X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু বলতে বাধা, ফেসবুকে নিন্দার ঝড়

তাসকিনা ইয়াসমিন
২৫ মার্চ ২০১৮, ০৩:২৫আপডেট : ২৫ মার্চ ২০১৮, ০৭:০০
image

ফেসবুকে নিন্দার ঝড়

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যকে সংবর্ধনার অনুষ্ঠানে নেতা-কর্মীদের ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ বলতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ স্বাচিপের নেতা ইকবাল আর্সেলানর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে ফেসবুকে চলছে নিন্দার ঝড়া। তবে ইকবাল আর্সেলানর দাবি, তিনি এমন কিছু বলেননি। তিনি নোংরা রাজনীতির শিকার।

স্বাচিপ সভাপতি ও বিএসএমএমইউ এর বেসিক সাইন্স ও প্যারা ক্লিনিক্যাল সাইন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সেলান মোবাইলে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বলতে নিষেধ করেছি এটা ঠিক না।’

নোংরা রাজনীতি হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘ভিসিকে শুভেচ্ছা জানানোর সময় এ গ্রুপ অব পিপল, রেইজিং অব পিপল দে ওয়্যার রেইজিং স্লোগানস। আমাদের পলিটিকস আছে অনেক। আগের যিনি ভিসি ছিলেন তার পক্ষের লোকজন মনে করেন যে, তাদের উপাচার্য পরিবর্তনের ব্যাপারে আমার সংশ্লিষ্টতা ছিল। তাই তারা ক্ষুব্ধ।’

ইকবাল আর্সেলান বলেন, ‘আমি বলেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে, একাডেমিক ইন্সটিটিউটে তোমরা এরকমভাবে স্লোগান দিও না। এটাকে তারা রাজনীতি করে বলার চেষ্টা করছে। এটা আসলে নোংরা রাজনীতি। কারণ জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান আমার জাতীয় স্লোগান। এটা আমি দিতে নিষেধ করব কেন। আর আমি এই স্লোগান তো রাজপথে দিয়ে আসছি।’

ইকবাল আর্সেলানর দাবি, ‘আমি বলেছিলাম যে স্লোগান এখানে দেওয়ার দরকার নেই। সব জায়গায় স্লোগান দিতে হবে নট নেসেসারি।’  ট্রাক সংগঠনের নেতার সঙ্গে তুলনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। আমি বলেছি যে, আমাদের দুই একজন নেতা যে আচরণ করেছেন সেটা আসলে খুবই অশোভন। এটা আসলে কোন পেশাজীবী সংগঠনের আচরণ না।’

তিনি বলেন, ‘এগুলো পার্ট অব ন্যাস্টি পলিটিক্স। আমি সারাজীবন স্লোগান দিয়ে আসছি। আমি বেসিক্যালি ফ্রিডম ফাইটার। কিন্তু আমি সার্টিফিকেট নেইনি। কারণ এটা বিক্রি করবনা। আমি বিরোধী দলে থাকতে রাজপথ কাঁপিয়েছি। তাহলে আমি কোথায় কি করতে হবে সেটা তো আমার বলার অধিকার অবশ্যই আছে। সব জায়গায় সব কিছু শোভন না।’

এ প্রসঙ্গে বিএসএমএমইউ এর সিন্ডিকেট মেম্বার ও কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. হারিসুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগানটি আমাদের জাতিসত্ত্বার মুক্তির প্রাণশক্তি। এটার উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে আমরা সবখানে আমাদের অস্তিত্বের পরিচয় পাই বলে মনে করি। তাই এই স্লোগানটি  দেয়ার ক্ষেত্রে অন্তত কোন বাধা থাকা উচিত বলে আমি মনে করি না।’

এদিকে ফেসবুকে ইকবাল আর্সেলানর বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় উঠেছে। সুনান বিন ইসলাম নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘জয় বাংলা স্লোগান দিতে বাধা দেয়ার আপনি কে? একজন স্বনামধন্য প্রফেসর এবং নিজ গোত্রীয়দের কুরুচিপূর্ণূ ভাষায় সম্বোধন করা এবং মারার জন্য তেড়ে আসা – এই বয়সে কি ধরণের আচরণ ও পরিপক্কতার বহিঃপ্রকাশ। একটু বলবেন?’

মেহেদী হাসান নামে একজন লিখেছেন, ‘সারাজীবন বটতলায় জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দিলাম, তখন কি সেটা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না? আজ হঠাৎ করে বঙ্গবন্ধুতে বঙ্গবন্ধুর নামে স্লোগান দেয়া যাবে না কেন?  আজ যখন স্বাচিপ সভাপতি বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্লোগান দেয়া যাবে না, তখন কর্মিদের বিক্ষুব্ধ হওয়াটা স্বাভাবিক। যার নামে এ বিশ্ববিদ্যালয় তার নামে স্লোগান দেয়া যাবে না এ ফতোয়া তিনি কোথায় পেলেন? নাকি স্লোগানটা আমরা ধরেছিলাম বলে তার এই গাত্রদাহ।  নাকি রক্ত কথা বলে? কারণ যেটাই হোক, স্লোগান থামে নাই। থামবে না। আওয়াজ হবে, জয় বাংলা।’

ডা. গোলাম লিখেছেন, ‘আপনি স্বাচিপ সভাপতি হয়ে বললেন বিশ্ববিদ্যালয়ে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু  স্লোগান দেয়া যাবে নাহ! এখন আবার সাফাই পোস্ট দিলেন এসব করে নাকি আমরা নিজেদের মটর শ্রমিক সমিতির কাতারে নামায়ে দিচ্ছি। ইয়েস স্যার! আমি দীপ্ত কণ্ঠে বলতে চাই, এরকম জামাতি ভাবধারার চিকিৎসক সংগঠন আর তার শীর্ষ নেতার চেয়ে ওই খেটে খাওয়া শ্রমিক সংগঠনই আমার শ্রদ্ধার পাত্র। ’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘শত শত চিকিৎসকের সামনে আপনি যেভাবে জয় বাংলা কে  ভূপাতিত করলেন তাতে একজন মুজিব সৈনিক হিসেবে আমার লজ্জায় মাথা হেট হয়ে গেল। ’

ইকবাল আর্সেলান তার ফেসবুক আইডিতে লিখেন, ‘আজ সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নব নিযুক্ত ভাইস চ্যান্সেলর কে যেভাবে গম্ভীর পরিবেশে শুভেচ্ছা জ্ঞাপনের সময় স্লোগান দিতে বারণ করায়, একজন চিকিৎসক আমাদের গর্বের স্লোগান, আমাদের জাতীয় স্লোগান নিয়ে বিভ্রান্তিকর নোংরামি মূলক ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন, তার পক্ষে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু যারা চিল কান নিয়ে গেছে শুনে কানে হাত না দিয়ে চিলের পিছনে দৌড়ায় তাদের জন্য করুণা ছাড়া কিছু দেবার আছে বলে মনে হয় না। ’

তিনি তার অন্য একটি স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আজ সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নব নিযুক্ত ভাইস চ্যান্সেলর কে তার অফিস কক্ষে শুভেচ্ছা জ্ঞাপনের সময় আমাদের গর্বের, ঐতিহ্য আর সম্মানের জাতীয় সংগঠনের নেতৃবৃন্দের আচরণ সংগঠনকে ট্রাক শ্রমিক সমিতির পর্যায়ে নামিয়ে দিল।

ডা. মামুন আল মাহতাব লিখেছেন, ‘যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন থাকবে জয় বাংলা।’

আরিফ আনোয়ার লিখেন, ‘জয় বাংলা ! জয় বঙ্গবন্ধু! শুধু একটি স্লোগান নয়.. এটি আমাদের লড়াই এর প্রেরণা ... আমাদের স্বাধীনতার প্রেরণা...আমাদের বিপ্লবের প্রেরণা..স্বাধীন বাংলার লাখো শহীদের রক্তে রাঙানো ইতিহাস! জননেত্রী শেখ হাসিনা এর ছায়াদলে থেকে যখন কেউ এই জয় বাংলা এর বিরোধিতা করেন তখন তার আসল পরিচয় নিয়ে সংশয় জাগে!’

 

/টিওয়াই/এমএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
চরের জমি নিয়ে সংঘর্ষে যুবলীগ কর্মী নিহত, একজনের কব্জি বিচ্ছিন্ন
চরের জমি নিয়ে সংঘর্ষে যুবলীগ কর্মী নিহত, একজনের কব্জি বিচ্ছিন্ন
দাবদাহে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের তরল খাদ্য দিচ্ছে ডিএমপি
দাবদাহে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের তরল খাদ্য দিচ্ছে ডিএমপি
জাপানি ছবির দৃশ্য নিয়ে কানের অফিসিয়াল পোস্টার
কান উৎসব ২০২৪জাপানি ছবির দৃশ্য নিয়ে কানের অফিসিয়াল পোস্টার
ড্যান্ডি সেবন থেকে পথশিশুদের বাঁচাবে কারা?
ড্যান্ডি সেবন থেকে পথশিশুদের বাঁচাবে কারা?
সর্বাধিক পঠিত
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
ইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া