X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১
বিএনপি, সিপিবি ও সিপিডি

বাজেট যেমনই হোক প্রতিক্রিয়া একই

উদিসা ইসলাম
০৩ জুন ২০১৬, ০৭:২২আপডেট : ০৩ জুন ২০১৬, ০৮:০১

বাজেট

বাজেট দিতেই এর সবচেয়ে বেশি সমালোচনা করে বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি, বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। তবে এই সমালোচনার ভাষা বরাবরই গতানুগতিক।  তাদের আট বছরের প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বাজেটের পর প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে ‘বাস্তবসম্মত নয়’, ‘কালো টাকা সাদা করার সুযোগের সমালোচনা’, ‘ঋণ করে ঘি খাওয়া’, ‘উচ্চাভিলাষী বাজেট’ শব্দগুলোর ব্যবহার রয়েছে। আর বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি দিনের পর দিন কেবল ‘সাম্রাজ্যবাদ ও লুটেরা ধনিক শ্রেণির স্বার্থরক্ষার বাজেট’ বলে লিখিত প্রতিক্রিয়ার বিবৃতি দিয়ে গেছে।

বিএনপি ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশ না নেওয়া বিএনপি আওয়ামী লীগের এ দফা গঠিত সরকারকে ‘অবৈধ’ ‍উল্লেখ করে বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাবে না বললেও প্রত্যেকবারই দলটির নেতারা কোনও না কোনও প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। আর বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে সাম্রাজ্যবাদ ও লুটেরা ধনিক শ্রেণির স্বার্থরক্ষার বাজেট বলে প্রত্যাখানের প্রবণতা দেখা গেছে।
মহাজোটের প্রথম বাজেটকে অবাস্তব বলে উল্লেখ করেছিল বিরোধী দল। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছিলেন, এতে করের বোঝা ও দ্রব্যমূল্য বাড়বে।
‘অবৈধ’ সরকারের বাজেট নিয়ে মাথাব্যাথা নেই উল্লেখ করলেও ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জন্য জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত দেশের সবচেয়ে বৃহৎ বাজেটকে ‘ঋণ করে ঘি খাওয়া’ হিসেবে অভিহিত করে বিএনপি। বাজেট বাস্তবসম্মত নয়- মন্তব্য করে দলটি পরামর্শ দিয়েছিল, বাজেট বাস্তবতার নিরিখে হওয়া প্রয়োজন।
বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখার সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বাজেটে কালো টাকার অবকাশ থাকতে পারে না।

সিপিবি এর আগের অর্থবছরে বিএনপির দাবি, দশম সংসদ ও আওয়ামী লীগ সরকার- উভয়ই অবৈধ। এ জন্য এই সরকারের দেওয়া ‘অবৈধ ও অনৈতিক’ বাজেটের ওপর আনুষ্ঠানিক কোনও প্রতিক্রিয়া দেবে না দলটি। অনানুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, ‘এই সরকারের বাজেট দেওয়ার কোনও অধিকার নেই।
বিএনপি এ সরকারের শুরুতে সরকার ‘অবৈধ’ হওয়ায় বাজেট দেওয়ার অধিকার নেই জানালেও প্রতিবারের মতোই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। বিএনপি তাদের প্রতিক্রিয়ায় জানায়, এই বিলাসী বাজেট বাস্তবায়নই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে সরকার বিদেশি দাতাগোষ্ঠী, ব্যাংক বা দেশের অভ্যন্তরে ব্যাংক থেকে সহায়তা চাইতে পারে। কিন্তু এর মূল চাপ পড়ে মূলত সাধারণ মানুষের ওপর। এ কারণে বাজেট স্বপ্নবিলাসী হলেও মানুষের কাছে দুঃস্বপ্নের মতো।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ২০১৫ সালে বাজেট প্রস্তাবনাকে সাম্রাজ্যবাদ ও লুটেরা ধনিক শ্রেণির স্বার্থরক্ষার একটি গতানুগতিক দলিল হিসেবে আখ্যায়িত করার পাশাপাশি তা প্রত্যাখান করে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটকে ‘সাম্রাজ্যবাদ ও লুটেরা ধনিক শ্রেণির স্বার্থরক্ষার দলিল’ উল্লেখ করে তা প্রত্যাখ্যান করে। এর আগের বছর বাজেট প্রস্তাবের পর সেই একই ভাষা ব্যবহার করে দলটি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কালো টাকার মালিক এবং লুটেরা ধনীদের স্বার্থরক্ষাকারী ও গণবিরোধী বাজেটের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। ২০১০ সালে প্রস্তাবিত বাজেটকে নীতি ও দর্শনের দিক থেকে গতানুগতিক এবং ধনিকশ্রেণির স্বার্থরক্ষার দলিল হিসেবে অভিহিত করে বিবৃতি দেয় দলটি।

বৃহস্পতিবার (২জুন) বাজেট ঘোষণা শুরুর পরপরই সিপিবি তাদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় একইকথা বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে। এতে বলা আছে, এ বাজেট গতানুগতিক এবং সাম্রাজ্যবাদ ও লুটেরা ধনিক শ্রেণির স্বার্থরক্ষার একটি গণবিরোধী দলিল।

সিপিডি অর্থনীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ২০০৯ সালে প্রস্তাবিত বাজেট ব্যাকরণ সিদ্ধ উল্লেখ করে আওয়ামীলীগ সরকারের এ বাজেটে আর্থিক খাতকে চাঙ্গা করতে কোনও দিক নির্দেশনা নেই বলে দাবি করে। পরের বছর প্রতিষ্ঠানটি বাজেটকে ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে তা বাস্তবায়ন করা সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে উল্লেখ করে। ২০১১-১২ অর্থবছরে আবারও চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠানটি বলে, চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করে নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত এই বাজেট বাস্তবায়নের দিকে সরকারকে জোর দিতে হবে। ২০১২ সালে অর্থমন্ত্রীর রাজস্ব আয়ের চেষ্টা একটা ‘ইন্দ্রজাল’ অবস্থা তৈরি করেছে বলে মতামত দেয় সংস্থাটি এবং সামগ্রিক বাজেট ব্যাকরণ ও প্রথাসিদ্ধ হয়েছে কিন্তু বাস্তবসম্মত নয়। ২০১৩ সালে রাজস্ব আদায়ের পরিকল্পনার জায়গাটাকেই বাজেটের দুর্বলতম জায়গা বলে মনে করলেও ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরের বাজেটের লক্ষ্য নিয়ে বিলাসিতা করা হয়েছে মন্তব্য করে প্রতিষ্ঠানটি। একইভাবে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত নয় উল্লেখ করে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে যে ব্যয়ের আকার ধরা হয়েছে, তা পূরণ করতে অর্থের যোগান কোথা থেকে হবে সে ব্যাপারে কোনও স্পষ্ট ধারণা না থাকার সমালোচনা করে প্রতিষ্ঠানটি।

আরও পড়ুন:

বরাদ্দের বিচারে শীর্ষ ও নিম্ন দশ

বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ সাড়ে ৬শ’ কোটি টাকা

ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনে ব্যবস্থা

 

 /ইউআই/ এপিএইচ/

সম্পর্কিত
চূড়ান্ত বাজেটে তামাকপণ্যের দাম বাড়ানোর দাবি
চলতি অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট পাস
জিডিপির অনুপাতে বাজেটের আকার অনেক ছোট: মির্জ্জা আজিজ
সর্বশেষ খবর
তিন লাল কার্ডের ম্যাচে মোহামেডানের খেলতে অস্বীকৃতি, আবাহনীকে জয়ী ঘোষণা
তিন লাল কার্ডের ম্যাচে মোহামেডানের খেলতে অস্বীকৃতি, আবাহনীকে জয়ী ঘোষণা
প্যারিসে ইরানি কনস্যুলেটে নিজেকে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি, গ্রেফতার ১
প্যারিসে ইরানি কনস্যুলেটে নিজেকে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি, গ্রেফতার ১
ইরান হামলা বন্ধ করলেও ছায়াশক্তিরা সক্রিয়
ইরান হামলা বন্ধ করলেও ছায়াশক্তিরা সক্রিয়
খিলগাঁওয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
খিলগাঁওয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
সর্বাধিক পঠিত
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী