X
রবিবার, ১২ মে ২০২৪
২৯ বৈশাখ ১৪৩১

এবারের বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ফোরাম বৈঠকে যা থাকছে

শফিকুল ইসলাম
২৩ নভেম্বর ২০১৯, ২১:৫৬আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০১৯, ২১:৫৯

এবারের বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ফোরাম বৈঠকে যা থাকছে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ফোরামের (বিডিএফ) বৈঠক নিয়ে জটিলতা কেটে গেছে। সব কিছু ঠিক থাকলে নতুন বছরের ২২ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে এই বৈঠক। দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিতব্য এই বৈঠক শেষ হবে ২৩ জানুয়ারি। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকটির অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবারের বৈঠকেই উন্নয়ন সহযোগীদের বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে দেশের ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার ওপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

উল্লেখ্য, বিডিএফের বৈঠক ধারাবাহিকভাবেই প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করে আসছেন। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না।  জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়গুলোকে এগিয়ে নিতে অংশীদারিত্ব বজায় রাখার বিষয়ে আলোচনা করতে গবেষক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সরকারি নীতিনির্ধারক ও সহযোগী উন্নয়ন সংস্থাগুলোর নেতারা দুই দিনের এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন।

সূত্র জানায়, এবারের বৈঠকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সাফল্যের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হবে। বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার কমিয়ে আনার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনায় স্থান পাবে। সে ক্ষেত্রে দারিদ্র্যের হার ২২ দশমিক ৪ শতাংশে নামিয়ে আনার বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে। যেখানে ১৯৯১ সালে ছিল ৫৬ দশমিক ৭ শতাংশ। বাংলাদেশে অতি দারিদ্র্যের হারও ৭ দশমিক ৯ শতাংশ কমেছে। ২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দারিদ্র্যের হার ১৪ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার কথাও উপস্থাপন করা হবে বৈঠকে।

এই বৈঠকে বাংলাদেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন  (জিডিপি)-এর ভিত্তিতে বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের ৪৪তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ আর ক্রয়ক্ষমতার ভিত্তিতে এর অবস্থান ৩২তম। আন্তর্জাতিক আর্থিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০৩০ ও ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশ জিডিপি ও ক্রয় ক্ষমতার ভিত্তিতে বিশ্বের যথাক্রমে ২৮ ও ২৩তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে স্থান করে নিতে সক্ষমতা অর্জনের বিষয়টি তুলে ধরা হবে।

উন্নয়ন সহযোগীদের আমন্ত্রণ জানানোসহ সব ধরনের কাজ সমন্বয় করছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। ইতোপূর্বে বৈঠক অনুষ্ঠানের তারিখ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা কেটে যাওয়ায় উন্নয়ন সহযোগী দেশের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উন্নয়ন সহযোগীদের সদর দফতরের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানোর কাজ শুরু করেছে ইআরডি। 

জানা গেছে, বিডিএফ-২০২০ সালে বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা ছাড়াও উন্নয়ন সহযোগী দেশের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উন্নয়ন সহযোগীদের সদর দফতর থেকে উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

সূত্র আরও জানিয়েছে, বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আন্তর্জাতিক সহযোগী দেশ, সংস্থাগুলোসহ ব্যক্তিখাতের অংশীদারিত্বকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে। এবারের বৈঠকের মূল বিষয় হচ্ছে, পরিবেশের পরিবর্তন ও জলবায়ুসংক্রান্ত হুমকি মোকাবিলা করা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বড় চ্যালেঞ্জ অর্থ সরবরাহ নিশ্চিত করা। এ জন্য এবারের বিডিএফ বৈঠকে উন্নত দেশগুলোকে আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হবে।

একইসঙ্গে বিশ্বের বুকে একটি গতিশীল অর্থনীতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার প্রত্যয় ও উপকরণ বাংলাদেশের রয়েছে। বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের এ বৈঠক দারিদ্র্যমুক্ত, ক্ষুধামুক্ত সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য যৌথ কর্মপন্থা নির্ধারণ ও প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এবারের বৈঠকে ঢাকা শহরে টেকসই পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে বড় বাসের সংখ্যা বাড়ানোসহ র‌্যাপিড মাস ট্রানজিট, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও মাস ট্রানজিট সিস্টেমের বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে। এর বাইরেও বেসরকারি খাত, বেসরকারি সংগঠনগুলোকে হাউজিং ও অন্যান্য সার্ভিস ডেলিভারিতে অংশ নিতে উৎসাহিত করার বিষয়টিও আলোচনায় থাকবে।

সরকারের পক্ষ থেকে বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে সরকারি উদ্যোগের অংশ হিসেবে প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগের জন্য দেশের বিভিন্ন এলাকায় ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে। যেখানে আরও বেশি বৈদেশিক বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রম সরকার বাস্তবায়ন করছে। একইসঙ্গে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাওয়ার বিষয়টিও আলোচনায় স্থান পাবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘সব কিছু ঠিক থাকলে নির্ধারিত সময়েই বিডিএফ বৈঠক  অনুষ্ঠিত হবে। এখন বিডিএফ বৈঠকগুলোর মূল লক্ষ্য অতীতের মতো শুধুই সহায়তা পাওয়া নয়, এ বৈঠকগুলোয় উন্নয়ন সহযোগী দেশ ও সংস্থার প্রতিনিধিরাও আগ্রহের সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সফলতা অর্জনের গল্প শুনতে আসেন। তারা বাংলাদেশের এই সফলতার অংশীদার হতে চান, সেই আগ্রহ ব্যক্ত করতে আসেন। তাই বৈঠকে সরকারের সফলতাগুলো তুলে ধরা হবে গুরুত্বের সঙ্গে।

জানতে চাইলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘বিডিএফ মিটিংগুলো এখন আর আগের মতো আকর্ষণ করে না। কারণ, আগের তুলনায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বেড়েছে। সাহায্যনির্ভরতা কমেছে। তাই বাংলাদেশের প্রতি উন্নয়ন সহযোগী দেশ ও সংস্থাগুলোর পক্ষে আগের মনোভাব এখন আর কাজ করে না। তারা এখন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পরিকল্পনার কথা জানতে আসে। এখানে সরকারের সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অংশীদার হতে চায়।’ তারা অংশীদার হওয়ার আগ্রহের কথা জানাতে আসেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

 

/এমএনএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
পাসের হার কত?
এসএসসি ২০২৪পাসের হার কত?
ইন্দোনেশিয়ায় বাস দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত
ইন্দোনেশিয়ায় বাস দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত
অস্ত্র মামলায়  ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ জাকির খানের জামিন বহাল
অস্ত্র মামলায় ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ জাকির খানের জামিন বহাল
খুব কষ্ট হচ্ছে মামনি: পূজা চেরী
মা দিবসখুব কষ্ট হচ্ছে মামনি: পূজা চেরী
সর্বাধিক পঠিত
ইএফডিতে নজর দিয়ে হিরো হতে পারেন এনবিআরের চেয়ারম্যান
ইএফডিতে নজর দিয়ে হিরো হতে পারেন এনবিআরের চেয়ারম্যান
এসএসসি পরীক্ষার ফল জানা যাবে যেভাবে
এসএসসি পরীক্ষার ফল জানা যাবে যেভাবে
টাকা দিয়ে কেনা সনদের তালিকা পেয়েছি: ডিবি হারুন
টাকা দিয়ে কেনা সনদের তালিকা পেয়েছি: ডিবি হারুন
সোনার দাম আরও বাড়লো
সোনার দাম আরও বাড়লো
হঠাৎ বাংলাদেশ ছেড়ে বিদেশে কেন যাচ্ছেন তারা?
হঠাৎ বাংলাদেশ ছেড়ে বিদেশে কেন যাচ্ছেন তারা?