X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অস্ত্রোপচারে নয়, এমআরআইয়ে ভয় পায় জেবা

তাসকিনা ইয়াসমিন
১৯ এপ্রিল ২০১৮, ২২:৫৩আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০১৮, ০৯:৪৯

 

বাবার সঙ্গে জেবা তাসমিয়া

নিজের অস্ত্রোপচারের সময় যত ঘনিয়ে তত বেশি শঙ্কা কাজ করছে জেবা তাসনিয়ার মনে। সে বলে, ‘আমার তো অস্ত্রোপচারে কোনও ভয় লাগে না। আমার ভয় লাগে এমআরআই করাতে গেলে।’ বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) বাংলা ট্রিবিউনের কাছে এভাবেই মনের ভাব প্রকাশ করে সে।



সাতক্ষীরা জেলা থেকে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত জেবা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি আছে। অপেক্ষা করছে তার দ্বিতীয় অস্ত্রোপচারের। জন্মগত ত্রুটি নিয়ে জন্ম হয় জেবার। বয়স যত বেড়েছে মুখের এক পাশের মাংস তত বেড়েছে।
হাসপাতালের বেডে শুয়ে জেবা স্বপ্ন দেখছে অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার। সে ভাসকুলার ম্যালফরমেশন রোগে আক্রান্ত।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ওর আগামী শনিবার (২১ এপ্রিল) অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা রয়েছে। এবার তার মাথার রক্ত চলাচল প্রক্রিয়া কমিয়ে আনার জন্য অস্ত্রোপচার করা হবে।’ তবে তিনি বলেন, ‘এটি হলেই যে ওর মুখের ফোলা অংশ কমে আসবে বিষয়টি এমন নয়। এই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার রক্ত চলাচল বন্ধ করার চেষ্টা করবো আমরা।’
জেবা তাসনিয়ার বাবা হাসান হাফিজুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, “এবার তো ওর দ্বিতীয় অস্ত্রোপচার। এর আগে যখন প্রথমবার অস্ত্রোপচার করানোর জন্য যায় তখন আমরা সবাই বসে আছি। ওকে ডাক দিয়েছে ও হেঁটে চলে যাচ্ছে। যাবার সময় শুধু একবার তাকিয়ে বলল, ‘আমি যাই।’ বাইরে আমরা সব আত্মীয়রা ভয়ে অস্থির। ওর কোনও টেনশনই নেই!”
মেয়ের চিকিৎসা ব্যয় নিয়ে শঙ্কিত ছিলেন বাবা। তিনি বলেন, ‘আমাকে আবুল কালাম আজাদ স্যার ডেকে বলেছেন যে, ওর অস্ত্রোপচারের সব খরচ হাসপাতাল থেকে বহন করা হবে। এ কথা শোনার পর থেকে আমাদের আর্থিক টেনশন কেটে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘ও অস্ত্রোপচারে কোনও ভয় পায় না, কিন্তু এমআরআই-কে (ম্যাগনেটিক রিজোন্যান্স ইমাজিং) খুব ভয় পায়। প্রথম যেদিন এমআরআই করা হলো ভয়ে অস্থির। কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছে।’
এ প্রসঙ্গে জেবা তাসনিয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলে, ‘আমাকে শুইয়ে দেওয়ার পর মেশিনের ভেতরে ঢোকায়। তখন ভেতরটা অন্ধকার হয়ে থাকে। আর একটা ঘড়ঘড় শব্দ হয়। শুনতে একদম ভালো লাগে না। আমি ভয় পাই না। কিন্তু আমার ভালো লাগে না।’
জেবা কবিতা লিখতে, আবৃত্তি করতে ও গান গাইতে পছন্দ করে। তার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডই তাকে সুযোগ করে দিয়েছে চিকিৎসা পাওয়ার।
জেবারা এক ভাই, এক বোন। মা নাসিমা খাতুন হাই স্কুলের শিক্ষক। বাবা হাসান হাফিজুর রহমান কলেজের লাইব্রেরিয়ান। একটি অনুষ্ঠানে পুরস্কার নিতে এসেই সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের দৃষ্টিতে পড়ে জেবা। তিনিই তাকে ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার সুযোগ করে দেন। জেবার মা চাকরিজীবী, তাই চাচি নাজমা রহমান তার সঙ্গে হাসপাতালে আছেন।
গত বছরের ২৩ অক্টোবর তার প্রথম অস্ত্রোপচার হয়। এরপর সে বাড়িতে যায়। গত ৫ মার্চ তাকে আবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

/এইচআই/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
টিভিতে আজকের খেলা (২৬ এপ্রিল, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (২৬ এপ্রিল, ২০২৪)
ট্রাকেই পচে যাচ্ছে ভারত থেকে আনা আলু, বাজারে ৫৫ টাকা কেজি
ট্রাকেই পচে যাচ্ছে ভারত থেকে আনা আলু, বাজারে ৫৫ টাকা কেজি
দুর্বৃত্তের হামলায় গুরুতর আহত যুবলীগ নেতা
দুর্বৃত্তের হামলায় গুরুতর আহত যুবলীগ নেতা
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা