শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেছেন, 'সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত রেখে নিজেদের এগিয়ে নিতে পারলেই বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।'
শনিবার (১৭ মার্চ) রাতে রাজধানীর রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে 'জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৮তম জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস-২০১৮' উপলক্ষে বইপড়া ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের উদ্যোগে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ‘শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক অথবা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর জীবনীর চেয়ে অনেক তথ্যবহুল জীবনী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। তিনি সোনার বাংলা গড়ার জন্য যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত দেশ আমরা আজ দেখতে পাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু দূরদর্শী চিন্তায় পারদর্শী ছিলেন। তার মতোই দূরদর্শী চিন্তার অধিকারী সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’
আইজিপি বলেন, ‘বাংলাদেশকে নিরাপদ করার প্রধান কারিগর হচ্ছে পুলিশ। ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ কালো রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তোলেন পুলিশ সদস্যরাই। রাজারবাগে শত শত পুলিশ সদস্য তাদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন। আমরা তাদেরই উত্তরসূরি।
জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ‘১৯৭১ সালের মতো ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালেও স্বাধীনতাবিরোধীচক্র নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। কিন্তু পুলিশ তাদের প্রতিরোধে পিছপা হয়নি। জঙ্গি উত্থানেরও চেষ্টা করা হয়েছে, সে ষড়যন্ত্র থেকে দেশকে পুলিশ মুক্ত করেছে। এখন বাংলাদেশের সর্বত্রই মাদকের থাবা বিরাজ করছে। মাদকের এই থাবা থেকে শিক্ষার্থীদের দূরে থাকতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বাংলাদেশ গড়ায় অগ্রণী ভূমিকা রাখতে মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ দৃঢ় প্রত্যয়ী।’
আগামী দিনে পুলিশের সব স্থাপনা শহীদ পুলিশ সদস্যদের নামে করা হবে ঘোষণা দিয়ে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নির্দেশেই ২৫ মার্চ কালো রাতে বাংলাদেশ স্বাধীন করতে থ্রি নট থ্রি রাইফেল দিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন আমাদের উত্তরসূরিরা, এই রাজারবাগের পুলিশ সদস্যরা।’
বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু এত বিশাল যে স্বল্প সময়ে তার কথা বলে শেষ করা যাবে না। তিনি শুধু পতাকা ও রাষ্ট্রই দেননি, বাঙালি জাতিকে আত্মসম্মানের সঙ্গে বাঁচতে শিখিয়েছেন। তিনি না হলে এই বাংলাদেশ আমরা পেতাম না।’
জঙ্গিবাদ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘কোথায় জঙ্গিবাদের শেকড়? আমরা সেটি তদন্ত করে দেখেছি। যারা স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতা করেছে তারাই আজকে দেশে জঙ্গিবাদের শেকড় গাড়ার চেষ্টা করছে।’
পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি (এইচআরএম) মো. মহসিন হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার বীর বিক্রম মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, সাবেক সচিব বীর প্রতীক মমিন উল্লাহ পাটোয়ারী, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া প্রমুখ।