X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা সিটির ভোট, সিগন্যালের অপেক্ষায় ইসি

এমরান হোসাইন শেখ
২৯ অক্টোবর ২০১৯, ২৩:৫৯আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০১৯, ২৩:৫৯

 ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন আয়োজনে সরকারের সিগন্যালের অপেক্ষায় রয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আপাতত নির্বাচন আয়োজনে দুটি বিকল্পকে সামনে রেখে এগুচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে অথবা মার্চের মাঝামাঝি সময় ভোট আয়োজনের চিন্তা চলছে। তবে মার্চের দিকে আয়োজন হলে ঢাকার দুই সিটির পাশাপাশি একই দিনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হবে। তবে, সবকিছু নির্ভর করছে সরকারের ওপর। সরকারের পক্ষ থেকে যে পরামর্শ আসবে সেটাকেই বেছে নেবে সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটি। নির্বাচন কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এসব বিষয়কে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) কমিশন সভা আহ্বান করা হয়েছে। ওই সময় অন্যান্য এজেন্ডার মধ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতির বিষয়টিও রয়েছে।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার দুই সিটির ভোট অনুষ্ঠানে ইসি ইতোমধ্যে ফাইলওয়ার্ক শুরু করেছে। বর্তমান করপোরেশনের প্রথম সভার হিসেব ধরে নির্বাচনের ক্ষণগনার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা শুরু করেছে। নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা, প্রয়োজনীয় নির্বাচনি সামগ্রীর পরিমাণ নির্ধারণ, তিন সিটি নিয়ে দায়ের হওয়া পাঁচটি রিটের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে তথ্য নেওয়াসহ আনুষাঙ্গিক কাজও শেষ করে আনছে কমিশন সচিবালয়। ইসি তাদের পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণেরও প্রস্তুতি শুরু করেছে।

সিটি করপোরেশন আইন অনুযায়ী মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান রয়েছে। আর করপোরেশনের প্রথম বৈঠক থেকে এর মেয়াদ গণনা শুরু হয়।

স্থানীয় সরকার বিভাগ ও নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রথম বৈঠক হয়েছিল ২০১৫ সালের ১৪ মে ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বৈঠক ১৭ মে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। অপরদিকে, এর প্রায় তিন মাস পরে ৬ আগস্ট অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশেনের প্রথম বৈঠক। সে হিসেবে এ বছর ১৭ নভেম্বর ঢাকা উত্তর ও ২০ নভেম্বর ঢাকা দক্ষিণ এবং আগামী বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের উপযোগী হবে।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ডিসেম্বরে ভোট অনুষ্ঠানে তারা আগেই সরকারের থেকে গ্রিন সিগন্যাল পেয়েছিল। সেই হিসেবে ডিসেম্বরের একেবারে শেষদিকে ভোটগ্রহণের পরিকল্পনাও ছিল ইসির। কিন্তু এরই মধ্যে ডিসেম্বরের ২০ ও ২১ তারিখে সরকারি দল আওয়ামী লীগ তাদের কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেওয়ায় ইসির পরিকল্পনায় ছেদ পড়েছে। সরকারি দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ইতোমধ্যে ঢাকা সিটি নির্বাচন কিছুটা পেছানোর ইঙ্গিতও দিয়েছেন। সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছিলেন, তাদের সম্মেলন ডিসেম্বরে হলে সিটি নির্বাচন কিছুটা পেছানো হবে।

গত ২৩ অক্টোবর ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের এক অনুষ্ঠানে কাদের বলেন, নির্বাচন কমিশন আগামী বছরের প্রথম দিকে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের চিন্তা-ভাবনা চলছে, কাজেই বেশি দিন বাকি নেই। সিটি করপোরেশন নির্বাচনেরও একটা প্রস্তুতি নিতে হবে। সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে কমিশনের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও তিনি এর আগে জানিয়েছিলেন।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, তারা ডিসেম্বরের একেবারে শেষ দিকে বা জানুয়ারি মাসের কোনও এক সময় ভোট আয়োজনের চিন্তা করছে। সরকারের তরফ থেকেও জানুয়ারি মাসে ভোটগ্রহণের প্রতি সম্মতি রয়েছে বলেও একাধিক সূত্রে জানা গেছে। তবে, নতুন ভোটার তালিকা প্রকাশ নিয়ে ভোটে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা থাকলেও ফেব্রুয়ারি মাসকে বাদ দিয়ে তা মার্চের দিকে যাবে। এক্ষেত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী (১৭ মার্চ) শুরুর আগেই ভোট সম্পন্ন করার চেষ্টা করা হবে।

ইসির একাধিক কর্মকর্তা জানান, ডিসেম্বরের শেষ বা জানুয়ারির শুরুতে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হতে পারে। আর মার্চে চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন হতে পারে। তবে বিষয়টি সরকারের সিগন্যালের ওপর নির্ভর করছে বলে জানান তারা।

তারা আরও বলেন, জানুয়ারিতে খসড়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ এবং ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এসময়ে নির্বাচন করলে জটিলতা দেখা দিতে পারে।

প্রসঙ্গত: নির্বাচন কমিশন তার সাংবিধানিক ক্ষমতা বলে একক সিদ্ধান্তে রাষ্ট্রপতি ও সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করলেও স্থানীয় সরকার পরিষদের নির্বাচনগুলো করে সরকারের অনুরোধে। স্থানীয় সরকারের কোনও প্রতিষ্ঠান নির্বাচন উপযোগী হলে সরকারের স্থানীয় সরকার বিভাগ ভোট অনুষ্ঠানের অনুরোধ জানিয়ে ইসিতে চিঠি দেয়। এরই প্রেক্ষিতে কমিশন ভোটের আয়োজন করে। কমিশনের কর্মকর্তারা মনে করেন, বৃহস্পতিবার তাদের কমিশন সভার আগে সরকারের তরফ থেকে ভোট অনুষ্ঠানের সময়ের বিষয়ে তারা ইঙ্গিত পাবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার কমিশন সভা ডাকা হয়েছে। ওই সভার এজেন্ডায় তিন সিটি নির্বাচন নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে। সেখানে যে সিদ্ধান্ত আসবে তা বাস্তবায়নে কমিশন সচিবালয় কাজ করবে।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবারের কমিশন সভায় তিন সিটির ভোট ছাড়াও জাতীয় সংসদের নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০১৯ এর খসড়া পুনর্বিবেচনা, গণপ্রতিনিধিত্ব আইনের খসড়া চূড়ান্তকরণ, উপজেলা পরিষদের সংরক্ষিত সদস্য পদে নির্বাচন, স্থানীয় সরকারের অন্যান্য নির্বাচন, জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য গোপন বিষয়ক নির্দেশনা এবং বর্তমান কমিশনের কার্যক্রম নিয়ে প্রতিবেদন ও প্রামাণ্য চিত্র তৈরি করার বিষয়টিও রয়েছে।

/টিটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
পিএসজির অপেক্ষা বাড়িয়ে দিলো মোনাকো
পিএসজির অপেক্ষা বাড়িয়ে দিলো মোনাকো
ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার মোহনায় শতাধিক পাইলট তিমি আটক
ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার মোহনায় শতাধিক পাইলট তিমি আটক
যুদ্ধ কোনও সমাধান আনতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী
যুদ্ধ কোনও সমাধান আনতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী
শপথ নিলেন আপিল বিভাগের নতুন তিন বিচারপতি
শপথ নিলেন আপিল বিভাগের নতুন তিন বিচারপতি
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
আপিল বিভাগে নিয়োগ পেলেন তিন বিচারপতি
আপিল বিভাগে নিয়োগ পেলেন তিন বিচারপতি