X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আগ্রহ কমছে বিদেশি শিক্ষার্থীদের

রশিদ আল রুহানী
১২ ডিসেম্বর ২০১৭, ২১:১৯আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭, ১২:২৯

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ

দেশে বর্তমানে ৩৭টি সরকারি ও ৯৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে।এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক বিদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। তবে আগে বিদেশি শিক্ষার্থীরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশি ভর্তি হতো। এখন সেই সংখ্যা কমে গেছে। এমনটাই জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। ইউজিসির ২০১৬ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রমেই বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তা বাড়ছে।

এতে বলা হয়, ‘২০১৬ সালে দেশের ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১৯টিতে ৩৫৫ জন বিদেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। আর ৯৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৪টিতে পড়ছে ১ হাজার ৯২৭ জন।’

পরিসংখ্যান অনুযায়ী,  ২০১০ সালে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৫৯ জন, ২০১১ সালে ২১০ জন, ২০১২ সালে ৫২৫ জন, ২০১৩ সালে ৩২৬ জন, ২০১৪ সালে ৪৩২ জন, ২০১৫ সালে ৫৯৩ জন এবং ২০১৬ সালে ৩৫৫ জন ভর্তি হয়েছে। এ অনুযায়ী, ২০১০ সালে যে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিল তার চেয়ে ৪ জন শিক্ষার্থী কমে গেছে ২০১৬ সালে এসে।

অন্যদিকে, ২০১৫ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থী ছিল ১ হাজার ৫৪৮ জন। ২০১৬ সালে আরও  ৩৭৯ জন শিক্ষার্থী বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৯২৭ জনে।

২০১৬ সালে ৩৪ জন শিক্ষার্থী মিসর থেকে বাংলাদেশের ৩৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে এসেছেন। এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) থেকে এসেছেন ৩২ জন, ফিলিপাইন থেকে ৩১ জন, মিয়ানমার থেকে ৩০ জন। এছাড়া জিম্বাবুয়ে, জাম্বিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া,  ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, পাকিস্তান এবং ভারত থেকেও লেখাপড়া করতে বাংলাদেশে এসেছেন শিক্ষার্থীরা।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ইউজিসি’র বার্ষিক প্রতিবেদনে সাধুবাদ জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্রতিবছরই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর কারণ, বর্তমানে বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ব্যাপক ডিজিটালাইজেশন হয়েছে। ফলে বিদেশি শিক্ষার্থীরা তথ্য ও প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্বের যে কোনও প্রান্ত থেকে উচ্চশিক্ষার কোর্স-কারিকুলাম, সিলেবাস ইত্যাদি দেখে বাংলাদেশে পড়ার জন্য উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।

প্রতিবেদন থেকে আরও জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, চীন, কানাডার মতো উন্নত দেশগুলো থেকেও শিক্ষার্থীরা পড়তে এসেছেন। সে কারণে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের হারও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে শিক্ষার গুণগতমান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও উন্নীত করা প্রয়োজন বলেও মত প্রকাশ করা হয়েছে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি বিদেশি শিক্ষার্থীদের এমন আগ্রহের পেছনে চারটি কারণ রয়েছে বলে মনে করেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সহ-সভাপতি ও ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী।

তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে খরচ কম, আফ্রিকান দেশগুলোর চেয়ে বাংলাদেশের আবহাওয়া-পরিবেশ অনেক ভালো, শিক্ষার গুণগত মান ঠিক রাখার চেষ্টা হয় এবং উচ্চশিক্ষার মান নিশ্চিতে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয়।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিভিন্ন দেশে ক্যাম্পেইন করে। যে সুযোগ আমাদের নেই। তাছাড়া বিদেশি শিক্ষার্থীদের তারা (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) আলাদাভাবে হোস্টেল সুবিধাসহ অন্যান্য অনেক সুবিধা দেয়। ভর্তির যোগ্যতা বেসরকারিতে যা চাওয়া হয় তা পাবলিকের চেয়ে কিছুটা সহজ। ফলে বিদেশি অনেক শিক্ষার্থী দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনই করতে পারে না।‘

ইউজিসি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সে তুলনায় বাড়ছে না। এর কারণ হচ্ছে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য তেমন কোনও প্রচার প্রচারণা করে না। তাছাড়া যেসব দেশে এক সময় উচ্চশিক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না সেসব দেশে এখন বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। ফলে ওইসব দেশ থেকে শিক্ষার্থী তেমন আসে না। যেমন, ভুটান, নেপাল, মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। এখন তারা অনেক উন্নত। আবার বেশিরভাগ দেশে উচ্চশিক্ষার চেয়ে কারিগরি ও কর্মমুখী শিক্ষার প্রতি জোর দেওয়া হয়েছে। এ কারণেও তারা এখন উচ্চশিক্ষার জন্য বাংলাদেশে আসে না।’

/আরএআর/এএইচ/এসটি/টিএন/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা