X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

জানুয়ারি ১৯৭২: জহির রায়হানকে খুঁজতে গিয়ে শহীদ হন আলীম

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৯ জানুয়ারি ২০১৬, ০১:৩৭আপডেট : ১৯ জানুয়ারি ২০১৬, ০২:০৮

জহির রায়হান ও কাজী আলীম 'পুরো বাংলাদেশ যখন স্বাধীনতার আনন্দ, তখন মিরপুর লাশের নগরী। আমরা ভয়ে পালিয়ে আসতে চাইছি কিন্তু এলাকা ছেড়ে বের হতেও পারা যাচ্ছে না। সে দৃশ্য যারা চোখে দেখেননি তারা বুঝবেন না। রক্ত আর রক্ত।’ কথাগুলো বলছিলেন, শহীদ কাজী আলীমের মেয়ে আলম আরা। পুলিশ কর্মকর্তা শহীদ কাজী আলীম মিরপুর মুক্ত করতে গিয়ে নিহত হন। তিনি আরও বলেন, মা জানতেন জহির রায়হানকে খুঁজতে যাচ্ছেন বাবা।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের পরেও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর একটি অংশ, অবাঙালি ও তাদের এ দেশীয় দোসররা মিরপুরে অৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছিল। ওই সময় জহির রায়হান বের হন তার ভাই শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সারের খোঁজে। এরপর তিনিও ফিরে আসেননি।
আব্দুল আলীম ১৯৭১ সালের ২০ ডিসেম্বর মিরপুর থানায় সেকেন্ড অফিসার হিসেবে যোগ দেন।এরইমধ্যে জহির রায়হান নিঁখোজ হলে সরকারের আদেশে ১২নম্বর সেকশনে তদন্ত করতে যান আব্দুল আলীম, ইন্সপেক্টর ওহাহেদসহ আরও অনেকে। বাড়িতে-বাড়িতে তল্লাশি শুরু করলে বিপুলসংখ্যক অস্ত্র নিয়ে স্বাধীনতাবিরোধীরা আক্রমণ করেন। এরপর তিনি আর ফেরেননি। বুক পকেটে থাকা মেয়ের টেলিগ্রাম দেখে তাকে শনাক্ত করা হয়।

শহীদ কাজী আলীম কিন্তু যাকে খুঁজতে গিয়ে শহীদ হলেন তারা, সেই জহির রায়হান কোথায়? অনেক শহীদ মুক্তিযোদ্ধার ভেতর থেকে ফিরে আসা মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেনের কাছ থেকে জানা যায়, অভিযান পরিচালনার জন্য ১২ নম্বর সেকশনে ৩০ জানুয়ারি ১৯৭২ কারফিউ ছিল। শহীদুল্লাহ কায়সারকে খুঁজতে জহির রায়হান সেদিন সেখানে যান, যদিও সিভিলিয়ানদের যাওয়ার কোনও সুযোগ ছিল না। অস্ত্র উদ্ধারের অভিযানে যখন অতর্কিতে হামলার শিকার হতে হয় ঠিক তখনই একবার দেখেছি বুলেটবিদ্ধ হয়ে পড়ে যাচ্ছেন জহির রায়হান।পাশে একের পর এক সহযোদ্ধাদের লুটিয়ে পড়তে দেখেছেন তিনি। এরমধ্যে জহির রায়হানকে ঠিকই চিনে নিয়েছেন তিনি।
শহীদ কাজী আলীমের মেয়ে বলেন, মিরপুর তখনও অবরুদ্ধ ছিল। আমরা পালিয়ে এসেছিলাম। অবরুদ্ধ মিরপুরকে মুক্ত করতে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী, পুলিশসহ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা কয়েকবার অপারেশন পরিচালনা করেও ব্যর্থ হন।  আমার মা জানতেন বাবা জহির রায়হানকে খুঁজতে যাচ্ছেন।
৩০ জানুয়ারীর যে অভিযানের কথা জানা যায়, সে দিনের আগের দিন ২৯ জানুয়ারি শহীদুল হক মামার নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা একযোগে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করেছিল। শহীদুল হক মামা শাহবাগ আন্দোলনের সময় প্রতিবেদককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ইতিহাস অনেক কিছু মিস করে গেছে ধীরে-ধীরে। সেদিন মিরপুরে আত্মগোপনকারী পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, তাদের এ দেশীয় দোসররা সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে আমাদের ওপর আঘাত করেছিলেন। সে দৃশ্য অসহনীয়। জহির রায়হান আগে থেকেই তার ভাইকে খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন। নানা তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করছিলেন। জহির রায়হান ৩০ তারিখের অপারেশনে ছিলেন, জোর করে গিয়েছিলেন তিনি।কিন্তু সেখানকার অবস্থা এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছিল যে, কেউ কাউকে খুঁজে দেখবে, সে পরিস্থিতি ছিল না।
/এমএনএইচ/আপ-এনএস/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
নির্দেশের পরও হল ত্যাগ করছেন না চুয়েট শিক্ষার্থীরা, বাসে আগুন
নির্দেশের পরও হল ত্যাগ করছেন না চুয়েট শিক্ষার্থীরা, বাসে আগুন
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ
এক কোরাল ৩৩ হাজার টাকায় বিক্রি
এক কোরাল ৩৩ হাজার টাকায় বিক্রি
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা