প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের এপ্রিলে ব্রুনাই সফর করেছেন। এর এক বছরের মধ্যে ফিরতি সফর হিসাবে ওই দেশের সুলতান হাসানাল বলকিয়ার ঢাকা আসা নিয়ে আলোচনা করছে দুই দেশ। ইতোমধ্যে এপ্রিলের ১০ থেকে ২০ এর মধ্যে সফরের একটি তারিখ নির্ধারণের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে ওই সময়ের কোনও একদিন সুলতান ঢাকা আসবেন।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘এ সফরটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্রুনাইয়ের সঙ্গে অর্থনেতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির পাশাপাশি নৈতিক অভিবাসনের একটি জোরালো পদ্ধতি তৈরি করতে চায় বাংলাদেশ।’
দুই দেশের মধ্যে দ্বৈতকর পরিহার, বিনিয়োগ সুরক্ষা, নৈতিক অভিবাসন, সরাসরি বিমান যোগাযোগসহ আরও কয়েকটি চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে। আশা করা হচ্ছে সুলতানের সফরের সময়ে এগুলো নিষ্পত্তি হবে বলে তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, ‘গত এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময়ে বাংলাদেশের কৃষিখাতে বিশেষ করে হালাল খাবারে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছিল ব্রুনাই। বৈশ্বিক হালাল খাবার মার্কেটে বড় আকারে রফতানি করে ওই দেশটি। বাংলাদেশের বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলে তারা এই খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী।’
জ্বালানি
তরল জ্বালানি (লিকুইফায়েড ন্যাচারাল) গ্যাসের বড় রিজার্ভ রয়েছে ব্রুনাইয়ে এবং বাংলাদেশে এলএনজি রফতানি করতে চায় তারা।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক আছে দুই দেশের মধ্যে কিন্তু আলোচনা খুব বেশি অগ্রসর হয়নি।’
এলএনজি আমদানির জন্য কাতারের সঙ্গে চুক্তি আছে বাংলাদেশের এবং বিভিন্ন উৎস থেকে আমদানির ব্যবস্থা রাখতে চায় সরকার বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, ‘একটি দেশের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে বিভিন্ন উৎসের সঙ্গে আমরা সম্পর্ক করতে চাই এবং এর মাধ্যমে যেখান থেকে সুবিধা হবে সেখান থেকে আমরা আমদানি করতে পারবো।’
এছাড়া সুমদ্রে গ্যাস ও তেল সম্পদ খোঁজার বিশেষ দক্ষতা আছে ব্রুনাইয়ের এবং আমরা সেটি ব্যবহার করা যায় কিনা সেটি নিয়ে আলোচনা করছি বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
সরাসরি বিমান যোগাযোগ
উভয় দেশ একমত- সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে হলে মানুষে মানুষে যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে হবে এবং এজন্য দরকার আকাশ পথে সরাসরি যোগাযোগ।
আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘সরাসরি বিমান যোগাযোগের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময়ে আলোচনা হয়েছিল এবং আমরা একমত হয়েছিলাম এ বিষয়ে পরবর্তীতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
একটি খসড়া তৈরি করা আছে এবং উভয়পক্ষ রাজি থাকলে সুলতানের সফরের সময়ে এটি স্বাক্ষর হতে পারে বলে তিনি জানান।
নৈতিক অভিবাসন
ব্রুনাইয়ে প্রায় ২০,০০০ এর মতো বাংলাদেশি কাজ করছে এবং সেখানে নার্সের অনেক চাহিদা আছে।
এ বিষয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতে অভিবাসনের জন্য আমরা আলোচনা করেছি এবং এখানে যে বিষয়টি জরুরি সেটি হচ্ছে ইংরেজিতে দক্ষতা এবং নার্স ট্রেনিং।’
তিনি বলেন, ‘তাদের চাহিদা অনুযায়ী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যদি নার্স সরবরাহ করতে পারে তবে ব্রুনাইয়ে বড় একটি বাজার আছে এবং সেখান থেকে রেমিটেন্সের পরিমাণও বেড়ে যাবে।’