X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘আমার বাপধন নাই, আমি এই শোক ক্যামনে সইব?’

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৬ এপ্রিল ২০১৮, ০১:৪৮আপডেট : ২৬ এপ্রিল ২০১৮, ১১:৩৮

ঢামেকে বার্ন ইউনিটের দোতলায় বসে বিলাপ করছেন আমেনা বেগম ‘আমার বাপধন নাই। আমি এই শোক ক্যামনে সইব?’ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের দ্বিতীয় তলার লিফটের সামনে বসে বিলাপ করে কাঁদছিলেন গ্যাস লিকেজের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া মিনা আক্তারের (২৮) মা আমেনা বেগম। বুধবার সকালে মেয়ে-জামাতা ও নাতির অগ্নিদগ্ধ হওয়ার খবর শুনে ময়মনসিংহ থেকে ছুটে আসেন তিনি। পৌঁছেই মেয়ে ও নাতির মৃত্যু সংবাদ শুনতে পান।

মিরপুর ১১ নম্বরের ৩ নম্বর সড়কের একটি পাঁচতলা ভবনের নিচতলায় মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে গুরুতর দগ্ধ হন মিনা আক্তার (২৮), তার স্বামী মানিক আহমেদ (৩৫) ও তাদের সাত মাস বয়সী সন্তান তামিম আহমেদ। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় ইসলামিয়া হাসপাতালে নেন। পরে সেখান থেকে তাদের স্থানান্তর করা হয় ঢামেক বার্ন ইউনিটে। সেখানে সকালে তামিমকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। দুপুরে মারা যান ৮৫ শতাংশ দগ্ধ মিনা আক্তার।
আমেনা বেগম (৫০) বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। তামিমই তার প্রথম সন্তান। মেয়েটা বড় কষ্ট পেয়ে মারা গেল! আমার তিন মেয়ে, দুই ছেলের মধ্যে মিনা ছিল তৃতীয়।’

মিনার ভাবি শামিমা খাতুন (৩০) বলেন, ‘আমরা সকালে খবর পেয়েছি। এরপরই শাশুড়িকে নিয়ে ঢাকার পথে রওনা হই। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছানোর পরই শুনি আমার ননদ কিছুক্ষণ আগে মারা গেছে।’
মিনার মামা মোহাম্মদ আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দুজনের মরদেহ হাসপাতাল থেকে আমাদের আজ বুঝিয়ে দেয়নি। আমরা এখনও সবাই হাসপাতালেই আছি। কালকে মরদেহ বুঝিয়ে দিলে আমরা ওদের বাড়িতে নিয়ে যাব। সেখানেই তাদের দাফন করব।’
ঢামেক বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন ডা. পার্থ শংকর পাল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মানিক আহমেদের শরীরের ৯৫ ভাগেরও বেশি পুড়ে গেছে। তিনি শঙ্কামুক্ত নন।’
বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘৮০ শতাংশ বার্ন হলে আমরা রোগীকে বাঁচাতে পারি না। আমাদের দুর্ভাগ্য, প্রতিদিনই এমন অনেক রোগী দেখতে হচ্ছে। বিশেষ করে মিরপুর থেকে অনেক বেশি রোগী আসেন। এই অবস্থা পরিবর্তনের জন্য অবশ্যই সবাইকে একযোগে কাজ করা উচিত। বাড়ির মালিক, গ্যাস সংযোগের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা–এদের সবাইকে এজন্য জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত। তা না হলে এই মৃত্যুর মিছিল থামবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তির আওতায় না আনতে পারলে এ ধরনের বিপদ থেকে আমরা রেহাই পাব না। এই ধরনের বার্নের ক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার থাকে না। প্রতিদিনই এরকম ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে, আমরা কিছুই করতে পারছি না।’ তিনি এই বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক হওয়ার জন্য আহ্বান জানান।

 

/টিওয়াই/এএম/চেক-এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে করারোপ: আইনের বিশ্লেষণ
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে করারোপ: আইনের বিশ্লেষণ
ইউক্রেনের মার্কিন সামরিক সহায়তা আইনে স্বাক্ষর বাইডেনের
ইউক্রেনের মার্কিন সামরিক সহায়তা আইনে স্বাক্ষর বাইডেনের
নামাজ শেষে মোনাজাতে বৃষ্টির জন্য মুসল্লিদের অঝোরে কান্না
নামাজ শেষে মোনাজাতে বৃষ্টির জন্য মুসল্লিদের অঝোরে কান্না
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগে বৃষ্টির আভাস
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগে বৃষ্টির আভাস
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা