পরিবেশ দূষণ রোধে পলিথিনের অবৈধ উৎপাদন ও বিপণন বন্ধে আইনের সঠিক প্রয়োগের ওপর জোর দিয়েছেন পরিবেশবাদীরা। একইসঙ্গে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা। রবিবার (২২ এপ্রিল) ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিশ্ব ধরিত্রী দিবস উপলক্ষে চেঞ্জ দ্য আর্থ ফর পিপল (সেপ) আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা এসব তুলে ধরেন।
বন অধিদফতরের সাবেক প্রধান সংরক্ষক ইউনুস আলী বলেন, ‘আইনের সঠিক বাস্তবায়ন না থাকায় অসাধু ব্যবসায়ীরা অবাধে নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন ও বাজারজাত করে আসছে। পলিথিনের কাঁচামাল দিয়ে এখন এক ধরনের টিস্যু পলিথিন উৎপাদন করা হচ্ছে। উৎপাদনকারীরা বলছে এটি পরিবেশবান্ধব। কিন্তু পলিথিনের মতোই টিস্যু পলিথিন পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।’
ইউনুস আলী মনে করেন, পলিথিনের কাঁচামালের অপব্যবহার রোধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব কাগজের চট বা কাপড়ের শপিং ব্যাগ ব্যবহারে জনসচেতনতামূলক প্রচারণার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন ভূঁইয়া একটি জরিপের ফল তুলে ধরেন মানববন্ধনে। তিনি জানান, ঢাকায় একটি পরিবার প্রতিদিন চারটি পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করে। সেই হিসাবে শুধু রাজধানীতে প্রতিদিনই দুই কোটির বেশি পলিথিন ব্যাগ একবার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া হয়। এগুলোর কারণে নালা-নর্দমা, খাল ডোবা ইত্যাদি ভরাট হয়ে পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পরে সামান্য বৃষ্টিতেই বৃদ্ধি পাচ্ছে জলাবদ্ধতার প্রকোপ।
এই আইনজীবীর ভাষ্য, ‘পলিথিন একটি নীরব ঘাতক। শত শত বছর পড়ে থাকলেও এটি মাটির সঙ্গে মিশে যাবে না। আর নগরজীবনে পলিথিনের সবচেয়ে ক্ষতিকারক দিক হলো যত্রতত্র তা ফেলে রাখলে তাতে নিষ্কাশন ব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটে। ঢাকার ৮০ ভাগ ড্রেন পলিথিন ব্যাগ কর্তৃক জমাট বেঁধে আছে। এসব রোধ করতেই পলিথিন নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।’
চেঞ্জ দ্য আর্থ ফর পিপলের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেছেন, ‘পরিবেশ রক্ষায় এখনও সারাদেশে থেকে পলিথিনের মূলোৎপাটন করার লক্ষ্যে এই দ্রব্য নিষিদ্ধের আইন কার্যকর করা জরুরি। পলিথিনের পরিবর্তে কাগজ ও চটের ব্যাগ সহজে মাটিতে মিশে যায়, তাই সেগুলো ব্যবহারের ওপর জোর দিতে হবে। তাছাড়া এগুলোর মাধ্যমে বৃদ্ধি পায় মাটির উর্বরতা।’
মানববন্ধনে আরও ছিলেন আয়োজক সংগঠনের সহ-সভাপতি আবু জাফর মল্লিক, আফতাব আহমেদসহ অন্যান্য সদস্য।