X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

নন-এমপিও শিক্ষকদের আন্দোলনের ‘রহস্য’ কী

এস এম আববাস
১৮ জুন ২০১৮, ২৩:২০আপডেট : ১৯ জুন ২০১৮, ১৩:৪৬





নন-এমপিও শিক্ষক ও কর্মচারীদের অবস্থান আন্দোলন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতির পরও নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা) শিক্ষকরা এমপিওভুক্তির দাবিতে আন্দোলন করছেন। রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় ঈদ উদযাপন করেছেন তারা। সোমবার (১৮ জুন) সকাল থেকে পালন করা হচ্ছে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি। এ পরিস্থিতিতে এই আন্দোলনের পেছনে অন্য কোনও ‘রহস্য’ থাকতে পারে বলে মনে করছেন সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
বাজেটে সুস্পষ্ট নির্দেশনা না থাকার অভিযোগে গত ১০ জুন দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির দাবিতে এ আন্দোলন শুরু হয়েছে।
শিক্ষকদের এই কর্মসূচির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির জন্য সরকারপ্রধান প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তারা কারও ওপর আস্থা রাখছেন না। উল্টো গালাগালি করে যাচ্ছেন। কেন গালাগাল করছেন? আর আন্দোলনইবা কী কারণে করছেন? নিশ্চয়ই কোনও না কোনও রহস্য আছে।’
তিনি বলেন, ‘ডিসেন্ট ওয়েতে দাবি আদায়ের আন্দোলন করতে হয়। যেহেতু সরকারপ্রধান প্রতিশ্রুত দিয়েছেন, তাদের বিশ্বাস রাখা উচিত ছিল।’
সচিব বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী আমাকে কি বারবার জানাবেন? তাদের বিশ্বাস রাখতে হবে। বুঝতে হবে সরকার একসঙ্গে সব প্রতিষ্ঠানের এমপিও দিতে পারবে না। যে সংখ্যক দেওয়া সম্ভব, তা বাছাই করে ক্যাটাগরি অনুযায়ী দেওয়া হবে।’
প্রথম পর্যায়ে ১ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সচিব বলেন, ‘প্রথম পর্যায়ে ১ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে, বিষয়টি ওপেন সিক্রেট।’
আন্দোলন-কর্মসূচি শুরুর দিন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন জানিয়েছিলেন, এমপিওভুক্তি করা হবে। শিক্ষকরা যেন রাস্তায় না থেকে ঘরে ফিরে যান। এর পরদিন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষকদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান। নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার জন্য নীতিমালা প্রস্তুত হয়েছে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।
এরপর গত বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে এমপিও নীতিমালা জারি করে সরকার। ওই নীতিমালা অনুযায়ী নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে।
এত কিছুর পরও শিক্ষকরা আন্দোলন-কর্মসূচি দিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন। বারবার শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা সচিব এমপিওভুক্তির আশ্বাস দিলেও শিক্ষক নেতারা তাতে আস্থা রাখতে পারেননি।

আরও পড়ুনলাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা নন-এমপিও শিক্ষকদের

শিক্ষক নেতারা বলেছেন, শিক্ষামন্ত্রী ও সচিবের কথা বিশ্বাস করি না। কবে কখন এমপিওভুক্ত হবে তার সুনির্দিষ্ট ঘোষণা চাই।


ঈদের আগে শুরু হওয়া আন্দোলনের নবম দিন সোমবার থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকরা। শিক্ষক নেতারা বলছেন, ‘সুনির্দিষ্ট ঘোষণা ছাড়া রাজপথ ছাড়বো না।
শিক্ষকদের এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সরকারপ্রধানের প্রতিশ্রুতির পরও শিক্ষকরা কেন আন্দোলন করছেন, তা বুঝতে পারছি না। মন্ত্রী-সচিব বলার পরেও তারা বিশ্বাস করছেন না। নীতিমালা জারি করা হয়েছে নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার জন্য। ক্যাটাগরিক্যালি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হবে। তাহলে কী কারণে আন্দোলন করছেন, নিশ্চয় কোনও না কোনও রহস্য আছে।’
প্রস্তাবিত বাজেট এমপিও দেওয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা প্রসঙ্গে সচিব বলেন, ‘বাজেটে সব বিষয় উল্লেখ থাকে না। অনেক বিষয়ে অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়, তা উল্লেখ করা হয় না। দুর্যোগ, বন্যার জন্য কোনও বরাদ্দ উল্লেখ থাকে না। থোক বরাদ্দ রাখা হয়। সে বিষয়টি বুঝতে হবে। তার মানে এমপিওভুক্তির জন্য টাকা নেই তা নয়।’
প্রতিষ্ঠান এমপিও করার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। প্রথমে আবেদন গ্রহণ করা হবে। এরপর মাঠপর্যায় থেকে তথ্য যাচাই-বাছাই করা হবে। পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কেউ জোর করলেই তা করা সম্ভব নয়। সবাইকে পদ্ধতি অনুসরণ করে এমপিওভুক্তির আওতায় আসতে হবে।
নতুন এমপিও নীতিমালা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা। নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফোরেশন সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, “২০ বছর আগে স্বীকৃতি পেয়েছি। নীতিমালার আগে এমপিওভুক্ত হওয়ার শর্ত ছিল স্বীকৃতি। এখন ৮০ শতাশ পাসের হার থাকতে হবে। যেখানে শিক্ষা বোর্ডে পাসের এত না, তাহলে আমাদের এমপিও হবে কীভাবে? প্রধানমন্ত্রী ৫ জানুয়ারি বলেছিলেন ‘একযোগে এমপিও দেওয়া হবে।’”
মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির না চাওয়ার অঙ্গীকারপত্র দিয়ে স্বীকৃতি নিয়েছেন। সেই অনুযায়ী তো তারা এমপিও চাইতেই পারেন না। কিন্তু দেশের সব নাগরিকের দায়ই সরকার নেয়। সে কারণে এমপিওভুক্তি করা হয়। আমরা বলেছি এমপিওভুক্ত হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।’

 

/এইচআই/চেক-এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মার্কিন কংগ্রেসে ইউক্রেনের বহুল প্রতীক্ষিত সহায়তা প্যাকেজ পাস
মার্কিন কংগ্রেসে ইউক্রেনের বহুল প্রতীক্ষিত সহায়তা প্যাকেজ পাস
এক্সপ্রেসওয়েতে বাস উল্টে প্রাণ গেলো একজনের, আহত ১০
এক্সপ্রেসওয়েতে বাস উল্টে প্রাণ গেলো একজনের, আহত ১০
বেসিস নির্বাচনে ১১ পদে প্রার্থী ৩৩ জন
বেসিস নির্বাচনে ১১ পদে প্রার্থী ৩৩ জন
সিঙ্গাপুরে রডচাপায় বাংলাদেশি তরুণের মৃত্যু
সিঙ্গাপুরে রডচাপায় বাংলাদেশি তরুণের মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
মিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিমিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের জানাতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের জানাতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক