গাজীপুরে আহ্ছানিয়া মিশন মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে ৭৫ শতাংশ রোগীই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। গত ২০ বছরে প্রতিষ্ঠানটিতে চিকিৎসাসেবা নিয়েছে ২ হাজার ৭৮৯ জন রোগী। এর মধ্যে মাদকাসক্ত ২ হাজার ১৪২ জন ও মানসিক সমস্যায় ৬৪৭ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত সুস্থতার হার ৭৫ শতাংশ। তবে এসব রোগীর মধ্যে ২৯ দশমিক ৮ শতাংশ ইয়াবা ও ৩৩ দশমিক ৮ শতাংশ গাঁজা সেবনকারী।
সংস্থাটি বলছে, দিন দিন গাঁজা ও ইয়াবা সেবনকারীর সংখ্যা বাড়ছে। পারিবারিকভাবে সচেতনতা বাড়ানো উচিত। মাদকাসক্তির লক্ষণ দেখামাত্রই সঠিক কাউন্সেলিং করা জরুরি।
আহ্ছানিয়া মিশনের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২ হাজার ৭৮৯ জন রোগীর মধ্যে ৮৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ চিকিৎসার মেয়াদ পূর্ণ করেছে, মেয়াদ পূর্ণ না করে চলে গেছে ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং বিভিন্ন কারণে ১ দশমিক ৫ শতাংশ রোগীকে স্থানান্তর করা হয়েছে এবং ২ দশমিক ২৯ শতাংশ রোগী বর্তমানে চিকিৎসারত আছে। চিকিৎসাসেবা গ্রহণকারীদের মধ্যে ২৯ দশমিক ৮ শতাংশ ইয়াবা, ৩৩ দশমিক ৮ শতাংশ গাঁজা, ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ ঘুমের ওষুধ, ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ হেরোইন, ১২ দশমিক ৬ শতাংশ অ্যালকোহল এবং ৪৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ একই সঙ্গে একাধিক মাদক গ্রহণকারী এবং বাকিরা অন্যান্য মানসিক রোগে আক্রান্ত ছিল।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) গাজীপুর আহ্ছানিয়া মিশন মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এসব তথ্য জানান ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ।
তিনি বলেন, গত ২০ বছরে কেন্দ্রটি মাদকদ্রব্যের ধ্বংসাত্মক প্রভাবের সঙ্গে লড়াইরত অগণিত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের জন্য বাতিঘর হয়ে উঠেছে। আমাদের সামগ্রিক চিকিৎসাপদ্ধতির মাধ্যমে শুধু প্রয়োজনীয় যত্ন ও চিকিৎসাসেবা প্রদান নয় বরং তাদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য শিক্ষা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রটি তিন ধরনের রোগী যেমন: মাদকদ্রব্য নির্ভরশীল, আচরণগত ও মানসিক সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তিদের ছয় মাসের চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকে। এ ছাড়া পূর্ণ মেয়াদ চিকিৎসা সম্পূর্ণকারী ক্লায়েন্টরা পরে রিলেপ্স করলে রিভিউ ক্লায়েন্ট হিসেবে তিন মাসের চিকিৎসাসেবা নিতে পারবে। যারা পূর্ণমেয়াদি চিকিৎসা গ্রহণ করে এখনও সুস্থ আছেন, তারা সেন্টার থেকে বছরে সর্বোচ্চ ১২ দিন বিনামূল্যে থাকা, খাওয়া ও কাউন্সেলিং সেবা পাচ্ছেন।
কেন্দ্রটি আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত প্রক্রিয়ায় চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকেন। চিকিৎসাপ্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ হলো ক্লায়েন্টের সমস্যাগুলো নিরূপণ ও ড্রাগ টেস্ট করা। এরপর ক্লায়েন্টের চিকিৎসা পরিকল্পনা করা হয়। ডিটক্সিফিকেশন বা নির্বিষকরণের মাধ্যমে ক্লায়েন্টের মূল চিকিৎসাপ্রক্রিয়া শুরু হয়।