জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর কলে স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের সিপাহীবাগ আইসক্রিম ফ্যাক্টরির গলি থেকে একটি অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার করে থানা-পুলিশ। নিহতের পরিচয় শনাক্তের পর এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তার চাচাতো ভাই মনির হোসেনকে (২৫) গ্রেফতার করা হয়েছে। নিহতের নাম হাবিবুর রহমান রুবেল (৩১)।
রুবেল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর গোপালপুর এলাকার মৃত আব্দুল ওহাবের ছেলে। তারা খিলগাঁও থানার উত্তর মেরাদিয়া পুরাতন কমিশনার রোড এলাকায় বসবাস করতেন। মনির সেলুন মালিক।
শনিবার (৪ মে) খিলগাঁওয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার (২ মে) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ৯৯৯ এর মাধ্যমে খবর পেয়ে খিলগাঁও থেকে তোশকে পেঁচানো অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে নিহতের স্ত্রী শারমিন আক্তার মরদেহটি তার স্বামী হাবিবুর রহমান রুবেলের বলে শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় রুবেলের মা মিনু বেগম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্তে নেমে খিলগাঁও এলাকার সব সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ, পর্যালোচনা ও বিভিন্ন তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যায় জড়িত মনিরকে গ্রেফতার করে থানা-পুলিশ।’
ক্ষোভ থেকে এই হত্যা উল্লেখ করে মতিঝিল বিভাগের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘রুবেল মনিরের আপন চাচাতো ভাই। জমিজমা ও পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে বিরোধ ছিল। রুবেল কাজ করতো না। বিভিন্ন সময় মনিরের কাছে টাকা দাবি করতো। টাকা না পেলে বাগবিতণ্ডায় জড়াতো। কিছুদিন আগেও টাকা না দেওয়া ১৫ দিন সেলুন বন্ধ রাখতে বাধ্য করে। পরে ১২ হাজার টাকা দেওয়ার পরে সেলুন খুলতে দেয়। সবকিছু মিলিয়ে মনির ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। সে রুবেলকে শায়েস্তা করার সুযোগ খুঁজছিল। পরে বুধবার (১ মে) রাত ১১টার দিকে মনিরের সেলুনে চুল কাটতে যায় রুবেল। সে সময় সব কর্মচারীকে ছুটি দিয়ে রুবেলের চুল কাটতে শুরু করে মনির। চুল কাটার এক পর্যায়ে সুযোগ বুঝে রুবেলকে বৈদ্যুতিক তারের শক দেয়। এতে রুবেল অচেতন হয়ে গেলে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে। পরে মরদেহটি বস্তার ভেতরে ঢুকিয়ে একটি তোশকে পেঁচিয়ে ঘটনাস্থলে ফেলে আসে।’
ডিসি হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, ‘রুবেলের কোনও পেশা ছিল না। স্থানীয় পর্যায়ে প্রভাব খাটিয়ে আধিপত্য দেখাতো। গ্রেফতার মনিরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’