X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এনাম মেডিক্যালে কে এই ‘নাসরিন’?

উদিসা ইসলাম
১৮ জানুয়ারি ২০১৭, ০০:৪০আপডেট : ১৯ জানুয়ারি ২০১৭, ১৩:১৪

 

এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দুই মাস ধরে চিকিৎসাধীন ‘নাসরিন’ সাভার এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দুই মাস ধরে চিকিৎসাধীন ‘নাসরিন’। সারা শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন। মুখ, মাথা, হাত থেকে শুরু করে শরীরের কোনও প্রত্যঙ্গই রক্ষা পায়নি আঘাত থেকে। গত দুই মাসে কেউ তার খোঁজ নিতে আসেনি। এই নারীও কোনও কথা উচ্চারণ করেননি। কেবল ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন। কেউ খাইয়ে দিলে কখনও কখনও খান, কখনও খান না। তাকে এখানে কে ভর্তি করেছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজিম হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কে বা কারা ভর্তি করেছে জানি না। আশুলিয়া থানায় যোগাযোগ করুন।’

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ক্রাইম রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস জানেফার আলম ফেসবুকে এই নারীকে নিয়ে একটি পোস্ট দেন। তিনি তার এক স্বজনকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে এই নারীর খোঁজ পেয়েছেন বলে ওই পোস্টে জানান। কোনও নাম-পরিচয় না পাওয়ায় হাসপাতালে তাকে সবাই ‘নাসরিন’ নামে ডাকেন।

এ প্রসঙ্গে জানেফার আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এনাম মেডিক্যালের নিউরো ওয়ার্ডের ৪০৮ নম্বরে আছেন নাসরিন। তার শারীরিক অবস্থা নাজুক। আশেপাশের রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চিকিৎসকদের সহযোগিতায় এই দুই মাস তিনি এভাবে আছেন। কোনও কথা বলেন না। শুধু তাকিয়ে থাকেন। শরীরের প্রতিটি স্থানে কোপের দাগ। হাতেই তিন চারটি। খালি তাকিয়ে থাকেন। নার্স-আয়ারা খাইয়ে দিলে খান, না হলে খান না।’

বিষয়টি জাস্টিস ফর উইমেন নামের একটি সংগঠন ইতোমধ্যে দেখভালের দায়িত্ব নিয়েছে। কিন্তু কেউই বলতে পারছেন না ওই নারীর পরিচয়। সংগঠনটির সদস্য মাহবুব রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি দেখভালের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিষয়টি খুব ভয়ঙ্কর। দুই মাস ধরে একজন নারী নাম-পরিচয়হীন অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কারা এমন করেছে, তাও জানা যায়নি। এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’

এ বিষয়ে এনাম মেডিক্যালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজিম হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দুই মাস আগে কে বা কারা ভর্তি করে দিয়ে গেছে। আর কোনও খোঁজ নেয়নি। আমরাই চিকিৎসাব্যয় বহন করছি। আপনি আশুলিয়া থানায় যোগাযোগ করুন।’ কারা ভর্তি করে দিয়ে গেলো? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। তবে এবারও তিনি থানা থেকেই ঘটনা জানার পরামর্শ দিলেন।

এদিকে আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শামীম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এ ধরনের কোনও মামলার কথা আমাদের জানা নেই। সুনির্দিষ্ট মামলা নম্বর না বলতে পারলে কিছু জানানো সম্ভব নয়।’

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহসিনুল কাদির বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সাভার থানায় খোঁজ নিন। এনাম মেডিক্যাল কলেজ সাভার থানার অধীন।’ এনাম মেডিক্যাল কলেজ থেকে আশুলিয়া থানায় যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে জানানো হলে ওসি বলেন, ‘ভুল করে বলে থাকতে পারেন’।

এ বিষয়ে সাভার থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম নবী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এ ধরনের কোনও মামলার কথা শুনিনি।’ আশুলিয়া থানায় যোগাযোগ করতে বলা হয়েছিল জানানো হলে তিনি বলেন, ‘ঘটনাস্থল যদি আশুলিয়া থানায় হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে সেই থানাতেই মামলা হয়ে থাকবে বা তারাই বলতে পারবেন। ওই নারীকে ভর্তি করানোর পর কোনও কথা বলেনি দুই মাসে। এতদিনে কেউ তার খোঁজ করতেও আসেনি। ফলে ঘটনাস্থল কোথায়, তা জানা সম্ভব কিভাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সেক্ষেত্রে সাভার থানাতেই জানানোর কথা। কিন্তু আমরা এ বিষয়ে কিছু জানি না।’

 আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলের প্রভাবশালী খান পরিবারের পতন!

/এমএনএইচ/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘ডে আফটার টুমরো’ নয়, টুডে
‘ডে আফটার টুমরো’ নয়, টুডে
জিম্মি মুক্তির বিষয়ে আন্তরিক হলেও গাজায় আগে যুদ্ধবিরতি চায় হামাস
জিম্মি মুক্তির বিষয়ে আন্তরিক হলেও গাজায় আগে যুদ্ধবিরতি চায় হামাস
হাসিনা-তাভিসিন আন্তরিক বৈঠক, থাইল্যান্ডের সঙ্গে ৫ দলিল স্বাক্ষর
হাসিনা-তাভিসিন আন্তরিক বৈঠক, থাইল্যান্ডের সঙ্গে ৫ দলিল স্বাক্ষর
৯ মে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে চুয়েট, হলে থাকতে পারবেন শিক্ষার্থীরা
৯ মে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে চুয়েট, হলে থাকতে পারবেন শিক্ষার্থীরা
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী