সারাদেশে যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতর । ঈদের দিনের শুরুই হয় ঈদগাহে মুসল্লিরা ঈদের জামাতে অংশ নেওয়ার মধ্য দিয়ে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে আদায় করলেও বৃষ্টি-বাদল না হলে ঈদের নামাজ হয় মসজিদের বাইরে খোলা মাঠে। অন্য মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর মতো বাংলাদেশেও এই রেওয়াজ প্রচলিত শত শত বছর ধরে। বাংলাদেশে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ এবং গত বছর থেকে দিনাজপুরের গোর-এ শহীদ বড় ময়দানে ঈদের জামাতে অংশ নিচ্ছেন কয়েক লাখ মুসল্লি। শুধু বাংলাদেশ নয় সারা বিশ্বের মুসলমানরা ঈদের নামাজ আদায় করেন ঈদগাহে। সৌদি আরবে ফজরের নামাজ আদায়ের পর সূর্যোদয়ের সময় বড় বড় খোলা মাঠে অনুষ্ঠিত হয় ঈদ জামাত।
কিন্তু, পাঁচ ওয়াক্তের ও জুমার জামাত মসজিদের ভেতরে হলেও কেন ঈদের নামাজ মসজিদের বদলে খোলা মাঠে হয় এ প্রশ্ন ভিড় করে অনেকের মনে। এ বিষয়টি জানতে রাজধানীর একটি মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, হযরত মোহাম্মদ (স.) যেভাবে নামাজ পড়েছেন, তার উম্মত হিসেবে আমরা সেটা অনুসরণ করি। মহানবী তাহাজ্জুদের নামাজ ঘরে একা পড়ছেন। অন্যদিকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতবদ্ধ হয়ে পড়েছেন মসজিদে। অন্যদিকে, ঈদের জামাতে অংশ নিয়েছেন উন্মুক্ত মাঠে।
মাওলানা আব্দুর রহমান আরও বলেন, হজরত মোহাম্মদ (স.) তাঁর জীবনের শেষ দশ বছর ঈদের জামাতে নিজেই ইমামতি করেছেন। আর তার জীবনে একবার আবহাওয়াজনিত কারণে মসজিদে ঈদের নামাজ পড়েছেন বলে হাদিসে উঠে এসেছে। ফলে মহানবীর দেখানো পথই আমাদের জন্য অনুসরণীয়। তবে কোনও এলাকায় মাঠ না থাকলে মসজিদে ঈদের জামাত পড়লেও নামাজ আদায় হয়ে যাবে।
অন্যদিকে, ঈদগাহে ঈদ জামাতে অংশ নেওয়ার মধ্য দিয়ে মুসলমানদের মধ্যে সম্প্রীতি, ও সৌহার্দ্য বাড়ে বলে জানান রাজধানীর লালবাগ জামিয়া কুরানিয়া আরবিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন। তিনি বলেন, একটি মসজিদে ছোট একটি এলাকার মানুষ একত্রিত হয়ে ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন। কিন্তু একটি এলাকায় যতগুলো মসজিদ থাকে তত ঈদগাহ থাকে না। ঈদগাহে অনেক বড় এলাকার মানুষ একত্রিত হয়। কোথাও কোথাও কয়েক মহল্লা, পাড়া বা গ্রামের মানুষ এক ঈদগাহে একত্রিত হয়। এরমধ্য দিয়ে পুরো এলাকার ধনী-গরিবসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ মিলিত হয়। একত্রিত হয়ে নামাজ পড়ে, মোনাজাত করে, কোলাকুলি করে, সবার মধ্যে সম্প্রতি বৃদ্ধি পায়।
সাখাওয়াত হোসাইন আরও বলেন, মসজিদের সামনে বড় খালি জায়গা থাকলে সেখানে ঈদের নামাজ হতে পারে। তবে মসজিদের সামনে বড় খালি জায়গা না থাকায়, বড় মাঠে ঈদ জামাতের আয়োজন বেশি হয়। মহানবী (স.) নিজেও মাঠে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন।