বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারি অনুষদের ডিন ও নিউরোসার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। শনিবার (২৪ মার্চ) সকালে তিনি এই পদে যোগ দেন। তিনি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খানের স্থলাভিষিক্ত হলেন।
বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য হিসেবে যোগ দিয়ে সকাল ৯টায় প্রথমেই তিনি প্রতিষ্ঠানটির বি ব্লকে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর দুপুর ১২টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও কর্মকর্তারা তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খানের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়টির আচার্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়াকে এ নিয়োগ দেন। গত ১৫ মার্চ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। তার এ নিয়োগ তিন বছর স্থায়ী হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কে চিকিৎসা শিক্ষা, গবেষণা এবং চিকিৎসা সেবায় সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে ঘোষণার বাস্তব প্রতিফলন ঘটাতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।
তিনি ১৯৫৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের মিরের সরাই উপজেলার হাইতকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মাতার নাম প্রয়াত সুখদা বড়ুয়া এবং পিতার নাম প্রয়াত ডা. শুভংকর বড়ুয়া। তার স্ত্রী ডা. শিউলি চৌধুরী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস অ্যান্ড গাইনি বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসাবে কর্মরত আছেন। তিনি দুই সন্তানের জনক।
ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া ১৯৭৭ সালের এপ্রিলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। ২০০৪ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। শিক্ষকতা জীবনে তিনি সাবেক আইপিজিএম,আর এবং রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়)-এ ১৯৯১ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত সহকারী অধ্যাপক হিসেবে, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সাবেক আইপিজিএম,আর এবং বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। ২০১৫ সালে তিনি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তিনি ২০১০ সাল থেকে উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহণের আগে পর্যন্ত তিন বার সার্জারি অনুষদের ডিনের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ইতোমধ্যে তার ৪৭টিরও বেশি গবেষণালব্ধ প্রবন্ধ, নিবন্ধ দেশি-বিদেশি জার্নাল ও আন্তর্জাতিক নিউরোসার্জিকাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। গাইড হিসেবে তার তত্ত্বাবধানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন এমএস ইন নিউরোসার্জারি বিষয়ক ১৫টি থিসিস পরিচালিত হয়েছে।
রাজনৈতিক জীবনে তিনি আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য। ছাত্রজীবনে তিনি ১৯৬৮-১৯৭০ সালে শেখ কামালের নেতৃত্বাধীন ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাধারণ সম্পাদক এবং পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় কমিটির একজন সম্পাদক ছিলেন। তিনি স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ), বিএসএমএমইউ-এর প্রাক্তন সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে এই সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি।
বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ কলেজ অফ ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জন্স (বিসিপিএস)-এর সভাপতি, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ স্পোর্টস মেডিসিনের সভাপতি, সাউথ এশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অফ নিউরোসার্জন্স-এর সভাপতি এবং বাংলাদেশ সোসাইটি অফ নিউরোসার্জন্স-এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।