X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১

একটি পয়সাও অপচয় বা তসরুফ হয়নি: খালেদা জিয়া

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৯ অক্টোবর ২০১৭, ১৭:৫৪আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০১৭, ১৭:৫৭

আদালতে খালেদা জিয়া (ছবি: নাসিরুল ইসলাম) জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের একটি পয়সাও তসরুফ হয়নি বলে দাবি করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল সমর্থন করে আদালতকে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
খালেদা জিয়া হাজির হওয়ার আগেই বেলা ১১টা চার মিনিটে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। ১১টা ১৭ মিনিটে তিনি আদালতে হাজির হন। তার পক্ষে জামিনের আবেদন করেন ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার। জামিনের বিরোধিতা করেন অ্যাডভোকেট মোশারফ হোসেন কাজল।

খালেদা জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার জন্য আদালতের অনুমতি ও এক লাখ টাকার বন্ডে জামিন মঞ্জুর করেন বিশেষ জজ  ড. মো. আখতারুজ্জামান।

জামিন শেষে খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবীরা আত্মপক্ষ সমর্থনের আবেদন জানান। আবেদন মঞ্জুর হলে বিএনপি চেয়ারপারসন তার বক্তব্য তুলে ধরেন।   

মামলার অভিযোগ প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে বলেন, ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টকে কেন্দ্র করে দায়ের করা মামলার বিচার কাজ আপনার আদালতে হচ্ছে।মামলার অভিযোগ এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য কাগজপত্র আপনি নিশ্চয়ই দেখেছেন। আপনি নিশ্চয়ই ইতোমধ্যে নিশ্চিতভাবেই জেনেছেন যে, জিয়াউর রহমানের নামে এতিমখানা স্থাপনের জন্য বিদেশ থেকে অনুদানের যে অর্থ এসেছিল, তার একাংশ দিয়ে স্থাপিত এতিমখানায় এতিমদের কল্যাণ সাধিত হচ্ছে। সেই অর্থের বাকি অংশ যা ব্যাংকে গচ্ছিত ছিল, তার প্রতিটি পয়সাই রক্ষিত রয়েছে।’

খালেদা জিয়া আরও বলেন, ‘ব্যাংকের সুদ যুক্ত হয়ে সেই টাকার পরিমাণ আরও অনেক বেড়েছে। এর একটি পয়সাও অপচয় বা তসরুফ হয়নি।’

খালেদা জিয়া আদালতের কাছে প্রশ্ন রেখে  বলেন, ‘কেউ চুরি করে খাওয়ার প্রশ্ন ওঠেনি। তাহলে প্রধানমন্ত্রী কেমন করে এতিমের টাকা চুরি করে খাওয়ার মতো মানহানিকর ও কুৎসিত উক্তি করলেন? বিচারাধীন বিষয়ে এমন মন্তব্য করার অধিকার ও এখতিয়ার কি তার আছে? এটা কি আইনের লঙ্ঘন ও বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ নয়? আপনি কি পারবেন এর প্রতিকার করতে? বিচার প্রভাবিত করার এই অন্যায় ও ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার প্রতিবিধান কি আমি আপনার কাছ থেকে চাইতে পারি না?’

আদালতকে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করতে চাই, আপনার এই আদালত আইনের দ্বারা পরিচালিত। এই আদালতে আমার উপস্থিতি ও হাজিরা সংক্রান্ত সিদ্ধান্তও আপনি স্বাধীনভাবে গ্রহণের অধিকার রাখেন বলেই আমি মনে করি। দেশের প্রধানমন্ত্রীর উক্তি কি আপনার সেই অধিকার ও স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ নয়? জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের বিরুদ্ধে দায়ের করা এই মামলায় বিচার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে প্রধানমন্ত্রীর সেদিনের উক্তিটি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।তিনি নিজে,তার মন্ত্রী-এমপি ও দলীয় নেতারা বিগত কয়েক বছর ধরে বিচারাধীন এই মামলা নিয়ে ক্রমাগত বলগাহীন মন্তব্য করে চলেছেন। এই মামলার রায় কী হবে, সেটাও তারা প্রকাশ্য বক্তব্যে ডিক্টেট করে চলেছেন। এই অপতৎপরতা ও বেআইনি প্রচারণা বন্ধের কোনও উদ্যোগ না থাকায়, ন্যায়বিচার নিয়ে আমাদের ও দেশবাসীর মনে প্রবল আস্থাহীনতা এবং সন্দেহ-সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।’

খালেদা জিয়া বলেন, ‘এদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ছিল আমাদের স্বাধীনতার লক্ষ্য। শহীদ জিয়াউর রহমান সেসব লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্যই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেসব লক্ষ্য অর্জনের জন্য মানুষ অকাতরে জীবন দিয়ে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন। স্বাধীনতার সেই সব লক্ষ্য আজ  পদদলিত। সারাজাতি আজ  লাঞ্ছিত ও নির্যাতিত। সমগ্র বাংলাদেশকেই আজ এক বিশাল কারাগার বানানো হয়েছে। সবখানেই চলছে অস্থিরতা ও গভীর অনিরাপত্তাবোধ। মিথ্যা ও সাজানো মামলায় বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতা-কর্মী এই মুহূর্তে কারাগারে বন্দি।’

খালেদা জিয়া দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে আদালতকে বলেন, ‘বিএনপির প্রায় ৭৫ হাজার নেতা-কর্মী বিভিন্ন মেয়াদে কারা নির্যাতন ভোগ করেছেন। আমাদের দলের ৪ লাখের বেশি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ২৫ হাজারের মতো মামলা দায়ের করা হয়েছে। নির্যাতন, হয়রানি ও গ্রেফতারের ভয়ে বহু নেতা-কর্মী বাড়ি-ঘরে থাকতে পারেন না। তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। গুম, খুন, অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বিরোধী দলের অসংখ্য নেতা-কর্মী। তাদের ঘরে ঘরে আজ কান্নার রোল।এখন সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বড় বেশি বলা হয়। কিন্তু কোথায় আজ সাংবিধানিক শাসন? আমাদের সংবিধান নাগরিকদের যেসব অধিকার দিয়েছে, কোথায় আজ সেসব অধিকার? কোথায় আজ  সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার?’

আরও পড়ুন: 
আমার বেলায় ন্যাক্কারজনক ব্যতিক্রম: খালেদা জিয়া

 

/এসএমএ/ এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ড্রোন হামলার কথা অস্বীকার করলো ইরান, তদন্ত চলছে
ড্রোন হামলার কথা অস্বীকার করলো ইরান, তদন্ত চলছে
শিল্পী সমিতির নির্বাচন, মিশা-ডিপজলে কুপোকাত কলি-নিপুণ
শিল্পী সমিতির নির্বাচন, মিশা-ডিপজলে কুপোকাত কলি-নিপুণ
ভাগ্নিকে শায়েস্তা করতে নাতিকে হত্যা
ভাগ্নিকে শায়েস্তা করতে নাতিকে হত্যা
৫ বছর বন্ধ সুন্দরবন টেক্সটাইল, সংকটে শ্রমিকরা
৫ বছর বন্ধ সুন্দরবন টেক্সটাইল, সংকটে শ্রমিকরা
সর্বাধিক পঠিত
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
ইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
ভ্রমণ শেষে ভারত থেকে তিন দিনে ফিরলেন ১৫ হাজার পর্যটক
ভ্রমণ শেষে ভারত থেকে তিন দিনে ফিরলেন ১৫ হাজার পর্যটক