X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

এরশাদের মৃত্যুতে জাতীয় সংসদে শোক প্রস্তাব গৃহীত

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ২২:২১আপডেট : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ২২:৩০

হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ সাবেক রাষ্ট্রপতি জাতীয় পার্টি (জাপা)-এর হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে শোকপ্রাস্তব গৃহীত হয়েছে। এর আগে শোক প্রস্তাবের ওপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারি ও বিরোধী দলের (জাপা) বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য অংশ নেন। আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারি দলের কয়েকজন সদস্য ও বিএনপির একজন সংসদ সদস্য এরশাদের শাসন আমলের বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন। শোক প্রস্তাব গ্রহণের পর জাতীয় সংসদের রীতি অনুযায়ী চলমান সংসদের সদস্য এরশাদের মৃত্যুতে অধিবেশন মূলতবি ঘোষণা করা হয়।

সংসদের শোক প্রস্তাবে বলা হয়, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে দেশ একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ, সফল রাষ্ট্রনায়ক ও নিবেদিত সমাজসেবককে হারালো।

শোক প্রস্তাবে বলা হয়, এরশাদ ১৯৮৩–১৯৯০ সাল পর্যন্ত এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সেনাপ্রধান ও রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনকালে একাধিক সম্মানজনক পুরস্কারে ভূষিত হন।

একনাগাড়ে প্রায় ৮ বছর ক্ষমতায় থাকার সময় এরশাদ দেশে অসংখ্য উন্নয়ন ও সংস্কারমূলক কর্মকাণ্ড সাধন করেন। তার মধ্যে যুগান্তকারী কর্মকাণ্ড হচ্ছে উপজেলা ব্যবস্থা প্রবর্তন, সব মহকুমাকে জেলায় উন্নীত করা, ভূমি সংস্কার, ওষুদনীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন, পথকলি ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা, গুচ্ছগ্রাম কর্মসূচি বাস্তবায়ন, সবস্তরে বাংলা প্রচলন, পল্লীতে বিদ্যুৎ পৌঁছানো, গার্মেন্টস শিল্পের বিকাশ ইত্যাদি।

শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, ‘সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা এরশাদের মৃত্যুজনিত কারণে শোক প্রস্তাবে এই আলোচনা। দোষেগুণে মানুষ। সেগুলো আজকে আলোচনা না করাই ভালো। আমি তার আত্মার শান্তি কামনা করি।’

সরকারি দলের আরেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের পথ অনুসরণ করে জেনারেল এরশাদ বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছেন। এমনকী একটি তথাকথিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কর্নেল ফারুকের মতো ঘৃণিত খুনিকে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী করেছিলেন। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক, দুর্ভাগ্যজনক। যেটা আমি ভুলে যেতে চাই। আজকের দিনে এসব স্মরণ করতে চাই না। তবে, বলতে চাই, এ জন্য যে এটা রেকর্ডে থাকবে।’

বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, ‘মানুষ বেঁচে থাকে তার কর্মে। এরশাদ আকস্মিক একটি নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন। ৮/৯ বছরের শাসন আমলে দুটি নির্বাচন দিয়েছিলেন। যার কোনোটাই স্থায়িত্ব পায়নি। তিনি ২০১৪ সালে নির্বাচনে অংশ না নিয়েও নির্বাচিত হয়েছিলেন, এটা তিনি নিজেই বলেছিলেন।’

হারুনুর রশীদের বক্তব্যের জবাবে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘২০১৪ সালে এরশাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার হয়নি। ফলে, তিনি নির্বাচন করেননি, এটা ঠিক নয়। ক্যান্টনমেন্টে এক টাকায় বাড়ি নেওয়ার (বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নিয়েছিলেন) কথাও যদি বিএনপির সংসদ সদস্য উল্লেখ করতেন, তাহলে  খুশি হতাম।’  তিনি আরও বলেন, ‘১৯৯৬ সালে আমরা  আওয়ামী লীগকে সহায়তা করেছিলাম। তেমনি ৮৬ সালেও আওয়ামী লীগ এরশাদকে সহায়তা করেছিল। আমরা সবসময় একসূত্রে গাঁথার মতো রাজনৈতিক দল হিসেবে গণতান্ত্রিকভাবে চলেছি। একটি গণতান্ত্রিক সরকারের বিরোধীদলীয় নেতার পদে থেকে তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন।’

রওশন এরশাদ তার বক্তব্যে এরশাদের ভুলের জন্য সবার কাছে  ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি দোয়া চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘তার ভুল ক্ষমা করে দেবেন। তিনি যে কতটা জনপ্রিয় ছিলেন, মৃত্যুর পর তা বোঝা গেছে।’

শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনার সময় জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদেরও তার ভাইয়ের পক্ষ থেকে সবার কাছে ক্ষমা চান। তিনি বলেন, ‘রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানে এরশাদ ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলেন। ওইসময় অনেক বিরোধী দল তাতে সমর্থন দিয়েছিল। আদালত এরশাদের প্রথম শাসন আমলকে অবৈধ বলেছেন। তবে ওই সময়ের কর্মকাণ্ড গ্রহণ করেছেন। আর দ্বিতীয় শাসনামল নিয়ে আদালত নেতিবাচক কিছু বলেননি।’

এরশাদের কর্মকাণ্ডের সঠিক মূল্যায়ন করলে দেখা যাবে, তিনি গণতন্ত্র রক্ষা ও বিকাশে কাজ করেছেন বলেও জিএম কাদের মন্তব্য করেন।   

/ইএইচএস/এমএনএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল গ্র্যাজুয়েট হলেন ১৯ জ্যেষ্ঠ রাজনীতিক
ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল গ্র্যাজুয়েট হলেন ১৯ জ্যেষ্ঠ রাজনীতিক
সিনিয়র শিক্ষককে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি জুনিয়র শিক্ষকের
সিনিয়র শিক্ষককে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি জুনিয়র শিক্ষকের
দক্ষিণ লেবাননে ‘আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ’ নিচ্ছে ইসরায়েল
দক্ষিণ লেবাননে ‘আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ’ নিচ্ছে ইসরায়েল
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ৯ মাসে ৪৩৫৫ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ৯ মাসে ৪৩৫৫ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের গল্প বাংলাদেশের পর্দায়
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের গল্প বাংলাদেশের পর্দায়
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
তাপপ্রবাহের গেটওয়ে যশোর-চুয়াডাঙ্গা
তাপপ্রবাহের গেটওয়ে যশোর-চুয়াডাঙ্গা