বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী ফালুর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রায় ১৮ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) এই অনুমোদন দেয় দুদক।
দুদক জানায়, অধিকতর তদন্তে মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী ফালুর স্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৩৫ কোটি ৭৮ লাখ ১৩ হাজার ৫৩৮ টাকা এবং অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ১১১ কোটি ৩৩ লাখ ৮১ হাজার ৩০০ টাকা। ২০০৭-২০০৮ করবর্ষ থেকে ২০১৬-১৭ করবর্ষ পর্যন্ত মোট ব্যয় ২১ কোটি ৫ লাখ ২৯ হাজার টাকাসহ তার মোট সম্পদ পাওয়া যায় ১৬৮ কোটি ১৭ লাখ ২৩ হাজার ৮৩৮ টাকা।
দুদকের সম্পূরক চার্জশিটে বলা হয়েছে, ২০০৭-২০০৮ করবর্ষ থেকে ২০১৬-১৭ করবর্ষ পর্যন্ত তার আয় ১০২ কোটি ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৬৪৩ টাকা। তার প্রদর্শিত দায় বা ঋণ গ্রহণ ৬৫ কোটি ৩৮ লাখ ৭০ হাজার ৭৮০ টাকাসহ মোট আয় ১৬৭ কোটি ৪২ লাখ ৫৮ হাজার ৪২৩ টাকা। আয়ের উৎস দেখান মৎস চাষ ও গরুর খামার। সেখান থেকে আয়ের ৩ কোটি ৫৭ লাখ ২০ হাজার ১০ টাকা। অন্যান্য খাত থেকে তিন লাখ ৭ হাজার ৫৮৩ টাকা। অপ্রদর্শিত আয় ৭৬ কোটি ৪০ লাখ ৮০৫ টাকা। রোজা প্রোপ্রার্টিজ লিমিটেড কোম্পানি থেকে ঋণের বিপরীতে প্রদর্শিত আয় ১৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। মোট ১৭ কোটি ৮৬ লাখ ৬৮ হাজার ৩৯৮ টাকার আয়ের উৎসের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে হিসাব বা রেকর্ডপত্র প্রদর্শন করতে সক্ষম হননি— যা তার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ মর্মে তদন্তকালে প্রতীয়মান হয়।
মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী ফালুর অর্জিত ১৭ কোটি ৮৬ লাখ ৬৮ হাজার ৩৯৮ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও তা নিজ ভোগ দখলে রেখে এবং মিথ্যা তথ্য দিয়ে সম্পদ বিবরণী দাখিল করার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিলের অনুমোদন দেন দুদক।
দুদকের উপ-পরিচালক মো. মশিউর রহমান জানান, ২০১৭ সালের ১৫ মে মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী ফালুর বিরুদ্ধে দুদক আইনে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল। এর আগে তদন্ত শেষে মামলাটির চার্জশিট দেওয়া হলেও পরে আবার অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন আদালত। আদালতের আদেশ অনুযায়ী, দুদক মশিউর রহমানকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করেন। অধিকতর তদন্ত শেষে তিনি অনুমোদন চেয়ে প্রতিবেদন দাখিল করলে কমিশন সম্পূরক চার্জশি দাখিলের অনুমোদন দেয়। আগামী যেকোনও কার্যদিবসে আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করা হবে বলে জানান তিনি।