X
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
৫ বৈশাখ ১৪৩১

এক কাতারে হাজারো মানুষের ইফতার

চৌধুরী আকবর হোসেন
২৭ মে ২০১৮, ১৭:৫৭আপডেট : ২৮ মে ২০১৮, ২১:৩৩


বায়তুল মোকাররমে ইফতার করছেন মুসল্লিরা একটি বড় থালায় ইফতার সামনে নিয়ে আজানের জন্য অপেক্ষা করছেন ৫ জন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ব্যবসায়ী আব্দুস সামাদ, একই থালায় ইফতারের সামনে বসে আছেন দিনমজুর রফিকুল ইসলাম। এভাবে ৪-৫ জনের ছোট ছোট ভাগ হয়ে ইফতার নিয়ে অপেক্ষ করছেন প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষ। তারা সবাই ভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। এ চিত্র গতকাল শনিবারের (২৬ মে)। এভাবে কোনও ভেদাভেদ ছাড়াই রমজান মাসের প্রতিদিন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ইফতার করেন কয়েক হাজার মানুষ।
২০০৯ সাল থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা) বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে রোজাদারদের জন্য ইফতারের আয়োজন করে আসছে। মসজিদে এক কাতারে বসে হাজারো মানুষের ইফতার ভিন্ন রকম আবহ সৃষ্টি করে।
ইফা’র এ ইফতারের আয়োজনে ধনী-গরিব কোনও পার্থক্য নেই। আছে বয়স্ক, শিশু, ছিন্নমূল, প্রতিবন্ধীসহ সবাই। প্রতিদিনই ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ আসরের নামাজের পর থেকেই বায়তুল মোকাররমে জড়ো হতে থাকেন। ইফতারের সময় যত ঘনিয়ে আসে মুসল্লিদের ভিড় তত বাড়তে থাকে। উত্তর-দক্ষিণ পাশের অস্থায়ী মঞ্চে চলতে থাকে ধর্মীয় আলোচনা, কোরআন তিলাওয়াত, হামদ-নাত পাঠ। পাশাপাশি আসরের নামাজের পর থেকেই এখানে শুরু হয় ইফতারির আয়োজন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মীরা থালায় তুলতে থাকেন ইফতারসামগ্রী। ইফতার করতে আসা অনেকেই স্বেচ্ছায় ইফতারসামগ্রী বিতরণে সহায়তা করেন। ইফতারের মেন্যুতে থাকে শরবত, কলা, ছোলা, পেয়াজু, বেগুনি, মুড়ি, শসা ও জিলাপি। সবার জন্য একই মেন্যু।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক (মসজিদ ও মার্কেট বিভাগ) মুহাম্মদ মহীউদ্দিন মজুমদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বড় পরিসরে ইফতারের এ আয়োজন শুরু হয়েছে ২০০৯ সাল থেকে। এর আগে ছোট পরিসরে ইফতার করানো হতো মুসল্লিদের। নানা ধরনের মানুষ এখানে ইফতার করতে আসেন। প্রতিদিনই ৩ থেকে ৪ হাজার মুসল্লি মসজিদে বসে ইফতার করছেন।’
বায়তুল মোকাররমে ইফতারের আগমুহূর্তের চিত্র রমজান মাসজুড়ে এ ইফতার আয়োজনের জন্য ২৬ লাখ টাকা বরাদ্দ রয়েছে বলে জানান মহীউদ্দিন মজুমদার। তিনি বলেন, ‘সরকারের অর্থায়নে এ আয়োজন। যদিও এখন অনেকে এ আয়োজনে সহায়তা করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন। রমজানের আগেই টেন্ডারের মাধ্যমে ইফতার সরবরাহের কাজ দেওয়া হয়। আমাদের লোকজন সেগুলো বণ্টন করে। খাবারের মানের বিষয়টিও যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে খেয়াল রাখা হয়।’
ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে এ ইফতার নিয়ে আগ্রহ রয়েছে মুসল্লিদেরও। অনেকই শুধুমাত্র একসঙ্গে হাজার মানুষের সঙ্গে ইফতার করার জন্য বায়তুল মোকাররমে আসেন। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পথচারী, কর্মজীবী, ভাসমান ও ছিন্নমূল মানুষ আসেন এখানে ইফতার করতে।
পল্টনে ব্যবসার কাজে এসেছিলেন নারায়ণগঞ্জের মফিদুল ইসলাম। ইফতারের সময় হওয়ায় চলে এসেছেন বায়তুল মোকাররমে। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ইফতারের সময় বায়তুল মোকাররম মসজিদে হাজারো মানুষ আছে, কিন্তু কোনও ভেদাভেদ নেই। এ পরিবেশে ইফতার করতেই এখানে এসেছি।’
মিরপুর থেকে এসেছেন নুরুল ইসলাম। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অনেক মানুষের সঙ্গে ইফতার করতেই এখানে এসেছি। মুসল্লিরা সারি বেঁধে ইফতারের অপেক্ষা করেন, দোয়া হয়। সবার মধ্যে ভিন্ন রকমের উৎসাহ থাকে।’
ইসলামিক ফাউন্ডেশন ছাড়াও বায়তুল মোকাররমে বেসরকারি উদ্যোগেও ইফতারের আলাদা আয়োজন হয়। বায়তুল মোকাররম ব্যবসায়ী সমিতিসহ আশপাশের ব্যবসায়ী, তাবলিগ জামাতের উদ্যোগেও ইফতারের আয়োজন করা হয়।

/সিএ/এইচআই/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
আর্সেনালকে হতাশায় ভাসিয়ে সেমিফাইনালে বায়ার্ন
চ্যাম্পিয়নস লিগআর্সেনালকে হতাশায় ভাসিয়ে সেমিফাইনালে বায়ার্ন
টাইব্রেকারে ম্যানসিটির শিরোপা স্বপ্ন ভাঙলো রিয়াল
চ্যাম্পিয়নস লিগটাইব্রেকারে ম্যানসিটির শিরোপা স্বপ্ন ভাঙলো রিয়াল
গলায় কই মাছ আটকে কৃষকের মৃত্যু
গলায় কই মাছ আটকে কৃষকের মৃত্যু
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন: কোন পদে লড়ছেন কে
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন: কোন পদে লড়ছেন কে
সর্বাধিক পঠিত
‘ভুয়া ৮ হাজার জনকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে’
‘ভুয়া ৮ হাজার জনকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে’
হজ নিয়ে শঙ্কা, ধর্ম মন্ত্রণালয়কে ‍দুষছে হাব
হজ নিয়ে শঙ্কা, ধর্ম মন্ত্রণালয়কে ‍দুষছে হাব
এএসপি বললেন ‌‘মদ নয়, রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলাম’
রেস্তোরাঁয় ‘মদ না পেয়ে’ হামলার অভিযোগএএসপি বললেন ‌‘মদ নয়, রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলাম’
এবার নায়িকার দেশে ‘রাজকুমার’ 
এবার নায়িকার দেশে ‘রাজকুমার’ 
‘আমি এএসপির বউ, মদ না দিলে রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেবো’ বলে হামলা, আহত ৫
‘আমি এএসপির বউ, মদ না দিলে রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেবো’ বলে হামলা, আহত ৫