রাজধানীর কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের আগে মাইকে জঙ্গিদের বারবার আত্মসমপর্ণের আহ্বান জানিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু জঙ্গিরা আত্মসমর্পণ না করে নানা প্রকার জঙ্গি স্লোগান দিতে থাকে এবং পুলিশের প্রতি হামলার চেষ্টা করতে থাকে। উদ্ভূত আতঙ্কজনক পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষ সোয়াট টিম কর্তৃক অপারেশন পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেন। কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের পর এ ঘটনায় মিরপুর থানায় দায়েরকৃত মামলার এজাহারে এই তথ্য পাওয়া গেছে। বুধবার রাতে মিরপুর থানার পরিদর্শক শাহজালাল আলম বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ৪৮।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মামলার এজাহারে বলা হয়, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২ টা ৩৫ মিনিটে নিয়মিত ব্লক রেইডের অংশ হিসেবে কল্যাণপুরের ৫ নম্বর সড়কের ৫৩ নম্বর তাজ মঞ্জিলের পঞ্চম তলার একটি ফ্ল্যাটে নক করা হয়। এ সময় জঙ্গিরা দরজা না খুলে পুলিশের দিকে কয়েকটি গ্রেনেড ছুড়ে মারে এবং কয়েক রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে। এতে পুলিশের এএসআই দীল মোহাম্মদ আহত হন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিচে থাকা পুলিশ ভবনের সামনে পেছনে এবং বিভিন্ন তলায় অবস্থান নেয়। গ্রেনেড বিস্ফোরণের পরপরই জঙ্গিদের মধ্যে দু’জন হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করতে করতে পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ পাল্টা গুলি চালিয়ে একজনকে আহত অবস্থায় আটক করে। অন্যজন পালিয়ে যায়।
এজাহারে বলা হয়, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে রাতেই সিটি, ডিবি, সোয়াট টিম ও বোম্ব ডিসপোজাল টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। ইতোমধ্যে জঙ্গিরা ঘটনাস্থল বাসার মধ্যে জঙ্গিরা অগ্নিসংযোগসহ আশপাশে অবস্থানরত পুলিশের দিকে মুহুর্মুহু গ্রেনেড নিক্ষেপ ও গুলি বর্ষণ করে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সোয়াট টিমের নেতৃত্বে অপারেশন পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেন। সোয়াট টিমের উপস্থিতি টের পেয়ে জঙ্গিরা গুলি বর্ষণ ও গ্রেনেড নিক্ষেপ করতে থাকে। একপর্যায়ে সোয়াট টিম পাল্টা গুলি চালাতে থাকে। প্রায় ঘণ্টাব্যপী গুলি বিনিময়ের পর সোয়াট টিম জঙ্গিদের অবস্থানরত রুমে প্রবেশ করে ৯ জনের মৃতদেহসহ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলা-বারুদ, ডেটোনেটর, জিহাদি বই, ধারালো অস্ত্র দেখতে পায়।
আরও পড়ুন:
'ভদ্র' আকিফুজ্জামান খান জঙ্গি, হতবাক প্রতিবেশীরা
অসুস্থ বাবাকে একবারও দেখতে আসেনি জঙ্গি রাশিক
কল্যাণপুরে জঙ্গিদের হাতের লেখায় জিহাদ
/এনএল/এমএনএইচ/