X
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪
৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

প্রত্যেক উপজেলায় অটিস্টিক শিশুদের বিশেষায়িত স্কুল হচ্ছে

এস এম আববাস
০৩ এপ্রিল ২০১৮, ১৮:৫৬আপডেট : ২৫ জুলাই ২০২২, ১৬:২০

সোমবার বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসে অটিস্টিক শিশুদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি ফোকাস বাংলা) অটিস্টিক শিশুদের লেখাপড়া নিয়ে অভিভাবকদের কষ্ট লাঘব হচ্ছে শিগগিরই। অটিস্টিকসহ প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষার জন্য প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে বিশেষায়িত প্রাথমিক বিদ্যালয় করছে সরকার। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করবে। স্কুল প্রতিষ্ঠায় ইতোমধ্যে সার্ভে করে ম্যাপিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. গিয়াস উদ্দিন আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সারাদেশে সার্ভে করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় একটি করে স্কুল করা হবে। অটিস্টিক শিশুদের শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা ও অন্যান্য সহায়তা প্রয়োজন। সে কারণে চারটি মন্ত্রণালয় যৌথভাবে স্কুলগুলো পরিচালনা করবে। খুব শিগগিরই স্কুল স্থাপনসহ অন্যান্য কাজ শুরু হবে।’

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা ও স্নায়ু বিকাশজনিত সমস্যাবিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান সায়মা ওয়াজেদ হোসেনের উদ্যোগে দেশে অটিজমসহ প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অটিজম শিশুরা বিষেশায়িত স্কুলে লেখাপড়া করার সুযোগ পাবে। বিশেষায়িত স্কুলে লেখাপড়ার পর দেশের মাধ্যমিক স্কুলে একীভূত শিক্ষার আওতায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হবে তারা।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে অটিজম ও নিউরো-ডেভেলপমেন্ট ডিজঅ্যাবলিটিজ (এনডিডি) শিক্ষার্থীদের জন্য একীভূত শিক্ষা ব্যবস্থা নীতিমালার খসড়া করা হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী সারা দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মাধ্যমিক স্কুলে একীভূত শিক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। সেসব স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারবে বিশেষায়িত এসব স্কুলের পঞ্চম শ্রেণি পাস করা শিক্ষার্থীরা।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সঠিক পরিসংখ্যানের জন্য ডিজঅ্যাবল ইনফরমেশন সিস্টেম নামের একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে তথ্যভাণ্ডার করা হয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত শনাক্ত করা প্রতিবন্ধীর সংখ্যা ১৫ লাখ ৫৮ হাজার ৫৪৩ জন। এরমধ্যে অটিজম ব্যক্তি রয়েছে ৪৪ হাজার ৬৭৫ জন। শারীরিক প্রতিবন্ধী ছয় লাখ ৯১ হাজার ৪৮৩ জন। দীর্ঘস্থায়ী মানসিক প্রতিবন্ধী ৫২ হাজার ৮৪৬ জন, শ্রবণ-দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছয় হাজার ৫১৫ জন, সেরিপালসি ৬৯ হাজার ৯৩৪ জন, ডাউন সিনড্রোম তিন হাজার ৫৫ জন এবং অন্যান্য প্রতিবন্ধী ১২ হাজার ৯১১ জন। এসব শিশুদের অনেকেই বিশেষায়িত স্কুলে লেখাপড়া করছে।  

জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের তথ্য মতে, সারাদেশে অটিস্টিক শিশুদের জন্য রয়েছে মাত্র ৬২টি স্কুল। এর মধ্যে সুইড বাংলাদেশ পরিচালত ৫০টি, কল্যাণী ইনক্লুসিভ স্কুলের সাতটি এবং সেনাবাহিনীর ‘প্রয়াস’ নামের একটি।  এছাড়া, বেসরকারি উদ্যোগে রাজধানীসহ সারাদেশেই অটিস্টিক শিশুদের স্কুল গড়ে উঠেছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চার মন্ত্রণালয় যৌথভাবে কাজটি শেষ করতে একটি কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করবে। প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় কমিটি গঠন করা হবে। এসব কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী স্কুলগুলোর পরিচালনাসহ অন্যান্য বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

স্কুলগুলোতে কতজন শিক্ষক নিয়োগ করা হবে জানতে চাইলে অতিরিক্ত সচিব মো. গিয়াস উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এটি এখনও ঠিক করা হয়নি। চার মন্ত্রণালয় বৈঠক করে চূড়ান্ত করা হবে।’

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন প্রতিবন্ধী কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ঢাকার মিরপুরে ১৫ তলা বিশিষ্ট মাল্টিপারপাস ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে গার্লস, বয়েজ ও প্যারেন্টস ডরমেটরি রয়েছে। প্রকল্প শেষ হলে অটিজম সংক্রান্ত ও অন্যান্য বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য ডরমেটরি, অডিটরিয়াম, ফিজিওথেরাপি সেন্টার, ডে-কেয়ার সেন্টার, বিশেষায়িত স্কুল থাকবে। আগামী জুন মাসে এ প্রকল্প শেষ হবে।

গত সোমবার (২ এপ্রিল) সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘২০১১ সালে জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন ক্যাম্পাসে একটি সম্পূর্ণ অবৈতনিক ‘স্পেশাল স্কুল ফর চিলড্রেন উইথ অটিজম’ করা হয়। পরে মিরপুর, লালবাগ, উত্তরা ও যাত্রাবাড়ীতে এবং ছয়টি বিভাগীয় শহরে এবং গাইবান্ধা জেলায় একটিসহ মোট ১১টি স্কুল চালু করা হয়। এসব স্কুলে ১৪৪ অটিজম বৈশিষ্ট্যের শিশু বিনা বেতনে লেখাপড়া করছে। এসব স্কুল পর্যায়ক্রমে জেলা ও উপজেলায় সম্প্রসারণ করার পরিকল্পনা রয়েছে।

জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা গেছে, ফাউন্ডেশনের আওতায় পরিচালিত ১০৩টি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রে একটি করে অটিজম ও নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী কর্নার স্থাপন করা হয়েছে। ওইসব কেন্দ্রে অটিজম শিশু ও ব্যক্তিদের কাউন্সেলিংসহ বিভিন্ন ধরনের সেবা দেওয়া হয়।

 

 

/এএম/
সম্পর্কিত
প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মাসিক ভাতা ৫ হাজার টাকা করার দাবি
পরিত্যক্ত ভবনেই চলছে দৃষ্টি, বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের পাঠদান
বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী শিশুদের অর্ধেকেরও বেশি স্কুলে যায় না: ইউনিসেফ
সর্বশেষ খবর
স্বচ্ছতা নিশ্চিতে আইনের সঙ্গে প্রযুক্তির ব্যবহার দরকার: কাজী নাবিল আহমেদ
স্বচ্ছতা নিশ্চিতে আইনের সঙ্গে প্রযুক্তির ব্যবহার দরকার: কাজী নাবিল আহমেদ
মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে দেশে ঢুকছে ভারী অস্ত্র
মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে দেশে ঢুকছে ভারী অস্ত্র
ছেলের এভারেস্টজয়ে বাবার মুখে হাসি, মা বললেন দুশ্চিন্তায় আছি
ছেলের এভারেস্টজয়ে বাবার মুখে হাসি, মা বললেন দুশ্চিন্তায় আছি
ঋণ খেলাপের দায়ে স্ত্রী-ছেলেসহ স্টিল মিল মালিকের কারাদণ্ড
ঋণ খেলাপের দায়ে স্ত্রী-ছেলেসহ স্টিল মিল মালিকের কারাদণ্ড
সর্বাধিক পঠিত
‘নীরব’ থাকবেন মামুনুল, শাপলা চত্বরের ঘটনা বিশ্লেষণের সিদ্ধান্ত
‘নীরব’ থাকবেন মামুনুল, শাপলা চত্বরের ঘটনা বিশ্লেষণের সিদ্ধান্ত
শনিবার ক্লাস চলবে ডাবল শিফটের স্কুলে
শনিবার ক্লাস চলবে ডাবল শিফটের স্কুলে
ভারতীয় পেঁয়াজে রফতানি মূল্য নির্ধারণ, বিপাকে আমদানিকারকরা
ভারতীয় পেঁয়াজে রফতানি মূল্য নির্ধারণ, বিপাকে আমদানিকারকরা
হিমায়িত মাংস আমদানিতে নীতিমালা হচ্ছে
হিমায়িত মাংস আমদানিতে নীতিমালা হচ্ছে
এনবিআর চেয়ারম্যানকে আদালত অবমাননার নোটিশ
এনবিআর চেয়ারম্যানকে আদালত অবমাননার নোটিশ