X
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল হক মামা আর নেই

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০১ জুলাই ২০১৭, ২০:০০আপডেট : ০১ জুলাই ২০১৭, ২০:১৩

মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল হক মামা

মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম গেরিলা কমান্ডার শহীদুল হক আর নেই। সবার কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন ‘মামা’ নামে। বাংলাদেশ সময় গত শুক্রবার রাত ১২টায় কাতারের রাজধানী দোহার একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি (ইন্না লিল্লাহি...রাজিউন)। বাংলাদেশ থেকে সুইডেন যাওয়ার পথে গত ২৮ জুন বিমানে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দোহার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। দোহা থেকে তার মরদেহ সুইডেনে নেওয়া হবে। সেখানেই তাকে দাফন করা হবে। মুক্তিযুদ্ধের গেরিলা গ্রুপ ‘মামা বাহিনী’র এই প্রধান দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে সুইডেনে বাস করছিলেন।

শহীদুল হক মামার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক বার্তায় তিনি মুক্তিযুদ্ধে এই গেরিলা কমান্ডারের অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারে জনমত গঠনে শহীদুল হক গুরুত্বর্পূণ ভূমিকা রাখেন।’ তিনি প্রয়াতের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শহীদুল হকের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন।

র্দীঘ ৯ মাসের সশস্ত্র যুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর কাঙ্ক্ষিত বিজয় অর্জনের পর ঢাকার মিরপুর অবরুদ্ধ করে রাখা বিহারিদের বিরুদ্ধেও শহীদুল হক সাহসিকতার সঙ্গে সশস্ত্র লড়াই চালিয়ে যান। এর আগে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। গড়ে তোলেন নিজের গেরিলা গ্রুপ ‘মামা বাহিনী’।

তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধী জামায়াতে ইসলামীর নেতা আবদুল কাদের মোল্লার মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী ছিলেন। শহীদুল হক বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।

যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ২০১৩ সালে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চের সক্রিয় সংগঠক ছিলেন শহীদুল হক মামা। গণজাগরণ মঞ্চের আহ্বায়ক ইমরান এইচ সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘শহীদুল হক মামা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। গেরিলা বাহিনী গঠন করে মুক্তিযুদ্ধে তিনি যে অবদান রেখেছেন, তা অনস্বীকার্য। এর বাইরেও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার দ্রুততর করার আন্দোলনে ২০১৩ সালে তিনি প্রবাস জীবন ছেড়ে দেশে এসে সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে সবসময় আমাদের সঙ্গে থেকেছেন।’

শহীদুল হক দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে সুইডেনে সপরিবারে স্থায়ীভাবে বসবাস করছিলেন। ইউরোপের বাঙালি কমিউনিটিতে তিনি সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন।

গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম কর্মী অমি রহমান পিয়াল বলেন,‘একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ যখন সাংগঠনিক পর্যায়ে, ট্রেনিং নিয়ে সংগঠিত হচ্ছে মুক্তিবাহিনী, তখন অসম সাহসী একদল তরুণকে ঢাকা পাঠানো হয়েছিল একটা বার্তা দিতে যে, বাঙালি ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তারা লড়ছে। বাংলাদশে স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত এই লড়াই থামবে না। বোমায়-গুলিতে ঢাকা কাঁপিয়ে দেওয়া সেই বার্তাবাহক, সেই গেরিলাদের কমান্ডার ছিলেন শহীদুল হক মামা। শাহবাগের উত্তাল সময়ে তরুণ প্রজন্ম প্রিয় শহীদ মামাকে চিনেছিল নতুন করে। অসুস্থ শরীর নিয়েও তিনি পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, সুদূর সুইডেন থেকে ছুটে এসে মিছিল-স্লোগান ধরেছিলেন মানবতাবিরোধী অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে। এই বীর মুক্তিযোদ্ধার আত্মার শান্তি কামনা করছি।’  

 

/এফএন/ইউআই/এএম/টিএন/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
মৌলভীবাজারে ৬ জনের মৃত্যুর ঘটনা মর্মান্তিক: মানবাধিকার কমিশন
মৌলভীবাজারে ৬ জনের মৃত্যুর ঘটনা মর্মান্তিক: মানবাধিকার কমিশন
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
কুমিল্লা মেডিক্যাল সেন্টার হাসপাতালকে ২ লাখ টাকা জরিমানা
কুমিল্লা মেডিক্যাল সেন্টার হাসপাতালকে ২ লাখ টাকা জরিমানা
সর্বাধিক পঠিত
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি