হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী মন্টি চাকমা ও দয়াসোনা চাকমাকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধারের দাবিতে নাগরিক সমাবেশে করেছে সচেতন নাগরিকরা। শুক্রবার (৬ এপ্রিল) বিকালে শাহবাগ জাতীয় যাদুঘরের সামনে পার্বত্য চট্টগ্রামে নিপীড়নবিরোধী নারী-যুব-ছাত্র সংগঠনগুলোর উদ্যোগে এই প্রতিবাদী নাগরিক সমাবেশ হয়।
সমাবেশ থেকে পাঁচটি দাবি উত্থাপন করেন সামাবেশকারীরা। দাবিগুলো হলো—অবিলম্বে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী চাকমা ও দয়াসোনা চাকমাকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করতে হবে, অপহরণকারী ও তাদের মদদাতাদের গ্রেফতার ও বিচার করতে হবে, পাহাড় ও সমতলে সংঘটিত সব ধর্ষণ-গুম-খুন-অপহরণের বিচার করতে হবে, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে অঘোষিত সেনাশাসন প্রত্যাহার করতে হবে এবং পাহাড় ও সমতলে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
সমাবেশে ১৯ টি সংগঠন সংহতি জানিয়েছে।
সমাবেশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সাইয়িদ ফেরদৌস বলেন, ‘পাহাড়ি অঞ্চলে বছরের পর বছর ধরে অঘোষিতভাবে সেনাশাসন অব্যাহত রয়েছে। সেখানকার মানুষ ন্যূনতম গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। রাষ্ট্র যাদের নিরাপত্তার জন্য নিয়োগ করেছে, তাদের হাতে সে নিরাপত্তা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। রাষ্ট্র পাহাড়িদের গণতান্ত্রিক অধিকার দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। আমরা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই পাহাড়িদের ওপর নির্যাতন বন্ধ করুন।’
বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর আহ্বায়ক নাসিমা নাজনীন বলেন,‘১৯৯৬ সালে কল্পনা চাকমাকে অপহরণ করা হয়েছে। কল্পনা চাকমার খোঁজ আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। আজকে শুধু পাহাড়ে নয়, সমতলেও চলছে নিপীড়ন-নির্যাতনের ঘটনা। কিছুদিন আগে মিরপুরে ২৫ হাজার বস্তিতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে বস্তিবাসীকে অসহায়ত্বের দিকে ঠেলে দিয়েছে এই রাষ্ট্র। গাইবান্ধায় আদিবাসীপল্লীতেও পুলিশ আগুন ধরিয়ে দিয়ে অসহায় মানুষকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। আজ দেশের প্রতিটি জায়গায় ধর্ষণ-গুম-হত্যার ঘটনা বেড়ে চলছে। দেশ অশান্তির দিকে চলে যাচ্ছে।’
শ্রমজীবী নারীমৈত্রী সভাপতি বহ্নি শিখা জামালী বলেন,‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতেও পাহাড়িরা অরক্ষিত।পাহাড়ে নারীদের অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছে। আবার তাদের উদ্ধারের দাবিতে আন্দোলন করলে আন্দোলনকারীদের ওপর সেনাবাহিনী হামলা চালিয়েছে।আজ যেভাবে দেশে গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হচ্ছে, এই গণতন্ত্রের জন্য মানুষ রাস্তায় নামছে না কেন?’
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রিন্স, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক দিলিশ রায় প্রমুখ।