X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

আদালতের আদেশ মানছে না দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড

এস এম আব্বাস
০৫ এপ্রিল ২০১৭, ০৩:১০আপডেট : ০৫ এপ্রিল ২০১৭, ০৩:১৮

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড উচ্চ আদালতের নির্দেশ থাকলেও দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে (মাস্টাররোলে নিয়োগ) নিয়োজিত ২৩ কর্মচারীকে নিয়মিত চাকরিতে নিয়োগ দিচ্ছে না দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড। হাইকোর্টের রায় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ না মানায় শিক্ষা সচিবের কাছে বিষয়টি তুলে ধরে আবেদন জানিয়েছেন বঞ্চিত কর্মচারীদের দু’জন মো. বেলাল উদ্দিন ও মো. গোলাম রব্বানী। এ বিষয়ে শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে স্পষ্ট কোনও জবাব পাওয়া যায়নি।
বেলাল উদ্দিন ও গোলাম রব্বানীর আবেদন ও উচ্চ আদালতের নথিপত্রে দেখা গেছে, দিনাজপুরে নতুন শিক্ষা বোর্ড হওয়ার সময় দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে (মাস্টররোলে নিয়োগ) তিন দফায় ১৩১ জন কর্মচারীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে ২০১০ সালে শিক্ষা বোর্ড ওই নিয়োগ বাতিল করে ১৩১ জনের মধ্য থেকে ১০৮ কর্মচারীকে নিয়মিত নিয়োগ দেয়। বাদ দেওয়া হয় ২৩ জন কর্মচারীকে।
বাদ দেওয়া ওই ২৩ কর্মচারীর মধ্যে ঠাকুরগাঁও জেলার হারিপুর উপজেলার তোররা গ্রামের মো. বেলাল উদ্দিন ও দিনাজপুর জেলার সদর উপজেলার উথরাইল গ্রামের গোলাম রাব্বানী হাইকোর্টে দু’টি রিট আবেদন করেন। রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১২ সালের ১৭ অক্টোবর বেলাল উদ্দিকে চাকরিতে নিয়মিত নিয়োগের ব্যবস্থা নিতে আদেশ দেন হাইকোর্ট। অন্য রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ১৯ অক্টোবর গোলাম রাব্বানীকেও চাকরিতে নিয়মিত হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা নিতে আদেশ দেন হাইকোর্ট। শিক্ষা বোর্ড হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল আবেদনটির প্রয়োজন নেই মর্মে নিষ্পত্তি করেন সুপ্রিম কোর্ট।
এরপর বেলাল উদ্দিন ও গোলাম রাব্বানী আবেদন করেন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সচিব বরাবর। বার বার আবেদন করেও তারা চাকরিতে নিয়োগ পাননি বলে জানান। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানালে মন্ত্রণালয় থেকে বোর্ড চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হয় তাদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য। তারপরও শিক্ষা বোর্ড তাদের নিয়োগ দেয়নি।
রিট আবেদনকারী মো. বেলাল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বার বার শিক্ষা বোর্ডের কাছে ধর্ণা দিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না। তিন বছরেরও বেশি সময় পার হয়ে গেল। মামলায় জিতেও চাকরি পাচ্ছি না। শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা সচিব বরারবর আবেদন করেছি একাধিকবার। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনও কাজ হচ্ছে না।’ তারা সর্বশেষ গত ২৭ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবর লিখিত আবেদন করেন বলে জানান।
সচিবের কাছে করা এই আবেদনে বলা হয়, ‘হাইকোর্টের রায় ও নির্দেশনা মোতাবেক চাকরি নিয়মিত করার লক্ষ্যে পদ ও পে-স্কেল প্রদানের আদেশের পর আমরা শিক্ষামন্ত্রী ও সচিব বরারবর আদেন করি। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অধিশাখা-১০ থেকে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে চাকরিতে নিয়মিত করার পদক্ষেপ নিতে বলা হয় গত ১২ মার্চ।’
এরপরও তাদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না জানিয়ে বেলাল উদ্দিন ও গোলাম রব্বানী বলেন, ‘হাইকোর্টের রায় ও নির্দেশনা অমান্য করে আমাদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের আগের আবেদনের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিয়োগের নির্দেশ দিলেও আমাদের নিয়োগ হয়নি। সে কারণে আবারও আবেদন করতে বাধ্য হয়েছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর আহমেদ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ওই ২৩ কর্মচারী বেশ কয়েকবার রিট করেছে। এবারও একটা রিট করেছিল, সেটার নিষ্পত্তি হয়েছে। তখন মন্ত্রণালয়ে তারা দরখাস্ত দিয়েছে। মন্ত্রণালয় তাদের পক্ষে লিখে আবার বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নিতে বলেছে। তাই তাদের নিয়োগ দিতে হলে মামলার আলোকে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
রিট আবেদনের আদেশ বাস্তবায়ন বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন, ‘তাহলে কাগজ আনতে হবে। মামলার আলোকে আইনজীবীর কাছ থেকে কিছু লিখে আনতে হবে। তাদের চাকরি দিতে আমার কোনও আপিত্ত নেই। আমি তো নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছি।’
/এসএমএ/টিআর/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ওঠানামা করছে মুরগির দাম, বাড়ছে সবজির
ওঠানামা করছে মুরগির দাম, বাড়ছে সবজির
শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে
শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে
দেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা
সিনেমা সমালোচনাদেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা
দুবাই হয়ে ট্রানজিট ফ্লাইট স্থগিত করলো এমিরেটস
দুবাই হয়ে ট্রানজিট ফ্লাইট স্থগিত করলো এমিরেটস
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ