নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শহরের গলির ভেতরও চলছে ভোটের উৎসব। প্রধান সড়ক বাদ দিয়ে শত শত ভোটার ও বিভিন্ন প্রার্থীর কর্মীরা সারিবদ্ধ হয়ে সকাল থেকে গলিতে অবস্থান করছেন। গলিতে থেকে ভোটারদের কাছে ভোট চাইছেন, প্রচারণা চালাচ্ছেন।
নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে স্থাপিত ভোট কেন্দ্র থেকে শ’খানেক ফুট দূরে এ গলিটি নন্দীপাড়া গলি নামে পরিচিত। গলিটি পড়েছে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র পদপ্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও কয়েক জন ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সমর্থক-কর্মীরা সারিবদ্ধ হয়ে নন্দীপাড়া সড়কে দাঁড়িয়ে আছেন। নন্দীপাড়ার ভেতর থেকে কেউ বের হলে ভোটের জন্য বায়না ধরছেন নেতাকর্মীরা। এতে কোনও ভোটার বিরক্ত হচ্ছেন না। হাসিমুখে বিভিন্ন প্রার্থীর স্লিপ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবমুখী হচ্ছেন ভোট দেওয়ার জন্য।
আলাপকালে সেলিনা নামের এক মধ্যবয়সী নারী বলেন, ‘পাঁচ বছর পর ভোট এসেছে। এলাকার মানুষ তো একটু উৎসব করবেই।’ তিনি বলেন, ‘সবাই অনুরোধ করছেন তাদের প্রার্থীকে ভোট দিতে।’
শংকর কুমার দে নামে নন্দীপাড়ার এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা মেয়র ও কাউন্সিলরের পক্ষে ভোট চাইছি। নন্দীপাড়া সড়ক ছেড়ে মূল সড়কে যাচ্ছি না। আমরা ভোট কেন্দ্রের কাছেও নেই। এলাকার ভোটাররা বাসা থেকে বের হলে সবাই তাকে ঘিরে ধরছেন, পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইছেন।’ তিনি বলেন, ‘ভোটের এমন পরিবেশ নারায়ণগঞ্জের কোথাও পাবেন না।’
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের পুরো এলাকাজুড়ে ভোটের পরিবেশ। মানুষের মনেও শঙ্কা কম। সকাল আটটায় শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ পর্বের ইতিমধ্যে ছয় ঘণ্টা পার হয়ে গেছে। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে নির্বাচনের দিনটি শান্তিপূর্ণভাবে অতিবাহিত হতে থাকলেও নন্দীপাড়া গলির মতো ভোটের উৎসব নারায়ণগঞ্জে দেখা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ কারণে নন্দীপাড়া এখন এক ব্যতিক্রমী এলাকা।
নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৭ জন। তাদের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন আওয়ামী লীগের ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভি ও বিএনপির অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। ২৭টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদের জন্য প্রার্থী হয়েছেন ১৫৬ জন ও সংরক্ষিত নয়টি নারী আসনের জন্য ৩৮ জন। ভোটার রয়েছে ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩৯২ জন। ভোটকেন্দ্র ১৭৪টি। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
ছবি: নাসিরুল ইসলাম
/এমএনএইচ/