সাহিত্যের কোনও সীমানা নেই। এখন বিশ্বের যেকোনও প্রান্ত থেকেই সাহিত্য রচনা করে ছড়িয়ে দেওয়া যায় সারাবিশ্বে। বাংলা সাহিত্যের ক্ষেত্রে এখন ঢাকা কেন্দ্র হয়ে উঠলেও এই চর্চা থেকে বের হতে হবে। পাশাপাশি বাংলা সাহিত্যের জন্য প্রয়োজন ভালো মানের অনুবাদক। তাদের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যকেও যেকোনও কেন্দ্র থেকে ছড়িয়ে দিতে হবে বিশ্বসাহিত্যের আঙ্গিনায়।
‘ঢাকা লিট ফেস্ট ২০১৭’-এর প্রথম দিন বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুর ৩টায় অনুষ্ঠিত ‘গল্পকার- সীমানা যখন কেন্দ্র’ শীর্ষক সেশনে বক্তারা এসব কথা বলেন। প্রকাশক মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের সঞ্চালনায় সেশনে বক্তা ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের গল্পকার কণা বসু মিশ্রা, গল্পকার মাসুদুল হক, প্রভাষক ও গল্পকার মেরিনা নাসরিন এবং কথাসাহিত্যিক সৈয়দ আজাদ।
‘সীমানাই যখন কেন্দ্র’ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রভাষক ও গল্পকার মেরিনা নাসরিন বলেন, ‘সত্যিই সাহিত্যের কোনও সীমানা নেই। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে সাহিত্য রচনা করেও দেশ-বিদেশে তা ছড়িয়ে দেওয়া যায়। আমরা আগে সাহিত্যের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কলকাতাকে বুঝতাম। কিন্তু বর্তমানে ঢাকাকেও সাহিত্যের একটি কেন্দ্র বলা যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটা সময় অনেক কষ্ট করে প্রকাশকদের কাছে লেখা পৌঁছানো হতো। তারা সেখান থেকে লেখা বাছাই করে প্রকাশ করতেন। কিন্তু এখন আমরা সহজেই লেখা পৌঁছাতে পারি। অথচ সেগুলো নিচে পড়ে থাকে, দেখা আর হয় না। আশা করব, প্রকাশকরা নিরপেক্ষভাবে লেখা প্রকাশ করবেন।’
গল্পকার মাসুদুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশের সাহিত্য একটি কেন্দ্রের মতো। এখান থেকে আমাদের বের হতে হবে। সাহিত্যের কোনও কেন্দ্র নেই, হয়তো বৃত্ত থাকে। শুধু ঢাকাকে কেন্দ্র করে যে সাহিত্যচর্চার প্রতিযোগিতা হয়, তা থেকে আমাদের বের হতে হবে। নিজের ভালোলাগার জন্য বই লিখতে হবে। তবেই পাঠকের ভালো লাগবে।’
পশ্চিমবঙ্গের গল্পকার কণা বসু বলেন, ‘কবি-সাহিত্যিকরা পাগল, তবে পাগলরা কবি-সাহিত্যিক নয়। সৃজনশীল মন নিয়ে যারা লেখেন, তারাই ভালো কিছু করেন। ওপার বাংলা বা এপার বাংলার বিভেদ বলে কিছু নেই। আমরা যারা সাহিত্য নিয়ে কাজ করি, তারা সবাই সাহিত্যের মানুষ। আমরা একে অন্যের আত্মীয়।’
কথাসাহিত্যিক সৈয়দ আজাদ বলেন, ‘কেন্দ্র বলতে একটি মাত্র গোষ্ঠীকে বুঝায়। লিখতে চাইলে গোষ্ঠীর বাইরে থেকেও লেখা যায়। আমাদের দেশে অনেক আন্তর্জাতিক মানের বই আছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক মানের অনুবাদক নেই। আমরা এমন অনুবাদক চাই, যার নাম দেখেই বিদেশি পাঠকরা বই কিনতে আগ্রহী হবে। এতে দেশের নাম বিদেশের মাটিতেও প্রসারিত হবে।’
অনুষ্ঠান শেষ অতিথিদের মাসিক ‘গল্পকার’ পত্রিকাটি উপহার হিসেবে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন-
পর্দা উঠলো লিট ফেস্টের
আদোনিসের হাতে ‘মুজিব’ গ্রন্থ
আমি মানুষের পক্ষের কবি: আদোনিস
বাংলার নারীরা সাহসের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে