আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধিসহ দলীয় নেতাকর্মীদের ঘূর্ণিঝড় বুলবুল-এ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত ও দুর্গত মানুষকে দেওয়া সরকারের সব ধরনের সহযোগিতা এবং সহায়তা যেন যথাসময়ে তাদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয় সেই কাজটি সঠিকভাবে তদারকি করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। এ কাজে কোনও অবহেলা, অনিয়ম বরদাশত করা হবে না বলেও সতর্ক করেন প্রধানমন্ত্রী। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে যতদিন সময় লাগবে, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে ততদিন সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
সোমবার (১১ নভেম্বর) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক শুরুর আগে অনির্ধারিত আলোচনায় এ বিষয়ে নির্দেশনা দেন তিনি। মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন দুজন সিনিয়র মন্ত্রী বৈঠক শেষে বাংলা ট্রিবিউনকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
সূত্র জানায়, সোমবারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচ্যসূচি কম থাকায় অনেকটা সময়জুড়ে প্রধানমন্ত্রী ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এবং এর প্রভাবে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।
নির্ভরযোগ্য ওই সূত্র জানায়, মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতেই আলোচ্যসূচি নিয়ে আলোচনার আগে প্রধানমন্ত্রী ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে সারাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা শুরু করেন। এ সময় তিনি যেসব জেলার ওপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল বয়ে গেছে সেসব জেলার মন্ত্রীদের কাছে সর্বশেষ পরিস্থিতি জানতে চান। এরপর তিনি নিজে বুলবুলের আঘাত হানা সম্পর্কে নিজস্ব পর্যবেক্ষণ উপস্থাপন করেন। সঠিকভাবে এ ঝড় মোকাবিলা করায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী এবং সুষ্ঠুভাবে সরকারের আগামী কর্মসূচি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় আগে থেকে জনসাধারণকে সতর্ক করা, কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং সাধারণ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার কারণেই এবার ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে আগামীতে যেকোনও দুর্যোগ মোকাবিলায় আরও সক্ষমতা নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বুলবুলের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ জরুরি ভিত্তিতে মেরামত বা সংস্কার করারও নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মানুষ যাতে আস্থার সঙ্গে আগ্রহ নিয়ে আসতে পারে, এবারের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সে বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণেরও নির্দেশ দেন তিনি। মানুষের পাশাপাশি তাদের গৃহপালিত পশু-পাখি, বিশেষ করে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগিসহ প্রয়োজনীয় ও দামি জিনিসপত্র সঙ্গে করে নিয়ে আসতে পারে, তারও ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেন। দুর্যোগের সময় সংসারের দামি জিনিসপত্র ও গরু-ছাগল হাঁস-মুরগি রেখে সাধারণ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে চায় না বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।