X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

দুই মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি বুধবার পর্যন্ত মুলতবি

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২২ মে ২০১৮, ১৬:২৩আপডেট : ২২ মে ২০১৮, ১৬:৩০

খালেদা জিয়া নাশকতা ও মানহানির দুই মামলায় বিএনপি চেয়ারপরসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি বুধবার (২৩ মে) পর্যন্ত মুলতবি করেছেন হাইকোর্ট।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২২ মে) বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। অন্যদিকে, খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন।

শুরুতেই আদালত জানতে চান, তিনি (খালেদা জিয়া) কুমিল্লার দায়রা জজ আদালতে জামিন ফাইল করেছেন। সেটা নিষ্পত্তি না করে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করা যায় কিনা? জবাবে আদালতের একটি নজির তুলে ধরে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৮ ধারা অনুসারে জামিনের ক্ষেত্রে সেশন কোর্টের যে ক্ষমতা, তা হাইকোর্টেরও আছে। কিন্তু সেখানে জামিন শুনানির জন্য লম্বা তারিখ দেওয়া হয়েছে। আমরা শর্ট তারিখের জন্য আবেদন দিয়েছি। আদালত (দায়রা আদালত) কোনও আদেশ দেননি। এই জন্য আমরা এখানে (হাইকোর্টে) এসেছি।’

খন্দকার মাহবুব হোসেন আরও বলেন, ‘মামলার এফআইআর-এ সুনির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ নেই। যে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে, সেখানে তাকে (খালেদা জিয়াকে) ৫১ নম্বর আসামি করা হয়েছে। সেখানে সুনির্দিষ্ট করে কোনও অভিযোগ বলা হয়নি।’

এ সময় সম্পূরক চার্জশিট সম্পর্কে আদালত জানতে চান। জবাবে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘প্রথম চার্জশিটে ৭৮জনকে আসামি করা হয়। আর সম্পূরকে করা হয় ৭৭ জনকে। এখানে একজনকে বাদ দেওয়া হয়। ধারাও পরিবর্তন করা হয়। এই মামলায় যারা গ্রেফতার আছেন, তাদের প্রায় সবাই জামিনে আছেন। ইতোপূর্বে এই মামলায় অন্যান্য আসামিরা এই বেঞ্চ থেকে জামিনও নিয়েছেন।’

এ পর্যায়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আদালত বলেন, ‘তাহলে আমরা জামিনের বিষয়ে রুল দিয়ে দেই।’ জবাবে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘না আমরা রুল চাই না। আমরা জামিন চাই।’

তখন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘আমি বলতে চাই।’

আদালত মাহবুবে আলমকে বলেন, ‘আপনি বলুন। কিন্তু মাহবুবে আলম  আদালতকে বলেন, ‘আমি আগামীকালকে (বুধবার) বলবো।’ আদালত তখন  খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি আগামীকাল বুধবার (২৩ মে) ২টা পর্যন্ত মুলতবি করেন।

এর আগে গত ২০ মে কুমিল্লা ও নড়াইলের পৃথক তিন মামলায় হাইকোর্টের অনুমতির পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষে জামিন আবেদন দাখিল করা হয়। এরপর গত ২১ মে আদালতে খালেদা জিয়ার দুই মামলায় জামিন শুনানির দিন ধার্য থাকলেও প্রস্তুতি না থাকার বিষয়ে আদালতকে অবহিত করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এরপর আদালত তার আবেদন মঞ্জু করে এ বিষয়ে  আজ মঙ্গলবার (২২ মে) শুনানির দিন ধার্য করেন। এদিন আংশিক শুনানি করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী। এরপর শুনানি আগামীকাল বুধবার (২৩ মে) পর্যন্ত মুলতবি করেন আদালত।

পরে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘হত্যা ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের দুটি পৃথক অভিযোগে কুমিল্লায় দুটি মামলা এবং মানহানির অভিযোগে নড়াইলের এক মামলায় আমরা হাইকোর্টে জামিন আবেদনের অনুমতি চেয়ে আবেদন করি। আদালত আমাদের আবেদন মঞ্জুর করে মামলার জামিন আবেদন অ্যাফিডেবিট আকারে হাইকোর্টে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সে আদেশ অনুসারে এ তিন মামলার জামিন আবেদন দায়ের করা হয়েছে।

কিন্তু ওই তিন মামলার হত্যা ও মানহানির মামলা মধ্যে দুটি শুনানির জন্য সোমবার হাইকোর্টের কার্যতালিকায় ওঠে। মামলা দুটি হলো:

হত্যার অভিযোগে কুমিল্লায় এক মামলা

২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে একটি বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হয়। এই ঘটনায় সাত জন যাত্রী মারা যান এবং আরও ২৫/২৬ জন গুরুতর অসুস্থ হন। এ ঘটনায় পরদিন (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকাল তিনটায় চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই নুরুজ্জামান ৫৬ জনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে মামলা করেন। পরে এ মামলায় আদালতে অভিযোগ পত্র দেওয়া হয়। বিচারকালে দায়রা আদালতে খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। সেই জামিন আবেদনের পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৭ জুন দিন ধার্য রাখা হয়েছে। কিন্তু এ অবস্থায় গত ৫ এপ্রিল এ মামলায় খালেদা জিয়াকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়। তাই ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৮ ধারায় হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।

মানহানির অভিযোগে নড়াইলে মামলা

২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন খালেদা জিয়া। এ ঘটনায় একই বছরের ২৪ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নড়াইলে মানহানির মামলা করা হয়। স্থানীয় এক  মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রায়হান ফারুকি ইমাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

নড়াইলের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে মামলাটি বিচরাধীন রয়েছে। এ মামলায় এ বছরের ১৬ এপ্রিল খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে তার আইনজীবীরা আবেদন করেন। কিন্তু বিচারক বাদীর উপস্থিতিতে জামিন শুনানির জন্য গত ৮ এপ্রিল শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করেছিলেন। এরপর নির্ধারিত দিনে শুনানি নিয়ে পুনরায় জামিন শুনানির জন্য আগামী ২৫ মে দিন ধার্য রেখেছেন আদালত। এ অবস্থায় বিচারাধীন মামলায় খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা তার জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন।

 

/বিআই/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘বিএনপি যে কোনও উপায়ে ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে’
‘বিএনপি যে কোনও উপায়ে ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে’
ফেসবুকে নিজের সমালোচনা দেখে হাসি পায় সাকিবের
ফেসবুকে নিজের সমালোচনা দেখে হাসি পায় সাকিবের
উপজেলা নির্বাচনে পলকের হস্তক্ষেপ ঠেকাতে হাইকোর্টে রিট
উপজেলা নির্বাচনে পলকের হস্তক্ষেপ ঠেকাতে হাইকোর্টে রিট
নাগরিক জীবনের সব ক্ষেত্রে পুলিশের অবস্থান রয়েছে: ডিএমপি কমিশনার
নাগরিক জীবনের সব ক্ষেত্রে পুলিশের অবস্থান রয়েছে: ডিএমপি কমিশনার
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
সিনিয়র শিক্ষককে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি জুনিয়র শিক্ষকের
সিনিয়র শিক্ষককে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি জুনিয়র শিক্ষকের
ভুল সময়ে ‘ঠিক কাজটি’ করবেন না
ভুল সময়ে ‘ঠিক কাজটি’ করবেন না