X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

যে কারণে ধর্মঘট করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা

তাসকিনা ইয়াসমিন
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ০৭:৪৫আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১১:২৬

 

ধর্মঘট চলাকালে মিটফোর্ড হাসপাতাল ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বিভিন্ন অভিযোগে কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন প্রায়ই। এ কারণে ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ রোগীরা। গত ৪ ও ৫ ফেব্রুয়ারি মিটফোর্ড হাসপাতালে ধর্মঘট করেছেন ইন্টার্নরা। এরপর কর্মবিরতি পালন করেছেন কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরাও।

২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন, চিকিৎসক ও রোগীর অনুপাতে নার্স না থাকা, হাসপাতালে বেড সংকট, ওষুধ ও অক্সিজেনের ঘাটতি; দারোয়ান, রিসিপশনিস্ট ও সুইপার না থাকা, রোগীর স্বজনদের রুক্ষ মেজাজ ও যৌন হয়রানি— ইন্টার্নদের অভিযোগের যেন শেষ নেই।

স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক শামসুজ্জোহা শামস মনে করেন, সারাদেশে একজন চিকিৎসকের বিপরীতে তিনজন নার্স থাকা দরকার। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কোথাও তো একজন নার্সও নেই। এ কারণে রোগীর আত্মীয়স্বজন এসে চিকিৎসককেই বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। কিন্তু চিকিৎসকদের কাজ চিকিৎসা দেওয়া। তখনই মূলত গণ্ডগোলের ক্ষেত্র তৈরি হয়।’

কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের ইন্টার্ন ডা. রাহাত মিসবাহর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী—একজন রোগী বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হন সেখানে। মেডিসিন ইউনিটে ভর্তি হওয়ার পর সন্ধ্যা পর্যন্ত স্বাভাবিকই ছিলেন তিনি। রাত ১০টার দিকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। এর আধঘণ্টার ব্যবধানে তিনি মারা যান। ডা. রাহাতের অভিযোগ, ‘এ সময় রোগীর সঙ্গের লোকেরা বাইরে থেকে অনেককে ডেকে আনেন। তারপর কর্তব্যরত দুই নারী চিকিৎসক ও পাঁচ-ছয়জন পুরুষ চিকিৎসককে স্যালাইনের স্ট্যান্ড দিয়ে আঘাত করেন তারা। অন্য ইন্টার্নরা সেখানে পৌঁছালে তাদের ওপরও চড়াও হয় ওই ব্যক্তিরা।’
এ ঘটনায় কর্মবিরতিতে যায় কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের ইন্টার্নরা। ডা. রাহাত তাদেরই একজন। তার দাবি—‘আমাদের সঙ্গে রোগীর সমস্যা হয়েছে বলে যে আমরা কাজ বন্ধ করেছিলাম তা নয়। নিরাপদ কর্মস্থলের দাবিতে আমরা কর্মবিরতি দিয়েছি। একইসঙ্গে হামলার সঙ্গে জড়িতদের ব্যাপারে প্রশাসন যেন ব্যবস্থা নেয়, সেই দাবি জানিয়েছি। ইন্টার্নরা দিনভর প্রচণ্ড পরিশ্রম করেন। তাই নিরাপদ কর্মস্থল ছাড়া আমাদের পক্ষে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়া সম্ভব নয়। আমাদের নিরাপদ কর্মস্থল এখন সময়ের দাবি। এটা আমাদের অধিকারও।’

এদিকে মিটফোর্ড হাসপাতালে ধর্মঘট চলাকালে কথা হয় বরিশাল থেকে আসা রোগীর আত্মীয় আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমরা সেই বরিশাল থেকে এসেছি। এখানে ধর্মঘট চলছে জানতাম না। তাই এসে যেন বিপদে পড়ে গেছি! হাসপাতালে তো এমন কর্মবিরতি রাখা ঠিক নয়। এতে রোগীরা বিপাকে পড়েন।’

একই অভিমত রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থেকে আসা সুমনা আক্তারের। তার বোনের পায়ের চিকিৎসা চলছে। একমাস পর তাকে পরবর্তী সেবা নিতে ডেকেছিলেন চিকিৎসক। তারাও এসে দেখেন মিটফোর্ড হাসপাতালে ধর্মঘট চলছে। এ কারণে সেখানকার বহির্বিভাগে রোগী দেখা বন্ধ ছিল। তিনি বলেন, ‘ইন্টার্ন কী আমরা তা বুঝি না। আমাদের কাছে সবাই সমান চিকিৎসক। তারা যদি চিকিৎসা না দেন তখন আমাদের কষ্ট হয়। সময়ও নষ্ট, টাকাও নষ্ট। রোগীর ব্যাপারে এমন করা কারও উচিত নয়।’

ধর্মঘট চলাকালে মিটফোর্ড হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে ইন্টার্ন চিকিৎসক শামসুজ্জোহা শামসের মন্তব্য, ‘সরকার বেড বাড়িয়ে দিচ্ছে, চিকিৎসক বাড়াচ্ছে; কিন্তু সে অনুপাতে জনবল দিচ্ছে না। এ কারণে পুরো চাপ আমাদের ওপর পড়ছে। শুধু চিকিৎসক বাড়লে তো হবে না, যতসংখ্যক নার্স-সুইপার দরকার, তা দেওয়া হচ্ছে না। আমরা একটা হেল্পডেস্ক বানাতে চাই। এজন্য সার্জারি, মেডিসিন, গাইনিতে ছয়জন লোক দরকার, কিন্তু তা পাচ্ছি না আমরা।’

উদাহরণ টেনে এই ইন্টার্ন চিকিৎসক বলেন, ‘রাতে মুমূর্ষু রোগী আসে বেশি। তখন বেড বা পাটি কিছুই ফাঁকা থাকে না। তাহলে তাদের কীভাবে চিকিৎসা দেবো? একটা ওয়ার্ডে সর্বোচ্চ দুটি বা তিনটি অক্সিজেন লাইন থাকে, মুমূর্ষু রোগী বেশি এলে আমরা কী করি বলুন তো। তখন রোগীর লোকেরা ক্ষেপে যান। এগুলো তো চিকিৎসকের কাজ না। সব কাজ যদি চিকিৎসক করে তাহলে তো জগাখিচুড়ি লাগবেই। এসব কারণে ঝামেলা তৈরি হয়। আমাদের মনমেজাজ সব সময় একরকম থাকে না। ২০ জনকে বুঝিয়ে বলার পর ২১তম জনকে যদি বলি এগুলো কী আমার ব্যাপার! তখন গণ্ডগোল বেঁধে যায়। আমাদের সঙ্গে মিড-লেভেলের স্যার-ম্যাডামরাও যুক্ত থাকেন। কিন্তু তারা তো বিবেকের দায়বোধ থেকে রাস্তায় নামতে পারেন না। রোগীর ভোগান্তি যেন না হয় তাই ইন্টার্নরা কর্মবিরতিতে যায়। তখন সিনিয়ররা ইনডোর সেবা চালু রাখেন।’

এক্ষেত্রে দুই পক্ষেরই সমস্যা দেখছেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ইন্টার্ন চিকিৎসকরা হাসপাতালের ছাত্র হওয়ার পরই চিকিৎসক হয়ে যায়। তারা কিন্তু এই পেশায় পুরোপুরি নতুন। আমরা অনেকটা সময় কাজ করতে করতে রোগীর হাবভাব বুঝেছি। মুমূর্ষু রোগী কীভাবে সামলাতে হয় তা জানি। এদিক দিয়ে ইন্টার্নদের দুর্বলতা থেকেই যায়।’

তবে রোগী বেশি থাকায় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ওপর চাপ পড়ে বলে স্বীকার করেছেন বিএমএ মহাসচিব। তার কথায়, ‘সকালবেলা প্রফেসররা থাকেন, কিন্তু বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত ইন্টার্নকেই সব রোগী সামলাতে হয়। এ কারণে তার ওপরে বেশি চাপ পড়ে যায়। তার পর্যায় থেকে এই চাপ নেওয়া কঠিন। সবদিক সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খান ইন্টার্নরা। আমার কাছে একজন রোগীর সঙ্গে ১০ জন লোক এলেও কোনও ব্যাপার না। কিন্তু ইন্টার্নরা বেশিসংখ্যক লোক দেখে আতঙ্কে থাকছে।’

এক্ষেত্রে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিয়েছেন ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘কোন জিনিসটা আগে করা, কোন জিনিসটা পরে করা; এসব জায়গায় আমরা পিছিয়ে আছি। তাদের যথাযথভাবে প্রশিক্ষণ দিতে পারছি না। রোগীদের পক্ষ থেকে চিকিৎসকদের কাছে আশা করা হয়— যেভাবে হোক বাঁচাতেই হবে। তার চিকিৎসা হতেই হবে। অনেক রোগী লাস্ট স্টেজে হাসপাতালে আসেন, ফলে চিকিৎসার আগেই নিভে যাচ্ছে তার জীবন। কিন্তু রোগী মারা গেলেই বলা হয়—ভালো রোগী নিয়ে এলাম, কিন্তু চিকিৎসক মেরে ফেললো! কোনও রোগী মারা গেলেই আমাদের অবহেলার কথা বলা হচ্ছে।’

হাসপাতালে যান্ত্রিক ঘাটতির দিকও তুলে ধরেন এই চিকিৎসক। তিনি জানান, মেডিসিন ওয়ার্ডে মাত্র একটি ইসিজি মেশিন। তার মতে, দুই-তিনটি ইসিজি মেশিন থাকলে চিকিৎসা সেবা দেওয়া সহজ হতো। এছাড়া দরকারি ওষুধও পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ শোনা গেলো তার মুখে। তিনি বললেন, ‘বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলসহ (বিএমডিসি) সরকারের প্রতিটি বিষয়ে দায়বদ্ধতা বাড়ানো প্রয়োজন। ইন্টার্ন, রোগী ও তার স্বজনসহ সবাইকেও দায়বদ্ধ করা যায়। এটি একমুখী প্রক্রিয়া নয়, উভয় দিক থেকেই এই দায়বদ্ধতা আসতে হবে।’

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রোগীর তুলনায় চিকিৎসকদের ওপর চাপ বেশি পড়ে যায়। যারা হাসপাতালে রোগী নিয়ে আসেন তাদের প্রত্যাশা থাকে অনেক। তারা চান রোগীকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে। রোগীর অ্যাটেন্ডেন্টের রোগী দেখার চাহিদা আমাদের নবীন চিকিৎসকরা সবসময় পূরণ করতে পারে না। যে চিকিৎসক ডাক্তারি পাস করে তার রোগীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করাটা আমার কাছে ঠিক বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয় না। রোগীর চাপ কমাতে পারলে এই দূরত্বটা কমে আসতে পারে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সিন্ডিকেট সদস্য ও অনকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সাদিয়া শারমীন বলেন, ‘আমাদের ধৈর্যের অভাব। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে কিছু জিনিস মেনে নিতে হয়। সেখানে অল্প কয়েকজন চিকিৎসক অনেক রোগীর সেবায় ব্যস্ত থাকেন। রোগীর অনুপাতে চিকিৎসকের হার অন্যতম একটি সমস্যা। কারণ চিকিৎসকরাও মানুষ। তাছাড়া ঢামেকের আউটডোরে মাত্র ১০ টাকার টিকিট কেটে রোগীরা সেবা নিতে পারেন। এত ন্যূনতম মূল্যে কোথাও চিকিৎসা পাওয়া সম্ভব নয়।’

বিএসএমএমইউ’র এই অধ্যাপক উল্লেখ করলেন, নারী চিকিৎসকরা সবখানেই হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তার ভাষ্য, “ইন্টার্ন মানে কিন্তু অলরেডি এমবিবিএস চিকিৎসক। তাকে পেছন থেকে উপহাস করে কথা বলা কিংবা মন্তব্য করা ও তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করা মোটেও শোভন নয়। আমরা তো এখন আর স্কুলে-কলেজে পড়ি না। আচরণগত সমস্যার মুখেই বেশি পড়তে হয় আমাদের। কিন্তু আমরা কখনোই ধর্মঘটে যেতে চাই না। আমাদের সব মেডিক্যাল কলেজ এখনও বিএসএমএমইউ’’র অধীনে আসেনি। মেডিক্যাল কলেজ নিয়ন্ত্রণ করে না আমাদের সিন্ডিকেট। এ বিষয়ে সিন্ডিকেটে আলোচনাও হয় না।”

ডা. সাদিয়া শারমীনের আশা, হয়তো মেডিক্যাল কলেজ সবই বিএসএমএমইউ’র অধীনে আসবে। তখন তারা সিন্ডিকেটে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারবেন।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নতুন ১১টি মেডিক্যাল কলেজ হয়েছে। একইসঙ্গে যেসব হাসপাতালে বেড ছিল ৫০ শয্যার, কোথাও কোথাও এটি বাড়িয়ে ২৫০ পর্যন্ত করা হয়েছে। এছাড়া থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩১ শয্যা থেকে বাড়িয়ে ৫০ শয্যা করা হয়েছে।’

তবে শুধু মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা বাড়িয়ে ও চিকিৎসক তৈরি করে এসব সমস্যার সমাধান করা যাবে না বলে মন্তব্য করেন জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকরা। তাদের অভিমত, এই অবস্থার পরিবর্তনে চিকিৎসক ও রোগীর অনুপাত ঠিক রাখা আর অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে সমাধান করতে হবে।

/জেএইচ/আপ-এনআই/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মিয়ানমার থেকে চোরাই পথে আসা ৫ টন কফি পাউডার জব্দ
মিয়ানমার থেকে চোরাই পথে আসা ৫ টন কফি পাউডার জব্দ
শিশুকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে ৪ কিশোর সংশোধনাগারে
শিশুকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে ৪ কিশোর সংশোধনাগারে
পাঞ্জাবের আশুতোষের ঝড়ও যথেষ্ট হলো না, মুম্বাইয়ের তৃতীয় জয়
পাঞ্জাবের আশুতোষের ঝড়ও যথেষ্ট হলো না, মুম্বাইয়ের তৃতীয় জয়
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমারকে শপথ করালেন প্রধান বিচারপতি
পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমারকে শপথ করালেন প্রধান বিচারপতি
পরীমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সত্য’, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন
পরীমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সত্য’, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন