রাজধানীর শ্যামপুর, জিরানি, মান্ডা ও কালুনগর খাল পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু হয়েছে। খালুগুলোর নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য ৮৯৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এর মধ্যে ৮ দশমিক ৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মান্ডা খালের জন্য ব্যয় হবে ৩৯৭ কোটি টাকা। এই সবুজায়নের মাধ্যমে ঢাকা শহর আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উন্নীত হতে পারবে বলে জানান ডিএসসিসির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার (৮ মে) সকালে মুগদা এলাকার শাপলা সেতু-সংলগ্ন মান্ডা খাল পুনরুদ্ধার ও নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টির কাজ মাধ্যমে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন ডিএসসিসির মেয়র।
মান্ডা খালের প্রকল্পকাজের মধ্যে রয়েছে, পুনরুদ্ধার ও নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টির আওতায় ভূমি উন্নয়ন, খালের বর্জ্য ও পলি অপসারণ, বাইসাইকেল লেন ও অ্যাপ্রোচ রোড নির্মাণ, তিনটি এম্পিথিয়েটার নির্মাণ, ব্যায়াম করার সেড-ফোয়ারা-ওয়াকওয়ে-ঘাট নির্মাণ, ৩২টি পথচারী পারাপার সেতু ও ছয়টি গাড়ি চলাচল সেতু নির্মাণ, বসার বেঞ্চ নির্মাণ, বাচ্চাদের খেলার জায়গা-ফুডকোর্ট ও কফিশপ নির্মাণ, আরসিসি রিটেনিং ওয়াল ও সুরক্ষা ঢাল নির্মাণ, দৃষ্টিনন্দন সুরক্ষা বেষ্টনী ও পাবলিক টয়লেট নির্মাণ ইত্যাদি অনুষঙ্গ।
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে গণমাধ্যমকে মেয়র তাপস বলেন, প্রকল্পভুক্ত শ্যামপুর, জিরানি, মান্ডা ও কালুনগর খালের উভয় পাড়ে (উভয় পাড় মিলে মোট ৩৯ দশমিক ৬ কিমি দৈর্ঘ্য) বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। মান্ডা খালের পাড় দিয়ে প্রায় ৩৫ হাজার গাছ রোপণ করবো।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে ঢাকা শহরের জন্য যে সবুজায়ন বা বনায়নের প্রয়োজন, সেই মানদণ্ড আমরা পূরণ করতে পারিনি। এসব প্রকল্পের মাধ্যমে একটি সুন্দর ও নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি হবে। এর সঙ্গে শহরের জন্য সবুজায়ন ও বনায়নের যে কার্যক্রম, সেটা আরও ত্বরান্বিত হবে। প্রকল্পভুক্ত শ্যামপুর, জিরানি, মান্ডা ও খালুনগর খাল এবং আদি বুড়িগঙ্গার পাড় ঘেঁষে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে ইনশা আল্লাহ আমরা সবুজায়নের সেই আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উন্নীত হতে পারবো।
আগামী বছরের জুনের মধ্যে খালগুলো দৃশ্যমান হবে আশা করে তাপস বলেন, খালগুলো নিয়ে যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, তার মধ্যে মান্ডা খাল সবচেয়ে বড় (৮ দশমিক ৭ কিমি)। এরপর শ্যামপুর (৪ দশমিক ৭৮ কিমি), জিরানি (৩ দশমিক ৯ কিমি) এবং কালুনগর (২ দশমিক ৪ কিমি) খাল। সেই প্রেক্ষিতে আজ মান্ডা খাল পুনরুদ্ধার ও নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টির কাজ শুরু হচ্ছে। চলতি ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রকল্পের সবগুলো কাজ শুরু হয়ে যাবে। ডিসেম্বরের মধ্যে ঢাকাবাসী একটি দৃশ্যমান পরিবর্তন লক্ষ করবে এবং আগামী বছরের জুনে একটি আমূল পরিবর্তন আসবে। সেভাবেই আমাদের সব পরামর্শক, ঠিকাদার ও কর্মকর্তারা কাজ করছে।
পরে মেয়র পোস্তগোলা জাতীয় মহাশ্মশান উন্নয়নকাজের শুভ উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, ৭ নম্বর অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাক আহমেদ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খায়রুল বাকের, নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম জয়, মুগদা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মোশারফ হোসেন বাহার এবং কাউন্সিলরদের মধ্যে ৭১ নম্বর ওয়ার্ডের মো. খায়রুজ্জামান, ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের শফিকুল আলম শামীম, ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের মো. জিয়াউল হক, ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আকবর হোসেন, সংরক্ষিত আসনের নাসরিন আহমেদ ও সেলিনা খানসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।