এমপিওভুক্তির দাবিতে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর থেকে অনশন পালন করছেন নন-এমপিও শিক্ষকরা। দিন-রাত এক করে তারা শুয়ে আছেন রাজপথে। অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, না খেয়ে শুধু স্যালাইন নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন অনশন। এর মধ্যে তীব্র শীত জাঁকিয়ে বসলে বাড়তে শুরু করেছে ঠাণ্ডা, জ্বর আর শ্বাসকষ্টের মতো রোগের প্রাদুর্ভাব। তবু রাজপথ ছাড়েননি তারা। নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশনের মুখপাত্র আনোয়ার হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত অসুস্থ শিক্ষকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩০ জনে।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সকালে অনশনের ষষ্ঠ দিনে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে সরজমিনে দেখা যায়, কম্বল কিংবা চাদর জড়িয়ে রাস্তায় অবস্থান করছেন শিক্ষকরা। তাদের মধ্যে অনেকেই ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। অনশনের শারীরিক দুর্বলতার সঙ্গে ঠাণ্ডা, জ্বর আর শ্বাসকষ্টের মতো রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই।
আনোয়ার হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘শীতের কারণেও শিক্ষকরা আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এর মধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই ভর্তি হতে হয়েছে ১৪ জনকে। এছাড়া, অসুস্থ অবস্থাতেই প্রেস ক্লাবের সামনে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন আরও ১১৬ জন শিক্ষক। তাদের অনেকেই হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে অনশনে যোগ দিয়েছেন।’
আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানান, এমপিওভুক্তির দাবিতে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন করে আসছেন তারা। এই পাঁচ বছরে তারা অনশন করেছেন, অবস্থান ধর্মঘট করেছেন, শিক্ষামন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর একাধিকবার স্মারকলিপি দিয়েছেন। কিন্তু তাদের এমপিওভুক্তির দাবি পূরণ হয়নি। গত দুই অর্থবছরের বাজেটেও তাদের এমপিওভুক্তি বা বাড়তি ভাতার জন্য কোনও বরাদ্দ রাখা হয়নি। তাই গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে তারা ফের নেমেছেন রাজপথে। এর মধ্যে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ তাদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানালেও তা প্রত্যাখ্যান করে তারা ৩১ ডিসেম্বর থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলছেন, এবারে এমপিওভুক্তির সুনির্দিষ্ট ঘোষণা ছাড়া তারা রাজপথ ছাড়বেন না। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
আরও পড়ুন-
‘মেয়ে ফোন করে বলে, বাবা বাড়ি ফিরে আসো, টাকার দরকার নেই’