X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

এডিস মশা খুঁজে পাচ্ছে না আইইডিসিআর!

শাহেদ শফিক
৩১ জুলাই ২০১৯, ২৩:২২আপডেট : ০১ আগস্ট ২০১৯, ১০:০৩





এডিস মশা দেশজুড়ে ডেঙ্গু জ্বর ছড়িয়ে পড়লেও এডিস মশা খুঁজে পাচ্ছে না সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। প্রতিষ্ঠানটির কাছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) মশানিধনের ওষুধের গুণগত মান পরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠালেও এডিস মশা খুঁজে না পাওয়ায় ওষুধের ফল প্রকাশে বিলম্ব হচ্ছে। এ অবস্থায় ওষুধের গুণগত মান নিয়ে নিশ্চিত হতে পারছে না সংস্থটি। ডিএসসিসির ভাণ্ডার ও স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সম্প্রতি রাজধানী ঢাকাসহ দেশজুড়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ার পর মশানিধন কাজে ব্যবহৃত ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে গবেষকসহ নগরবাসীর মাধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি হয়। তাদের দাবি, সিটি করপোরেশনের ওষুধের কার্যকারিতা নেই। এ কারণে ডেঙ্গুর মহামারি রূপ নিতে পারে।

ডিএসসিসির মেয়র সাঈদ খোকনও দাবি করেন, ‘তাদের ব্যবহৃত ওষুধ শতভাগ অকার্যকর নয়। এর কিছু অংশ অকার্যকর। তবে, সেটিরও কার্যকারিতা রয়েছে। সন্দেহ সৃষ্টি হওয়ায় সংস্থাটি আইইডিসিআরের কাছে পুনরায় ওষুধ পরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠিয়েছেন। তাদের ফল পেলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে পাঠানো হবে। সেখান থেকে অনুমোদন পেলেই ওই ওষুধ ব্যবহার করা হবে।’

সিটি করপোরেশনের ওষুধ সংগ্রহকারী দফতর ভাণ্ডার বিভাগের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে আইইডিসিআর তাদের ওষুধের নমুনার ওপর যে পরীক্ষা করতো, সেটি শুধু কিউলেক্স মশার ওপর ভিত্তি করেই করা হতো। এডিস মশার পরীক্ষা করা হতো না। সে কারণে এবার তারা ওষুধের পরীক্ষা এডিস মশার ওপর ভিত্তি করেই করতে চান। সংস্থাটির কাছে গত সপ্তাহের শেষের দিকে নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হলেও এখন পর্যন্ত তারা সিটি করপোরেশনকে পরীক্ষার ফল দিতে পারেনি।

জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সহকারী ভাণ্ডার ও ক্রয় কর্মকর্তা লিয়াকত হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, গত সপ্তাহের শেষের দিকে আমরা আইইডিসিআরের কাছে ওষুধ পাঠিয়েছি। তারা এখনও আমাদের ফল দেয়নি। সে কারণে ওষুধের গুণগত মান নিয়ে এখনও সন্দেহ কেটে উঠতে পারছি না। আমরা তাদের ফলের অপেক্ষায় আছি।

কী কারণে ফল পেতে দেরি হচ্ছে, সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আইইডিসিআর প্রতিবছর কিউলেক্স মশার ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদন বা ফল দিয়ে থাকে। কিন্তু এ বছর যেহেতু ডেঙ্গু রোগের প্রভাব বেশি। সে কারণে আমরা বলেছি এডিস মশার ফলও দিতে হবে। কিন্তু আইইডিসিআর আমাদের জানিয়েছে, তারা এডিশ মশা খুঁজে পাচ্ছে না। মশা সংগ্রহ করতে সময় লাগছে। এজন্য তারা আরও এক সপ্তাহ সময় চাইছে। প্রতিবেদন পাঠাতে পারছে না।

জানতে চাইলে সংস্থাটির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. শরীফ আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা আইইডিসিআরের কাছে নমুনা পাঠিয়েছি। তারা এখনও প্রতিবেদন দেননি।’

তবে ডিএসসিসির এই ওষুধ পরীক্ষার জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উদ্ভিদ সংরক্ষণ উইংয়ের কাছে পাঠানো হয় বলেও জানান এই কর্মকর্তা। তিনি দাবি করেন, ‘ওই দফতরের পরীক্ষায় তাদের ওষুধের গুণগত মান ভালো পাওয়া গেছে।’

বিষয়টি সম্পর্কে জানার জন্য একাধিকবার ফোন করলেও (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সাবরিনা ফ্লোরার বক্তব্য নেওয়া যায়নি। বিষয়টি জানিয়ে খুদেবার্তা পাঠালেও তিনি কোনও সাড়া দেননি।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এডিস মশার চেয়ে কিউল্যাক্স মশার প্রাণশক্তি অনেক বেশি। যে ওষুধ কিউল্যাক্স মশায় সফল সেটি দিয়ে এডিস মশা মরবেই। তবে উচিত হবে দুই মশা নিয়ে পরীক্ষা সম্পন্ন করা। এক্ষেত্রে দুই রকম ফল আসবে।’ তাতে সমস্যা নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

/এমএনএইচ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা