গৃহশ্রমিকদের সুরক্ষা ও কল্যাণে ‘গৃহশ্রমিক সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি-২০১৫’ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে উন্নয়নমূলক সংস্থা বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস)। শনিবার (৩০ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ‘অধিকার ও মর্যাদার জন্য সংগঠন গড়ে তোল’ দাবি নিয়ে গৃহশ্রমিক সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে এই দাবি জানানো হয়।
সম্মেলেন থেকে গৃহশ্রমিকদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা, নির্যাতন ও সহিংসতা বন্ধ এবং ন্যায্য মজুরি, ক্ষতিপূরণ ও শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিতের দাবিও জানানো হয়।
সম্মেলনে বক্তারা বলেন, গৃহশ্রমিকের অধিকার মানবাধিকার, কিন্তু বর্তমানে এই অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। গৃহশ্রমিকদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। সরকার ইতোমধ্যে গৃহশ্রমিক সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতিমালা-২০১৫ ঘোষণা করেছে। তবে এখন বিষয়টিকে আইনের সুরক্ষায় এনে গৃহশ্রমিকদের ওপর নির্যাতন প্রতিরোধ ও তাদের মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করার সময় এসেছে। আমরা গৃহশ্রমিকদের ওপর নির্যাতন বন্ধে সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি বাস্তবায়নের দাবি করছি।
মানবাধিকারকর্মী ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন,‘গৃহশ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ট্রেড ইউনিয়নের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। যদিও রাষ্ট্র সরাসরি দায়িত্ব পালন করে না। এর জন্য নানা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গৃহশ্রমিকদের অধিকার বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এজন্য গৃহশ্রমিক সুরক্ষা নীতিমালা-২০১৫ এর বাস্তবায়ন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘শ্রমের মর্যাদা দেওয়ার উন্নত মানসিকতা সবার মধ্যে থাকতে হবে। কারণ তারা শ্রমের বিনিময়ে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করে। তারা পরজীবী নয়।’
গৃহ শ্রমিকদের সম্মান দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একজন গৃহশ্রমিককে তার ন্যায্য মজুরি ও সম্মান দিতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশের মানুষ যে কোনও অবস্থানে থাকুক না কেন তাদের মর্যাদা দিতে হবে। হোন না সে গৃহ শ্রমিক। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অনুযায়ী প্রতিটি মানুষকে মর্যাদা দিতে হবে। যদিও এখনও আমাদের মাঝে সেই চেতনা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।’
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকারকর্মী ও ডিডব্লিউআরএন'র আহ্বায়ক ড. হামিদা হোসেন, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্ট্যাডিজ এর উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শাহ মো. আবু জাফর, নাইম আহসান জুয়েল প্রমুখ। এছাড়াও ঢাকা শহরের ১৯ এলাকার গৃহশ্রমিক সংগঠিতকরণের কাজে নিয়োজিত নেতা এবং গৃহশ্রমিক প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক (ডিডব্লিউআরএন)অংশগ্রহণ করে।