ঢাকা মেডিক্যাল কলেজসহ সারা দেশের সব হাসপাতালের মর্গের অকেজো ফ্রিজ ও এয়ার কন্ডিশন (এসি) মেরামতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মর্গের অকেজো ফ্রিজ ও এয়ার কন্ডিশন মেরামতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
সোমবার (২৪ জুলাই) জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি কাজী মো.রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লার বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
চার সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব, শিক্ষা সচিব, আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পরিকল্পনা সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের পরিচালক, প্রধান প্রকৌশলী, সুপারিনটেন্ডিং প্রকৌশলী (সার্কেল-১, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, রেজিস্ট্রার, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ও ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়া, আদেশ পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা প্রতিবেদন আকারে জানাতেও নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। স্বাস্থ্য সচিব, শিক্ষা সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের পরিচালককে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মর্গের অকেজো ফ্রিজ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে জাস্টিস ওয়াচ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মাহফুজুর রহমান মিলন সম্প্রতি জনস্বার্থে একটি রিট করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আমিনুল হক।
পরে মাহফুজুর রহমান মিলন বলেন, ‘রিটের শুনানি নিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজসহ সারা দেশের হাসপাতালের মর্গের অকেজো ফ্রিজ ও এয়ার কন্ডিশন সচল, মেরামত বা পুনঃস্থাপনে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।’
পত্রিকায় প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়,ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মর্গে ২৫টি বেওয়ারিশ বা অজ্ঞাত লাশে পচন ধরেছে। মর্গের যে কর্মীরা প্রতিনিয়ত পচাগলা লাশ দেখে অভ্যস্ত, তারাও লাশের বেহাল দশা আর সহ্য করতে পারছেন না। মর্গের ইনচার্জ সেকান্দার জানান, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের এ মর্গের পাঁচটি ফ্রিজের মধ্যে তিনটি নষ্ট দুই-তিন মাস ধরে। একেকটি ফ্রিজে চারটি করে লাশ রাখা যায়। দুটি ফ্রিজে চার জঙ্গির লাশ, চারজন বিদেশি নাগরিকের লাশ রাখা হয়েছে। আর স্বামী হিন্দু না মুসলিম—এই দ্বন্দ্ব নিয়ে দুই স্ত্রী দাবিদার হওয়ায় আদালতের নির্দেশে একটি লাশ সাড়ে তিন বছর ধরে মর্গে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। মর্গের চারটি শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বা এসি নষ্ট প্রায় এক বছর ধরে। প্রতিদিন গড়ে দুটি আবার কোনও সময় চার থেকে পাঁচটি অজ্ঞাত লাশ এসে জমা হয় মর্গে। ফলে বেওয়ারিশ লাশগুলো কোনোভাবেই সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘বেওয়ারিশ লাশসহ মর্গের সার্বিক পরিবেশ নিয়েই আমরা বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে আছি।’
এমটি/এএম
