগামী বৈঠকে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে আলোচনার কথা জানায়।
জানতে চাইলে কমিটির সভাপতি আব্দুল মতিন খসরু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মানুষের হয়রানি হচ্ছে। লাখ লাখ মামলা ঝুলে আছে। আমরা দ্রুত এই ট্রাইব্যুনাল করতে বলেছি।
সংসদীয় কমিটি তাদের পরবর্তী বৈঠকে অ্যাটর্নি জেনারেল, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার ও ভূমি সচিবের উপস্থিতিতে ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠন নিয়ে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ভূমি রেজিস্ট্রেশনে জনদুর্ভোগ লাঘবে প্রতিবেদন দেওয়ার সুপারিশ
সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে ভূমি রেজিস্ট্রেশন ফি কীভাবে নির্ধারণ করা হয় সে বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পরবর্তী বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া বৈঠকে ভূমি রেজিস্ট্রেশন নিয়ে জনদুর্ভোগের কারণ, এর জন্য কারা জড়িত এবং কীভাবে তাদের হাত থেকে জনগণকে মুক্তি দিয়ে সহায়তা দেওয়া যায়, সে বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিটিতে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
দেশের জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে ভূমি রেজিস্ট্রশন পদ্ধতি ডিজিটাইজেশন বিষয়ে আলোচনা হয়।
কমিটির সভাপতি আব্দুল মতিন খসরুর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য সাহারা খাতুন, শামসুল হক টুকু, আব্দুল মজিদ খান, শেখ ফজলে নূর তাপস, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার এবং আবদুস সাত্তার ভূঞা অংশ নেন।