অনূর্ধব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতকে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করায় বাংলাদেশ দলকে গণসংবর্ধনা দেবে সরকার। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই সংবর্ধনা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘সময় ও তারিখ এখনও নির্ধারণ করা হয়নি, তবে সুবিধাজনক সময়ে এই সংবর্ধনা দেওয়া হবে। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদের মিটিংয়ে অনির্ধারিত আলোচনায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশ স্বাধীনের পর ক্রিকেটে বাংলাদেশের এই বিশ্ব জয় একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এটি একটি ঐতিহাসিক বিজয়। এজন্য বাংলাদেশ তরুণ দলকে অভিনন্দন জানাই। এই বিশ্ব জয় আমাদের প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি যে, এই জয়ের হাত ধরে বড়রাও একদিন বিশ্বকাপ জয় করবে।’
গ্রামগঞ্জে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেসব খেলোয়াড় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে, তাদেরকে তুলে আনার কোনও উদ্যোগ সরকারের আছে কিনা, জানতে চাইলে সাংবাদিকদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক আকবর আলীর বাড়ি কুড়িগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। নিবিড় পর্যবেক্ষণ ছিল বলেই ক্রিকেট বোর্ড সেখান থেকে তাকে তুলে এনেছে। ৬ উইকেট হারানোর পর আমরা তো আশাই ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু আকবরের অধিনায়কত্ব সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে। এ কারণেই আমাদের টিম চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।’
ক্রিকেটের এই বিজয়ে খেলোয়াড়রা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে উল্লাস করেছে। আমাদের রাজনীতিতে সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে এই ধরনের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার কালচার কবে হবে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘রাজনীতিতে প্রতিপক্ষ থাকবে। কিন্তু সেটি কখনও যেন আক্রমণাত্মক না হয়। রাজনীতিরও একটি ভাষা আছে। আমরা ডিভাইস হয়ে যাচ্ছি। এটি পরিহার করা উচিত।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আক্রমণের ভাষা পরিহার করা উচিত। ড. কামাল হোসেনের মতো একজন বিজ্ঞ মানুষ যখন খেই হারিয়ে বলেন, “সরকারকে লাথি মেরে নামাতে হবে”, তার মুখে এ ধরনের ভাষা শোভনীয় নয়। এটি পরিহার করা উচিত। অশালীন অমার্জিত ভাষা ব্যবহার করা ঠিক নয়। যৌক্তিক ভাষা আমরা যেন ব্যবহার করি। রাজনীতিতে মতান্তর থাকবে। মতান্তর যেন মনান্তর না হয়। মনান্তর পরিহার করতে পারলে রাজনীতিতে গুণগত মান বাড়বে।’
ক্রিকেটারদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সব রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে কিনা, প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনা অনুষ্ঠানে সব রাজনৈতিক দলকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আমাদের আমন্ত্রণের সাড়া দিয়ে ড. কামাল হোসেন, কাদের সিদ্দিকী, এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী উপস্থিত থাকলেও বিএনপির কেউ আসেননি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে কোকো যখন মারা গেলো, সন্তানহারা মাকে সান্ত্বনা দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গিয়েছিলেন। কিন্তু ঘরের দরজায় তালা, গেটে তালা দিয়ে সব বন্ধ রাখা হয়েছিল। সব তালাবদ্ধ ছিল। অমঙ্গলীয় দেয়াল তুলে ফেলতে হবে। রাজনীতিতে সৌজন্যবোধ হারিয়ে যাচ্ছে। সবকিছুই যেন মানি না, মানবো না সংস্কৃতির দিকে যাচ্ছে। এই সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির অবস্থা দেউলিয়াপনার অবস্থায় নিপতিত হয়েছে। নালিশই তাদের একমাত্র পুঁজি। তাদের কোনও অভিযোগ থাকলে সেই অভিযোগ বা নালিশ তারা করতে পারে জনগণের কাছে। বিচারক হতে পারে জনগণ। কিন্তু তা না করে বিদেশিদের কাছে নালিশ করে বিএনপি প্রমাণ করেছে, দেশের জনগণ ও ভোটারদের প্রতি তাদের কোনও আস্থা নেই। জনগণের প্রতি ভরসা থাকলে তারা এতো নালিশ করতো না।’